কিছু মানুষ রাগের মাথায় আতিশয্যে হুঁশ-জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। অন্যকে অশ্লীল ও শ্রুতিকটু বাক্যবাণে নাজেহাল করে।
গাল-মন্দ করে ভাবমূর্তি নষ্ট করে।
ইসলামে অন্যকে গালি দেওয়া সম্পূর্ণ হারাম। যেকোনো কারণেই হোক, কাউকে গালি দেওয়ার অনুমতি নেই।
হাসি-কৌতুক ও ঠাট্টাচ্ছলেও অন্যকে গালি দেওয়া ইসলামের দৃষ্টিতে অশোভনীয়।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন,যারা বিনা অপরাধে ঈমানদার পুরুষ ও নারীদের কষ্ট দেয়, তারা অবশ্যই মিথ্যা অপবাদ এবং স্পষ্ট অপরাধের বোঝা বহন করে। (সুরা আহযাব, আয়াত ৫৮)
যার মধ্যে চারটি অভ্যাস আছে তাকে হাদিসে মুনাফিক বলা হয়েছে। এগুলোর কোনো একটি পাওয়া গেলেও সে মুনাফিক হিসেবে গন্য হবে। হাদিসের আলোকে সেগুলো হলো,
১.যখন তাকে বিশ্বাস করা হয়
২.সে বিশ্বাস ভঙ্গ করে।
৩.কথা বললে, মিথ্যা বলে।
৪.অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে এবং বিবাদ-বিতর্কে উপনীত হলে অন্যায় পথ অবলম্বন করে। (বুখারি, হাদিস নং ৩৪; মুসলিম, হাদিস নং ১০৬)
অন্য হাদিসে আছে, মুমিন কখনো দোষারোপকারী, অভিশাপ দাতা, অশ্লীলভাষী ও গালিগালাজকারী হয় না। (তিরমিজি, হাদিস নং ২০৪৩)
আরেক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুসলিমকে গালি দেওয়া ফাসেকি
এবং তার সঙ্গে লড়াই ঝগড়া করা কুফরি। ’ (বুখারি, হাদিস নং ৬০৪৫, ৭০৭৬; তিরমিজি, হাদিস নং ১৯৮৩)অন্য এক হাদিসে রয়েছে, ‘কবিরা গুনাহগুলোর একটি হলো নিজের বাবা-মা’কে অভিশাপ করা। ’ জিজ্ঞেস করা হল, আল্লাহর রাসুল! মানুষ নিজের মা-বাবাকে কীভাবে অভিশাপ করে’ তিনি বললেন, ‘যখন সে অন্যের বাবাকে গালি-গালাজ করে, তখন সে নিজের বাবাকেও গালি-গালাজ করে থাকে। আর সে অন্যের মা-কে গালি দেয়, বিনিময়ে সে তার মা-কেও গালি দেয়। ’ (বুখারি, হাদিস নং ৫৯৭৩, তিরমিজি, হাদিস নং ১৯০২)
আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার (কোনো মুসলিম) ভাইয়ের সম্মান নষ্ট করেছে অথবা কোনো বিষয়ে জুলুম করেছে, সে যেন আজই (দুনিয়াতে) তার কাছে (ক্ষমা চেয়ে) হালাল করে নেয়-ওইদিন আসার আগে, যেদিন দিনার ও দিরহাম কিছুই থাকবে না। তার যদি কোনো নেক আমল থাকে, তবে তার জুলুমের পরিমাণ অনুযায়ী তা থেকে নিয়ে নেওয়া হবে। আর যদি তার কোনো নেকি না থেকে, তবে তার সঙ্গীর পাপরাশি তার (জালেমের) ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে। ’ (বুখারি, হাদিস নং ২৪৪৯, ৬৫৩৪; মুসনাদ আহমাদ, হাদিস নং ৯৩৩২)
আল্লাহ তাআলা আমাদের গালমন্দ ও অশ্লীল বাক-বিনিময় থেকে রক্ষা করুন। মার্জিত ভাষা ও শ্রুতিমধুর শব্দ ব্যবহারের তাওফিক দান করুন।
একুশে সংবাদ/এ
আপনার মতামত লিখুন :