ঈদ মুসলমানদের জন্য এক বিশেষ অনুগ্রহ ও আনন্দের দিন। ইসলাম ধর্মে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালিত হয়। এই দিন কেবল আনন্দ করার জন্য নয়, বরং আল্লাহর শুকরিয়া আদায়, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সামাজিক সাম্যের প্রতীক।
ঈদের ইতিহাস:
ঈদের সূচনা ইসলামের প্রাথমিক যুগ থেকে। মহানবী (সা.) মদিনায় এসে দেখলেন, সেখানকার লোকেরা দুইটি দিন উৎসব হিসেবে পালন করে। তখন তিনি বললেন, "আল্লাহ তোমাদের জন্য এ দুটি দিনের পরিবর্তে আরও উত্তম দুটি দিন দান করেছেন—ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা।" (আবু দাউদ)
ঈদের হুকুম: ঈদের নামাজ হানাফি মাযহাবে ওয়াজিব, আর অন্য মাযহাবে সুন্নাতে মুয়াক্কাদা।
আল্লাহ তাআলা বলেন, "অতএব, তোমার প্রতিপালকের জন্য নামাজ পড়ো এবং কুরবানি করো।" (সূরা কাওসার, আয়াত- ০২)
ঈদের দিন সকালে করণীয়:
ঈদের দিন সকালে উঠে নিম্নলিখিত সুন্নাত ও আমল করা উত্তম—
আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা – জীবিত থাকা ও ঈদের দিন পাওয়া আল্লাহর নেয়ামত।
গোসল করা – হাদিসে আসছে ঈদের দিন গোসল করা সুন্নাত।
পায়ে হেঁটে ঈদগাহে যাওয়া।
ধীরস্থিরভাবে ও বিনয়ের সাথে যাওয়া।
সুগন্ধি ব্যবহার করা – রাসুল (সা.) ঈদের দিনে সুগন্ধি ব্যবহার করতেন।
নতুন পোশাক বা পরিষ্কার পোশাক পরা – নতুন না থাকলে পরিষ্কার ভালো পোশাক পরা সুন্নাত।
সেহরির মতো ঈদের সকালেও খাওয়া – ঈদুল ফিতরের দিনে খেজুর বা মিষ্টি খেয়ে ঈদগাহে যাওয়া সুন্নাত।
তাকবির পড়তে পড়তে যাওয়া – ঈদের দিন তাকবির বলা সুন্নাত।
পথ পরিবর্তন করে আসা-যাওয়া- ঈদগাহে যাওয়ার সময় এক রাস্তায় যাওয়া এবং অন্য রাস্তায় আসা। একই রাস্তা হলে, রাস্তার ডান পাশ দিয়ে যাওয়া এবং আসার সময় ডান পাশ দিয়ে আসা।
ঈদগাহে নামাজ আদায় করা- ঈদের নামাজ ঈদগাহে আদায় করা সুন্নাত। পাড়া মহল্লা ভিত্তিক ছোট ছোট জামাত না করে, সবাই মিলে বড় আকারে সবাই একসাথে ঈদের নামাজ আদায় করার চেষ্টা করা। এতে ইসলামের শান মান বুলন্দ হয়।
ঈদের নামাজের পরে করণীয়
খুতবা শোনা – ঈদের নামাজের পর খুতবা দেওয়া হয়, যা শোনা সুন্নাত।
পরিবার-পরিজন, আত্মীয়-স্বজন ও মুসলিম ভাইদের সাথে কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করা।
গরিবদের মাঝে দান-সদকা করা।
কবরস্থানে যাওয়া ও দোয়া করা।
ঈদ আনন্দ ও ইবাদতের সংমিশ্রণ। এই দিনে আমাদের উচিত আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা, নামাজ ও সুন্নাত অনুসরণ করা, গরিব-দুঃখীদের সহায়তা করা এবং পরিবার ও সমাজের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা। আসুন, আমরা ঈদের সুন্নাতগুলো পালন করে দিনটিকে আরও অর্থবহ করে তুলি। ঈদ সবার জন্য বয়ে আনুক অনাবিল সুখ শান্তি আর সমৃদ্ধি।
লেখক: মাওলানা আসগর সালেহী
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী।
ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম।
একুশে সংবাদ// এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :