AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বন্ধ হচ্ছে খোলা ভোজ্যতেল বিক্রি, বিপাকে পড়তে পারে নিম্নবিত্ত


Ekushey Sangbad
মুহাম্মদ আসাদ
১২:৫৩ পিএম, ১ আগস্ট, ২০২৩
বন্ধ হচ্ছে খোলা ভোজ্যতেল বিক্রি, বিপাকে পড়তে পারে নিম্নবিত্ত

বিকল্প ব্যবস্থা না করেই আজ ১ আগস্ট থেকে খোলা ভোজ্যতেল বিক্রি বন্ধ হচ্ছে। এতে বেশি বিপাকে পড়বে খুচরায় অল্প পরিমাণে তেল কেনা নিম্নবিত্তের মানুষ। কারণ, ৫০, ১০০ বা ২০০-২৫০ মিলিলিটার ভোজ্যতেলের কোনো প্যাকেট এখনো বাজারে নেই। আবার বোতলজাত তেলের দাম খোলা তেলের চেয়ে বেশি হওয়ায় তাদের খরচও বাড়বে।


পণ্যের মান নির্ধারণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) বলছে, খোলা ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ সঠিক মাত্রায় থাকে না। ভোজ্যতেলের মান নিশ্চিত করতেই সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, এই সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী। তেল প্যাকেটজাত করার খরচ খোলা তেলের ক্রেতা নিম্নবিত্তের মানুষকেই গুনতে হবে। ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনশাস কনজ্যুমারস সোসাইটি বলছে, খোলা তেল বিক্রি বন্ধ না করে পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করেই তেলের গুণ-মান ও দাম নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। তা না করে তাদের অসততার দায় কোটি ভোক্তার কাঁধে চাপানো হচ্ছে।


জানতে চাইলে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান   বলেন, আইন অনুযায়ী বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রির সুযোগ নেই। তিন বছর ধরে খোলা তেল বিক্রি বন্ধের চেষ্টা চলছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে তাঁরা আজ মঙ্গলবার থেকে অভিযান চালাবেন। তবে শুরুতে কঠোর কোনো শাস্তিতে যাবেন না।

 

সরকার-নির্ধারিত প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৫৯ এবং বোতলজাত ১৭৯ টাকা। খোলা তেল বিক্রি বন্ধ হলে এর প্রভাবে বাজারে তেলের দাম বাড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। দেশে ভোজ্যতেলের ৬৫ শতাংশই ড্রামজাত বা খোলা হিসেবে বিক্রি হয়। দরিদ্র ও হতদরিদ্র মানুষ সাধারণত ৫০ বা ১০০ গ্রাম বা এর কিছু বেশি পরিমাণ ভোজ্যতেল কিনে থাকে। তাদের ভরসা খোলা তেল। গ্রামের ৮০ শতাংশ মানুষ খোলা তেল কেনে।

 

বিএসটিআই বলছে, সম্প্রতি বাজার থেকে বিভিন্ন খোলা তেলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ৩০ শতাংশ তেলে ভিটামিন ‘এ’ সঠিক মাত্রায় পাওয়া যায়নি। রাতকানা রোগ নির্মূলে সরকার ২০১৩ সালে ভোজ্যতেলে ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধকরণ আইন করে। ২০১৫ সালে বিধিমালা তৈরি করা হয়। তবে বাজারে খোলা তেল বিক্রি বন্ধ হয়নি। কারণ, বড় একটি জনগোষ্ঠী এখনো একবারে স্বল্প পরিমাণ তেল কেনে। নাম-পরিচয়বিহীন ড্রামের তেলে সঠিক মান পাওয়া না গেলেও সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। এ জন্য খোলা তেল বিক্রি নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যে ড্রামে তেল থাকে, তা মূলত আমদানি করা রাসায়নিকের ড্রাম। ড্রাম খালি হলে দোকানিরা তাতে খোলা তেল ভরেন। এ কারণে স্বাস্থ্যঝুঁকিও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

 

বিএসটিআইয়ের উপপরিচালক রিয়াজুল হক  বলেন, আন্তমন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১ আগস্ট থেকে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি নিষিদ্ধ। আইন বাস্তবায়নে বিএসটিআই, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে তারা আজ থেকে অভিযান চালাবে। এ বিষয়ে আজ ভোজ্যতেল আমদানিকারক ও পরিশোধনকারী মিলমালিকদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক রয়েছে। বৈঠকে আগামী কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হবে।

 

বাংলাদেশ পাইকারি ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা বলেন, সিদ্ধান্তটি আত্মঘাতী হবে। সারা দেশে খোলা তেল বিক্রির তিন-চার লাখ দোকান রয়েছে। খোলা তেল বিক্রি বন্ধ হলে বিকল্প ব্যবস্থা কী হবে। প্যাকেটজাত হলে দাম বাড়বে। দেশের প্রেক্ষাপটে এ ক্ষেত্রে আরও সময় দেওয়ার দাবি জানান তিনি।

 

ভোজ্যতেল বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, তাদের অনেকে ১৫ লিটারের কনটেইনারে সয়াবিন তেল বাজারজাত করছে। এই কনটেইনার থেকে ভোক্তারা ৫০ বা ১০০ গ্রাম তেল কিনতে পারবেন। তবে ভবিষ্যতে সব ধরনের খোলা তেল বিক্রিই নিরুৎসাহিত করা হবে। বর্তমানে ১, ২, ৫, ৮ লিটারের বোতলজাত তেল বাজারজাত হয়।

 

মেঘনা গ্রুপের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, ভোজ্যতেল প্যাকেটে বিক্রি করা হলে দাম বাড়বে। এক লিটার তেল প্যাকেটজাত করতে ২০-২৫ টাকা খরচ হচ্ছে। তবে প্যাকেটজাত তেল বিক্রি করতে তাঁরা এখনো প্রস্তুত নন। তবে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিত সাহা বলেন, আইনের প্রতি তাঁরা শ্রদ্ধাশীল। বিশ্বের কোথাও খোলা তেল বিক্রি হয় না। দেশেও একসময় খোলা তেল বিক্রি বন্ধ হবে। আইন মেনে তাঁরা প্যাকেটজাত তেল বিক্রি করতে প্রস্তুত রয়েছেন। তবে প্যাকেটের আকার এখনো নির্ধারিত হয়নি। ৫০-১০০ গ্রামের পলি প্যাকেট বা বোতলজাত হতে পারে।

 

কনশাস কনজ্যুমারস সোসাইটির (সিসিএস) নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, নাম-পরিচয়বিহীন পণ্য বিক্রি কাম্য নয়। তবে বাজারজাতকারীর নাম-ঠিকানা থাকলে মান নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। এতে ক্রেতারাও খুচরায় প্রয়োজন ও সাধ্য অনুযায়ী অল্প পরিমাণ ভোজ্যতেল কেনার সুযোগ পেতেন।

 

একুশে সংবাদ/এসএপি

Link copied!