আল্লাহ তায়ালা মানুষকে সৃষ্টির অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য তার ইবাদত করা। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে,
وَ مَا خَلَقۡتُ الۡجِنَّ وَ الۡاِنۡسَ اِلَّا لِیَعۡبُدُوۡنِ
আর আমি সৃষ্টি করেছি জিন এবং মানুষকে এজন্যেই যে, তারা কেবল আমার ইবাদাত করবে। (সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত, ৫৬)
ইবাদতের পাশাপাশি মানুষকে তার জীবন-জীবিকা ও আয় উপার্জনের দায়িত্বও দিয়েছেন। বর্ণিত হয়েছে, যখন তোমাদের নামাজ শেষ হয়, তখন তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি (আল্লাহ প্রদত্ত জীবিকা) অন্বেষণ করো’ (সূরা জুমআ, আয়াত, ১০)।
মানুষকে সৃষ্টির উদ্দেশ্য বুঝে আমল করতে হবে, একইসঙ্গে জীবিকার অনুসন্ধানে কাজ করতে হবে। তবে জীবিকার পেছনে সময় ব্যয় করে আমল ইবাদতে ব্যাঘাত ঘটানো যাবে না। এজন্য চাই সঠিক পরিকল্পনা ও রুটিন। কেউ দৈনন্দিন জীবনের কাজের সঙ্গে ইবাদতের একটি রুটিন তৈরি করলে সহজেই কাজ এবং আমল করা সম্ভব। দুনিয়ার জীবনের সঙ্গে পরকালের সঞ্চয় সহজেই হবে এতে করে।
রমজানে বেশি বেশি সময় ইবাদতে মগ্ন থাকতে প্রতিদিন নিজের সংকল্প এবং চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। একইসঙ্গে কিছু আমলের চেষ্টা করতে হবে। তাহলেই রমজান হবে সার্থক।
রমজানে প্রতিদিন যেসব আমল করবেন—
>> প্রতিদিন সময়মতো জামাতের সঙ্গে ফরজ নামাজ আদায়ের চেষ্টা করুন।
>> প্রতিদিন ফজর ও ইশার নামাজ মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে আদায়ের চেষ্টা করুন। বেশির ভাগ মানুষের কাজের সময়ের সাথে এই দুই ওয়াক্তের সম্পৃক্ততা নেই। তাই এ সময় ব্যস্ততা কম। আর এই দুই ওয়াক্তের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করলে পুরো রাত নামাজে দাঁড়িয়ে থাকার সওয়াব প্রদান করা হবে।
>> প্রতিদিন নিয়মিত মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে তারাবি নামাজ পড়ার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করুন। তারাবি নামাজ ফরজ ওয়াজিব না হলেও এর মাধ্যমে বিপুল সওয়াব লাভ হবে এবং আধ্যাত্মিকতা অর্জনে সহায়ক হবে।
>> রমজান কোরআন নাজিলের মাস। তাই প্রতিদিন ফজরের পর বা দিনের কিছু সময় কোরআন তিলাওয়াতের জন্য নির্ধারিত রাখুন। এ মাসে রাসূল সা. বেশি বেশি তিলাওয়াত করতেন। সাহাবি, পূর্বসূরীদের অনুসরণে বর্তমান সময়ের আলেম এবং ধর্মপরায়ণ ব্যক্তিরাও রমজানে বেশি বেশি তিলাওয়াত করেন। আমাদের সেই চেষ্টা করা উচিত।
>> প্রত্যেক কাজের আগের দোয়াগুলো ঠিকমতো পড়ার চেষ্টা করুন। যেমন ইফতার, খাবার, বাথরুমে যাওয়া-আসা, ঘরে প্রবেশ ও বের হওয়ার দোয়াগুলো নিয়মিত পাঠ করুন।
>> পরিবারের সবাইকে সঙ্গে নিয়ে ইফতার করুন।
>> নিজের অধীনস্ত কর্মচারী ও গৃহকর্মীদের কাজের চাপ কমিয়ে দিন।
>> রমজানে সময় কাজে লাগিয়ে কোরআনে ছোট ও গুরুত্বপূর্ণ সূরাগুলো মুখস্ত করার চেষ্টা করুন।
>> সাধ্যমতো দান-সদকা করুন এবং অসহায় গরিবদের ইফতার-সেহরির খাবারের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করুন।
>> যাদের ওপর জাকাত ফরজ গড়িমসি না করে ঠিকমতো জাকাত আদায় করুন।
>> সময়মতো সদকাতুল ফিরত আদায় করুন।
>> রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফের চেষ্টা করুন।
>> রমজানের শেষ ১০ দিনের ইবাদত ও ইতিকাফ নির্বিঘ্নে আদায়ের জন্য ঈদের কেনাকাটা আগেই করে রাখুন।
>> রমজান সংশ্লিষ্ট সব ইবাদতে শিশুদের নিজের সঙ্গে রাখুন। যেন শিশুরা ছোট থেকেই আপনাকে দেখে ইবাদতের প্রতি আগ্রহী হয়।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :