বেশি বেশি কোরআন তিলাওয়াতকারীদের আল্লাহর পরিজন বলা হয়েছে হাদিসে। আনাস বিন মালিক রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, কিছু মানুষ আল্লাহর পরিজন। সাহাবিরা জিজ্ঞেস করেন, হে আল্লাহর রাসূল, তারা কারা? তিনি বলেন, কোরআন তেলাওয়াতকারীরা আল্লাহর পরিজন এবং তাঁর বিশেষ বান্দা।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস, ২১৫)
কোরআন তিলাওয়াতের সময় তা মনোযোগ সহকারে শোনার কথা বলা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, ‘যখন কোরআন তিলাওয়াত করা হয়, তখন কান লাগিয়ে শোনো এবং চুপ থেকো।’ (সূরা আরাফ, (৭), আয়াত, ২০৪)
কোরআন সঠিক আরবি উচ্চারণে এবং তাজবিদ মেনে তিলাওয়াত করতে হয়। এর বাইরে বাংলা বা অন্য কোনো ভাষার উচ্চারণ দেখে কোরআন তিলাওয়াতকে উলামায়ে কেরামের ঐকমত্যে নাজায়েজ বলা হয়েছে। কারণ, আরবি ছাড়া অন্য ভাষায় কোরআনের সঠিক উচ্চারণ অসম্ভব। এছাড়া এতে কোরআনের শব্দ ও অর্থ বিকৃত হয়ে যায়, যা সম্পূর্ণ হারাম।
তাই কোরআন তিলওয়াতের মাধ্যমে সওয়াব অর্জনের জন্য কোনো আলেমের তত্ত্বাবধানে কোরআন শিখে নিতে হবে। (আল ইতক্বান : ৮৩০-৮৩১, ইমদাদুল আহকাম : ১/২৪০, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ১/৪৩)
আলেমরা বলেন, আরবি সঠিক উচ্চারণ না শিখে অন্য যেকোনো অনারবি ভাষার উচ্চারণ নির্ভর কোরআন পাঠের কারণে মানুষ ভুল কোরআন পাঠে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে। অথচ প্রত্যেক নর-নারীর ওপর কোরআন এতটুকু সহিহ-শুদ্ধ করে পড়া ফরজে আইন, যার দ্বারা অর্থ পরিবর্তন হয় না।
অর্থ পরিবর্তন হয়—এমন ভুল পড়ার দ্বারা নামাজ নষ্ট হয়ে যায়। অতএব, কমপক্ষে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের জন্য যে সুরাগুলো প্রয়োজন, সেগুলো শুদ্ধ করে নেওয়া আবশ্যক, অন্যথায় সে গুনাহগার হবে। আর পূর্ণ কোরআন শুদ্ধভাবে শেখা সবার ওপর সুন্নতে মুয়াক্কাদা ও ফরজে কেফায়া। অর্থাৎ প্রত্যেক এলাকায় পূর্ণ কোরআন শুদ্ধভাবে পাঠকারী একটি দল থাকা আবশ্যক। (মুকাদ্দামায়ে জাজারিয়া : ১১, মাআরেফুল কোরআন : ৪/৪৮৯)
আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা থেকে বর্ণিত, নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘যারা সহিহ-শুদ্ধভাবে কোরআন তিলাওয়াত করে, তারা নেককার সম্মানিত ফেরেশতাদের সমতুল্য মর্যাদা পাবে এবং যারা কষ্ট সত্ত্বেও কোরআন সহিহ-শুদ্ধভাবে পড়ার চেষ্টা ও মেহনত চালিয়ে যায়, তাদের জন্য রয়েছে দ্বিগুণ সওয়াব।’ (আবু দাউদ, হাদিস, ১৪৫৪)
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :