হজরত আবু সাঈদ খুদরি ও আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘মুসলিম ব্যক্তির ওপর যে সকল যন্ত্রণা, রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকন্ঠা, দুশ্চিন্তা, কষ্ট ও পেরেশানী আপতিত হয়, এমনকি যে কাঁটা তার দেহে বিদ্ধ হয়, এই বিপদের মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহগুলো ক্ষমা করে দেন।’ (বুখারি ও মুসলিম)।
হাদিসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, মুসলিম ব্যক্তির ওপর যেসব রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগ-উৎকন্ঠা, দুশ্চিন্তা, বিপদ-আপদ, বালা-মুসিবত, কষ্ট, ভয়-ভীতি, অধৈর্য ও পেরেশানি আপতিত হয়, এসব তার গুনাহের কাফ্ফারা ও পাপ মোচনকারী হয়ে যায়। আর মানুষ যদি এসবের সাথে ধৈর্য ও সওয়াবের আশা করে, তাহলে সে এর সঙ্গে সাওয়াবও পাবে।
বিপদ-মুসিবত দু’ধরণের
একপ্রকার: মানুষ যখন মুসিবতে পতিত হয় তখন যদি মুসিবতে ধৈর্যধারণের সওয়াব স্মরণ করে এবং এ মুসিবতের মাধ্যমে সওয়াব প্রত্যাশা করে তাহলে সে দু’টি প্রতিদান পাবে, একটি গুনাহ মাফ এবং অন্যটি সওয়াব বৃদ্ধি।
আর দ্বিতীয় প্রকার হলো : যখন সে সওয়াবের আশা থেকে গাফেল থাকে এবং বিপদে তার অন্তর সংকীর্ণ হয়ে যায় ও এতে তার অসন্তুষ্টি বা বিরক্তি সৃষ্টি হয়। আর সে আল্লাহর কাছে পুরস্কার ও সওয়াবের নিয়ত করা থেকে বে-খবর থাকে, তাহলে এ বিপদ তার গুনাহের কাফ্ফারা হবে। কারণ, মুমিন সর্বাবস্থায় লাভবান। হয়ত সওয়াব না পেয়ে গুনাহের কাফ্ফারা হবে; কারণ, সে কিছুই নিয়ত করেনি, সে ধৈর্যধারণ করেনি এবং সওয়াব প্রাপ্তির প্রত্যাশাও করেনি। অথবা সে গুনাহ মাফ ও সওয়াব লাভ দু’ভাবেই লাভবান হবে।
এ কারণেই মানুষের উচিত বিপদাপদে পড়লে ধৈর্য ধারণ করা ও সওয়াবের নিয়াত করা; যাতে সে সাওয়াব পায় এবং গুনাহ মাফ হয়, যদিও সেটা সামান্য কাঁটা যাওয়ার মাধ্যমে হয়।
আর মুমিনের জন্য বিপদাপদ আল্লাহর বিশেষ দয়া ও অনুগ্রহ। এর মাধ্যমে তিনি মুমিনকে পরীক্ষা করেন, অতঃপর তাকে সেই পরীক্ষায় সওয়াব দান করেন বা তার গুনাহ মাফ করেন। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, গুনাহ মাফ বলতে সগীরা গুনাহকে বুঝানো হয়েছে, কবীরা গুনাহ নয়; কারণ তা খাঁটি তাওবা ছাড়া মাফ হয় না।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :