দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকে জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে বাংলাদেশিদের প্রায় ১ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে আন্দোলনকারীরা।
গত সোমবার জাতীয় নির্বাচনের ফলাফলকে কেন্দ্র করে পুরো মোজাম্বিকে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। বিকাল থেকে লুটপাট, ভাঙচুর জ্বালাও পোড়াও শুরু করলে এক রাতের মধ্যে দেশটির প্রতিটি শহরে-গ্রামে সহিংসতায় প্রায় দুই শতাধিক দোকান বাংলাদেশিদের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এবং গত এক সাপ্তাহে অন্তত ৮ শতেরও অধিক দোকান ভাঙচুরের খবর পাওয়া গেছে। ৯ অক্টোবর থেকে হিসাব করলে প্রায় ১ হাজার ও বেশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট ও ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকারও অধিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিদের। সোমবার রাত থেকে গত একসাপ্তাহের সবচেয়ে বেশি লুটপাট ও ভাঙচুর হয়েছে দেশটির রাজধানী মাপুতো, বোয়ানি ও সিমুই শহরে।
ঘটনায় আহত হয়েছেন মোস্তফা মিয়া (৪৫) ও ইব্রাহিম আহমেদ (৪০) দুই সহোদর। তারা নামাগোরা শহরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ ধর্মপুর গ্রামের মোহাম্মদ কাবিল ডাক্তার বাড়ীর বছন আলীর ছেলে।
দেশটিতে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হাজার হাজার বাংলাদেশিরা নিঃস্ব হয়ে গেছেন। বর্তমানে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
মোজাম্বিক শহরের প্রবীণ ব্যবসায়ী, ইসলামিক ফোরাম অব আফ্রিকার কেন্দ্রীয় সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ কমিউনিটির সহ-সভাপতি মাওলানা সামছুল হক জানান, সোমবার রাতে এবং মঙ্গলবার সারাদিনে তীব্র বিক্ষোভ ও সহিংসতায় দেশটির রাজধানী মাপুতো সিটি, সিমুই সিটি, বেইরা সিটি, নামপুলা সিটি, মুনফোলা, নাখালা, জাম্বিজিয়া, ইলিমান, বেয়ারাও মকুবা শহরসহ প্রায় সব সিটি শহরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি লুটপাট ও ভাঙচুর হয়েছে মাপুতো শহরে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ কমিউনিটির মধ্যে ও বিরাজ করছে আতঙ্ক।
মাওলানা সামছুল হক আরও বলেন, আমি বিগত ৩০ বছর যাবত ইলিমান ও মকুবা শহরে ব্যবসা করে আসছি। এরকম হামলা ও লুটপাট আর কখনও দেখিনি। আমি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। যাতে করে জাতিসংঘের মাধ্যমে হোক কিংবা মোজাম্বিক সরকারের মাধ্যমে হোক আমাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়।
এদিকে, মোজাম্বিকে বাংলাদেশ দূতাবাস না থাকায়। দেশটির পরিবেশ পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন দক্ষিণ আফ্রিকার বাংলাদেশ হাইকমিশন শাহ আহমেদ শফী। দেশটিতে বর্তমানে হাজার হাজার বাংলাদেশি অসহায় হয়েছে। ১ হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাংলাদেশিরা নিরাপত্তা ঝুঁকি মনে করলে নিকটবর্তী দেশ মালাওয়ে, জাম্বিয়া, ইসোয়াতিনি, তানজানিয়াসহ আশপাশের দেশগুলোতে আশ্রয় নেয়ার জন্য অনুরোধ রইল। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশিদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন এবং কমিউনিটির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছেন।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :