রাজধানীতে আবারও ‘শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা’ করবে আওয়ামী লীগ এবং পদযাত্রা করবে বিএনপিসহ সমমনা দল ও জোট।
বুধবার (১৯ জুলাই) আওয়ামী লীগের শোভাযাত্রা হবে তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা মোড় থেকে মহাখালী পর্যন্ত। আর রাজধানীর উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী (চৌরাস্তা) পর্যন্ত পদযাত্রা করবে বিএনপি।
দুই দলের কর্মসূচি রাজধানীর ঢাকার একটি বড় অংশ জুড়ে বিস্তৃত থাকবে। রাজধানীতে এ ধরনের কর্মসূচি থাকলে সাধারণত দীর্ঘ যানজটের তৈরি হয়। যেটি দেখা গেছে দুই দলের মঙ্গলবারের কর্মসূচিতে।
বুধবার (১৯ জুলাই) বিএনপির দ্বিতীয় দিনের পদযাত্রা কর্মসূচির কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আজ বেলা ১১টার দিকে আব্দুল্লাহপুর থেকে বিএনপির পদযাত্রা শুরু হয়। পদযাত্রা শুরু আগে থেকেই দলীয় নেতাকর্মীরা মহাসড়কের পাশে এসে অবস্থান নিলে আব্দুল্লাহপুর থেকে টঙ্গী কলেজ গেট পর্যন্ত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
গতকালের দুইটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির কারণে দূর্ভোগে পড়া বনি আমিন বলেছিলেন, ‘ঢাকা শহরের মতো জায়গায় একটি কর্মদিবসে দুইটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি জনগণের ভোগান্তি ছাড়া কিছু নয়। এখানে আমাদের ভোগান্তিতে ফেলে কর্মদিবসে একদল পদযাত্রা আর অন্যরা শান্তি সমাবেশ করছে। এ দুই কর্মসূচির অর্থ আমি বুঝি না। বুঝি সবাই জনগণকে ভোগান্তিতে রাখছে।’
প্রায় শতাধিক সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলে ঠিক এমনই বক্তব্য পাওয়া গেছে। তারা বলেছেন, যদি রাজনীতির কারণে মানুষই কষ্টে থাকে তবে তেমন রাজনীতি চাইনা তারা। আপনারা যদি কর্মসূচি পালন করেন তবে বড় বড় মাঠে করেন কেন মানুষের এত দূর্ভোগে রাখছেন। মানুষ ঠিক সময়ে অফিস-আদালতে যেতে পারছেনা। রোগী নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছানো যাচ্ছেনা। তাছাড়া কর্ম দিবসে দুই বড় রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির জন্য প্রচন্ড ক্ষোভ জন সাধারণের মধ্যে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলেছেন, কর্ম দিবসের যেকোন কর্মসূচিই দুর্ভোগের সৃষ্টি করে। আর যদি সেটি রাজনৈতিক কর্মসূচি হয় তা আর বলার অবকাশ রাখেনা। তবে রাজনৈতিক কর্মসূচি বাদ দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত জনবান্ধব কর্মসূচি দেওয়া। সপ্তাহের দুই সরকারি ছুটির দিন তারা কর্মসূচি রাখতে পারে। যার ফলে জনদুর্ভোগ অনেকাংশে কমবে। জনগণের কল্যাণেই রাজনীতি কিন্তু সেই রাজনীতি যদি মানুষের কষ্টের কারণ হয় তবে আস্তে আস্তে মানুষ রাজনীতি থেকেই মুখ ফিরিয়ে নিবে। যেটি দেশের জন্য চরম ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
বুধবার যেসব সড়কে দুই দলের কর্মসূচি
শেখ হাসিনার পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ১ দফা দাবিতে পদযাত্রা করবে ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তর। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই পদযাত্রা করবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি। পদযাত্রাটি আব্দুল্লাহপুর থেকে শুরু হয়ে যাত্রাবাড়ী (চৌরাস্তা) গিয়ে শেষ হবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আরেকটি পদযাত্রা আব্দুল্লাপুর থেকে শুরু হয়ে রামপুরা ব্রিজে গিয়ে ঢাকা মহানগর বিএনপি উত্তরের সঙ্গে যুক্ত হবে।
বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় আবদুল্লাহপুরের পলওয়ে মার্কেটের সামনে পদযাত্রা শুরুর আগে সমাবেশ করবে বিএনপি। সমাবেশ শেষে পদযাত্রাটি আবদুল্লাহপুরের পলওয়ে মার্কেটের সামনে থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, কুড়িল বিশ্বরোড, নতুনবাজার, বাড্ডা, রামপুরা ব্রিজ, মালিবাগের আবুল হোটেলের সামনে দিয়ে খিলগাঁও, বাসাবো, মুগদা, সায়েদাবাদ হয়ে যাত্রাবাড়ী চৌরাস্তায় গিয়ে শেষ হবে।
বিএনপির কর্মসূচির বিপরীতে ‘শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা’ করবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। বিকেলে রাজধানীর সাতরাস্তা থেকে মহাখালী পর্যন্ত উন্নয়ন শোভাযাত্রা কর্মসূচি পালন করবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ। এ সমাবেশে দলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন।
বিকেল ৩টায় শোভাযাত্রা শুরুর আগে সমাবেশ হবে। ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হবে।
এদিকে বিএনপির মঙ্গলবারের পদযাত্রার কারণে রাজধানীর প্রবেশদ্বার আমিনবাজরের সালেহপুরে সৃষ্টি হয় যানজট। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা। গাবতলী থেকে সালেহপুর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত এই যানজট ছিল মঙ্গলবার সকালে।
অন্যদিকে বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে সমাবেশ করে আওয়ামী লীগ। এই সমাবেশের কারণে শাহবাগ, মৎস্যভবন ও পল্টন এলাকায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। এতেও ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।
একুশে সংবাদ/এপি
আপনার মতামত লিখুন :