AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বিড়াল পালা কি জায়েজ, হাদিসে কি আছে!


Ekushey Sangbad
ধর্ম ডেস্ক
১২:১৬ পিএম, ৫ নভেম্বর, ২০২৩
বিড়াল পালা কি জায়েজ, হাদিসে কি আছে!

বিড়াল গৃহপালিত প্রাণী। ইসলাম বিড়ালকে সম্মানিত প্রাণী বলে স্বীকৃতি দিয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য প্রশংসিত এ প্রাণী। এজন্যই প্রকৃত পোষাপ্রাণী হিসেবে দেখা হয় বিড়ালকে।

 

বিড়াল লালন-পালনে ইসলামে কোনও অসুবিধা নেই। বিড়ালকে পর্যাপ্ত খাদ্য-পানীয় সরবরাহ করতে হবে। বিড়ালের প্রতি যথাযথ দয়া-অনুগ্রহ দেখাতে হবে। বিড়ালকে কোনো ধরনের কষ্ট দেওয়া যাবে না। পবিত্রতা ও পরিচ্ছন্নতার প্রতি লক্ষ্য রাখতে হবে। তবে মানুষকে মূল্যায়ন না করে পশুর পিছনে অধিক অর্থ ব্যয় করা অনর্থক খরচ হিসেবে ধরা হবে। এটা মাকরূহ। বন্য পাখিদের আটকে না রেখে তাদের মুক্ত করে দেয়া উত্তম।


বিড়াল নিয়ে হাদিস
হজরত কাবশা বিনতে কাব ইবনে মালিক রা. বলেন, ‘আবু কাতাদা রা. আমার কাছে আগমন করলেন। আমি তার জন্য পানিভর্তি একটি অজুর পাত্র উপস্থিত করলাম। এসময় একটা বিড়াল তা থেকে পানি পান করল। তিনি ওই বিড়ালটির জন্য পাত্রটি কাত করে দিলেন। যাতে সে নির্বিঘ্নে পান করতে পারে। কাবশা রা. বলেন, তখন আবু কাতাদা রা. দেখলেন আমি তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি। তিনি বললেন, হে ভাতিজি! তুমি কি আশ্চর্য বোধ করছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, রাসুল সা. বলেন, ‘এরা (বিড়াল) অপবিত্র নয়, এরা তোমাদের আশপাশে বিচরণকারী এবং বিচরণকারিনী।’ (নাসায়ি ৩৪১)

হজরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। সাহাবায়ে কেরাম রা. রাসুল সা. কে জিজ্ঞাসা করেন- قَالُوا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، وَإِنَّ لَنَا فِي البَهَائِمِ أَجْرًا؟ قَالَ: «فِي كُلِّ كَبِدٍ رَطْبَةٍ أَجْرٌ হে আল্লাহর রাসুল! জীব জন্তুর জন্যও কি আমাদের পুরস্কার আছে? তিনি বললেন, হ্যাঁ, প্রত্যেক দয়ার্দ্র হৃদয়ের অধিকারীদের জন্য পুরস্কার আছে। (বুখারি ২৩৬৩)

বিড়ালের ওপর কোনো ধরনের অবিচার হলে গুনাহগার হতে হবে। রাসুল সা. বলেন, 
এক মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্য আজাব দেওয়া হয়েছে। কারণ, বিড়ালটিকে আটকে রাখায় সেটি মারা গিয়েছিল। ফলে সে জাহান্নামে গেছে। বিড়ালটিকে সে আটকে রেখে সে খাবার-পানীয় দেয়নি। আবার ছেড়েও দেয়নি যাতে করে জমিনের পোকামাকড় খেয়ে বাঁচতে পারে। (মুসলিম ৫৭৪৫)

পশু-পাখিসহ আল্লাহর যে কোনো সৃষ্টির প্রতি দয়া করলে মহান আল্লাহও দয়া করেন। অজস্র সওয়াবে ঋদ্ধ করেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর রা. থেকে বর্ণিত রাসুল সা. বলেন, ‘দয়াবানদের ওপর দয়াময় আল্লাহও দয়া করেন। তোমরা জমিনের অধিবাসীদের প্রতি দয়া করো, তাহলে যিনি আসমানে আছেন, তিনি তোমাদের প্রতি দয়া করবেন।’ (সুনান আবু দাউদ ৪৯৪১)

আরেকটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, সাহাবিরা প্রশ্ন করলেন, 
হে আল্লাহর রাসুল! পশুপাখিদের মধ্যেও কি আমাদের জন্য সাওয়াব রয়েছে? তিনি বললেন, ‘প্রতিটি তাজা কলিজায় সাওয়াব রয়েছে। (বুখারি ৩৪৬৭, মুসলিম ২২৪৫)
 

এছাড়াও রাসুল সা. নিজের ওজুর পাত্র থেকে বিড়ালকে পানি পান করানোর কথা হাদিসে উল্লেখ রয়েছে। প্রখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা রা.-এর বিড়ালপ্রীতির কথাও প্রসিদ্ধ।

বিড়াল মুখ দেয়া পানি কি নাপাক?

ভালো পানি থাকলে বিড়ালের ঝুটা পানি ব্যবহার করা মাকরূহ। তবে বিড়ালের ঝুটা-পানি ছাড়া অন্য ভালো পানি না থাকলে পবিত্রতার জন্য ঐ পানি ব্যবহার করা যাবে। কারণ বিড়ালের ঝুটা নাপাক নয়। হাদিস শরিফে আছে হযরত আবু কাতাদা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, 
إِنّهَا لَيْسَتْ بِنَجَسٍ، إِنّمَا هِيَ مِنَ الطّوّافِينَ عَلَيْكُمْ، أَوِ الطّوّافَاتِ. নিশ্চয় বিড়াল (বিড়ালের ঝুটা) নাপাক নয়। কারণ এটি এমন প্রাণী, যা তোমাদের আশপাশে অধিক পরিমাণে বিচরণ করে থাকে। (জামে তিরমিজি ৯২)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. বিড়ালের উচ্ছিষ্ট পানি দ্বারা অজু করা অপছন্দ করতেন। (আলআওসাত, ইবনুল মুনযির ১/৪১১; মুসান্নাফে আবদুর রাজজাক ৩৪০, তিরমিজি ৯২)

 

মানুষের ক্ষতি করলে বিড়াল মারা জায়েজ?
অনিষ্টকারী বিড়াল মেরে ফেলা জায়েজ। কেননা হাদিস শরিফে ক্ষতিকর প্রাণীকে মেরে ফেলার বৈধতার কথা এসেছে। ক্ষতিকারক বিড়ালকে মেরে ফেলা জায়েজ। তবে পিটিয়ে মারা যাবে না। কেননা এর মাধ্যমে প্রাণীর বেশি কষ্ট হয়। উচিত কষ্ট কম হয় এমন কোনো পদ্ধতি অবলম্বন করা। যেমন ধারালো অস্ত্র দ্বারা জবাই করে দেওয়া।

বিড়াল বেচা-কেনা করা যাবে?
ইসলাম বিড়াল বেচা-কেনা না করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। একে নাজায়েজ বলা হয়েছে। তবে, উপহার হিসাবে দেওয়া-নেওয়া করা যায়। মালিক যদি দাবি না করে, তাহলে নিজেই নিয়ে নেওয়া যায়।

হজরত আবু জুবাইর রহ. বলেন, ‘আমি জাবের রা.-এর কাছে কুকুর ও বিড়াল কেনা-বেচা করার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, নবী সা. এ ব্যাপারে সাবধান করে দিয়েছেন।’ (মুসলিম ১৫৬৯)

হজরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ রা. বলেন, ‘রাসুল সা. কুকুর ও বিড়ালের বিক্রয় মূল্য গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন।’ (আবু দাউদ ৩৪৭৯)

কালো বিড়াল নিয়ে হাদিস
কুসংস্কারের প্রচলন রয়েছে, কালো বিড়াল হলো শয়তানের অবতার। কেউ কেউ কালো বিড়াল বাড়িতে দেখলে তাকে মঙ্গল-অমঙ্গলের প্রতীক মনে করে। এমন ধারণা করা শিরক। এ বিষয়ে কোনো হাদিস নেই তবে, সব মঙ্গল-অমঙ্গল আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে। আল্লাহ তায়ালা বান্দার সব গুনাহ ক্ষমা করলেও শিরকের গুনাহ ক্ষমা করবেন না। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে অংশীদার সাব্যস্ত করে, আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন আর তার বাসস্থান হবে জাহান্নাম।’ (সুরা মায়েদা : ৭২)

 

একুশে সংবাদ/স.টি/না.স

Link copied!