রমজানের ফরজ রোজা ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেয়া মারাত্মক অপরাধ।রোজা ইসলামের বুনিয়াদি ইবাদতের অন্যতম। রমজান মাসে প্রত্যেক সুস্থ মস্তিষ্ক বালেগ মুসলিমের উপর রমযানের রোজা ফরজ (অবশ্য পালনীয়)।এ মাসের একটি রোজা অবশিষ্ট পূর্ণ বছর রোজা রাখার চেয়েও অনেক বেশি সওয়াবের কাজ। বিনা কারণে রোজা না রাখা কোনো মুসলমানের জন্য জায়েজ নয়।
রোজার বিধান সম্পর্কে কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন,
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো। (সুরা বাকারা ১৮৩)।
অন্য আয়াতে এসেছে,
অতএব, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে, সে যেন এ মাসে রোজা পালন করে। তবে কেউ রোগাক্রান্ত হলে অথবা সফরে থাকলে এ সংখ্যা অন্য সময়ে পূরণ করবে। (সুরা: বাকারা, আয়াত: ১৮৫)
শরিয়ত সম্মত ওযর বা যথাযথ কারণ ছাড়া রোজা ভঙ্গ কারীদের সম্পর্কে। হাদিসে এসেছে, হযরত আবু উমামা রাযি. বলেন, আমি রাসুলকে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন,
একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় দুইজন ব্যক্তি এসে আমার দুই বাহু ধরে আমাকে দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আমাকে বললো, পাহাড়ে উঠুন।
আমি বললাম, আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তারা বললো, আমরা আপনার জন্য সহজ করে দিচ্ছি। আমি উঠা শুরু করি এবং পাহাড়ের চূঁড়ায় পৌঁছি। সেখানে প্রচণ্ড চিৎকারের শব্দ শোনতে পাই। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কিসের শব্দ? তারা বললো, এটা জাহান্নামিদের আওয়াজ। এরপর তারা আমাকে এমন কিছু লোকদের কাছে নিয়ে যায়, যাদেরকে পায়ের টাখনুতে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের গাল ছিন্নভিন্ন, তা হতে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা এমন রোজাদার যারা (অকারণে রমজান মাসের) রোজা শেষ না করেই ইফতার করত। (সহিহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস নং: ১৫০৯)
রোজা রেখে সময়ের পূর্বে ইফতার করে নেওয়ার শাস্তি যদি এই হয়,তাহলে বিনা কারণে রোজা না রাখার শাস্তি কি হতে পারে তা বলাই বাহুল্য। রমজানের একটি রোজা সারা জীবনের রোজার সমতূল্য নয়: রমজানে ভেঙে ফেলা রোজার বিনিময় কোনোভাবেই দেয়া সম্ভব নয়। একটি রোজার পরিবর্তে সারা জীবন রোজা রাখলেও তার হক আদায় হবে না।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
যে ব্যক্তি প্রয়োজন ও রোগ-ব্যধি ছাড়া রমজানের একটি রোজা ভেঙে ফেলে, তার সারা জীবনের রোজা দ্বারাও এই কাজা আদায় হবে না, যদিও সে সারা জীবন রোজা পালন করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮১১)
ইমাম যাহাবী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘মুমিনদের নিকটে এ কথা স্থির-সিদ্ধান্ত যে, যে ব্যক্তি কোনো রোগ ও ওজর না থাকা সত্ত্বেও রমাযানের রোজা ত্যাগ করে, সে ব্যক্তি একজন ব্যভিচারী ও মদ্যপায়ী থেকেও নিকৃষ্ট। বরং মুসলিমরা তার ইসলাম নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে এবং ধারণা করে যে, সে একজন নাস্তিক ও নৈতিক স্খলিত মানুষ। (মাজমূউল ফাতাওয়া, ইবনে তাইমিয়্যাহ ২৫/২২৫)
রমজানের ফরজ রোজা ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেয়া মারাত্মক অপরাধ।যারা এমনটি করবে তারা মহাক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রমজানের রোজা যথযথ আদায় করে রাখার তাওফিক দান করুন।এবং এ রোজার মাধ্যমে আমাদের কৃত গুনাহ সমূহ ক্ষমা করুন।
একুশে সংবাদ//আ.ট//এ.জেবিনা কারনে রোজা না রাখার শাস্তি
রমজানের ফরজ রোজা ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেয়া মারাত্মক অপরাধ।রোজা ইসলামের বুনিয়াদি ইবাদতের অন্যতম। রমজান মাসে প্রত্যেক সুস্থ মস্তিষ্ক বালেগ মুসলিমের উপর রমযানের রোজা ফরজ (অবশ্য পালনীয়)।এ মাসের একটি রোজা অবশিষ্ট পূর্ণ বছর রোজা রাখার চেয়েও অনেক বেশি সওয়াবের কাজ। বিনা কারণে রোজা না রাখা কোনো মুসলমানের জন্য জায়েজ নয়।
রোজার বিধান সম্পর্কে কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা বলেন,
হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর, যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো। (সুরা বাকারা ১৮৩)।
অন্য আয়াতে এসেছে,
অতএব, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি এ মাস পাবে, সে যেন এ মাসে রোজা পালন করে। তবে কেউ রোগাক্রান্ত হলে অথবা সফরে থাকলে এ সংখ্যা অন্য সময়ে পূরণ করবে। (সুরা: বাকারা, আয়াত: ১৮৫)
শরিয়ত সম্মত ওযর বা যথাযথ কারণ ছাড়া রোজা ভঙ্গ কারীদের সম্পর্কে। হাদিসে এসেছে, হযরত আবু উমামা রাযি. বলেন, আমি রাসুলকে সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন,
একবার আমি ঘুমিয়ে ছিলাম। এ সময় দুইজন ব্যক্তি এসে আমার দুই বাহু ধরে আমাকে দুর্গম পাহাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আমাকে বললো, পাহাড়ে উঠুন।
আমি বললাম, আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তারা বললো, আমরা আপনার জন্য সহজ করে দিচ্ছি। আমি উঠা শুরু করি এবং পাহাড়ের চূঁড়ায় পৌঁছি। সেখানে প্রচণ্ড চিৎকারের শব্দ শোনতে পাই। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এটা কিসের শব্দ? তারা বললো, এটা জাহান্নামিদের আওয়াজ। এরপর তারা আমাকে এমন কিছু লোকদের কাছে নিয়ে যায়, যাদেরকে পায়ের টাখনুতে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের গাল ছিন্নভিন্ন, তা হতে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এরা কারা? তারা বললেন, এরা এমন রোজাদার যারা (অকারণে রমজান মাসের) রোজা শেষ না করেই ইফতার করত। (সহিহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস নং: ১৫০৯)
রোজা রেখে সময়ের পূর্বে ইফতার করে নেওয়ার শাস্তি যদি এই হয়,তাহলে বিনা কারণে রোজা না রাখার শাস্তি কি হতে পারে তা বলাই বাহুল্য। রমজানের একটি রোজা সারা জীবনের রোজার সমতূল্য নয়: রমজানে ভেঙে ফেলা রোজার বিনিময় কোনোভাবেই দেয়া সম্ভব নয়। একটি রোজার পরিবর্তে সারা জীবন রোজা রাখলেও তার হক আদায় হবে না।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
যে ব্যক্তি প্রয়োজন ও রোগ-ব্যধি ছাড়া রমজানের একটি রোজা ভেঙে ফেলে, তার সারা জীবনের রোজা দ্বারাও এই কাজা আদায় হবে না, যদিও সে সারা জীবন রোজা পালন করে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৮১১)
ইমাম যাহাবী রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘মুমিনদের নিকটে এ কথা স্থির-সিদ্ধান্ত যে, যে ব্যক্তি কোনো রোগ ও ওজর না থাকা সত্ত্বেও রমাযানের রোজা ত্যাগ করে, সে ব্যক্তি একজন ব্যভিচারী ও মদ্যপায়ী থেকেও নিকৃষ্ট। বরং মুসলিমরা তার ইসলাম নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে এবং ধারণা করে যে, সে একজন নাস্তিক ও নৈতিক স্খলিত মানুষ। (মাজমূউল ফাতাওয়া, ইবনে তাইমিয়্যাহ ২৫/২২৫)
রমজানের ফরজ রোজা ইচ্ছাকৃতভাবে ছেড়ে দেয়া মারাত্মক অপরাধ।যারা এমনটি করবে তারা মহাক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে রমজানের রোজা যথযথ আদায় করে রাখার তাওফিক দান করুন।এবং এ রোজার মাধ্যমে আমাদের কৃত গুনাহ সমূহ ক্ষমা করুন।
একুশে সংবাদ//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :