দিন রাতের পার্থক্য আল্লাহ তায়ালা তৈরি করেছেন। দিনকে করেছেন মানুষের পরিশ্রমের উপযোগী আর রাতকে করেছেন আরামের উপযোগী। দিন রাতে আল্লাহ তায়ালার নির্দিষ্ট কিছু বিধান মানার আদেশ দিয়েছেন। এর বাইরে পুরো সময়টা মানুষের জীবন-জীবিকা উপার্জনের জন্য নির্ধারিত। হালালপন্থায় মানুষের যেকোনো ধরনের কাজ ইসলাম সমর্থন করে। তবে কাজের আগে নিয়মিত আল্লাহর বিধান পালনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
বর্ণিত হয়েছে, فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيراً لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
‘অতপর নামাজ শেষ হলে তোমরা জমিনে (পৃথিবীতে) ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (জীবিকা) তালাশ কর ও আল্লাহকে অধিক স্মরণ কর, যাতে তোমরা (জীবিকা উপার্জনে) সফলকাম হও।` (সূরা জুমা,(৬২), আয়াত, ১০)
দিন ও রাতে ফরজ ইবাদত পালনের পাশাপাশি নফল ইবাদতের প্রতিও উৎসাহি করে তোলা হয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘হে বস্ত্রাবৃত! রাতে নামাজে দাঁড়ান, কিছু অংশ ছাড়া, রাতের অর্ধেক কিংবা তার চেয়ে কিছুটা কম। অথবা তার চেয়ে বাড়াও আর ধীরে ধীরে সুস্পষ্টভাবে কোরআন পাঠ করো।’ (সূরা মুজ্জাম্মিল, (৭৩), আয়াত, ১-৪)
মহান আল্লাহ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উদ্দেশ করে রাতের বেলা নামাজ পড়তে বললেও একে ফরজ করে দেওয়া হয়নি, বরং নফল হিসেবে রাখা হয়েছে। তবে কেউ যদি রাতের বেলা বিছানা ছেড়ে নামাজে দাঁড়িয়ে যেতে পারে, তার জন্য রয়েছে বিশেষ পুরস্কার।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ আদায় করো তোমার অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে। আশা করা যায়, তোমার রব তোমাকে প্রশংসিত অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন।’ (সূরা বনি ইসরাঈল, (১৭), আয়াত, ৭৯)
রাতের ইবাদত শুধু তাহাজ্জুদ ও কোরআন তিলাওয়াতেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তাহাজ্জুদ, তিলাওয়াতের পাশাপাশি কিছু সময় আল্লাহর তাসবিহ পাঠ করাও অনেক সওয়াবের। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং রাতের একাংশেও তুমি তাঁর তাসবিহ পাঠ করো এবং নামাজের পশ্চাতেও।’ (সূরা কাফ, (৫০), আয়াত, ৪০)
রাতের বেলা জেগে ইবাদতের বিশেষ ফজিলত। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমাদের রব আল্লাহ তায়ালা প্রতি রাতে যখন রাতের শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকে, তখন প্রথম আসমানে নেমে এসে বলতে থাকেন, কে আমাকে ডাকবে যে আমি তার ডাকে সাড়া দেব? কে আমার কাছে চাইবে যে আমি তাকে দেব? কে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে যে আমি তাকে ক্ষমা করে দেব? (বুখারি, হাদিস, ১১৪৫)
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :