একে একে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পাট থেকে সুতা তৈরির সরকারি কারখানা। সারা দেশে পাটের উৎপাদনেও নেমে এসেছে ধস। এমন পরিস্থিতিতেও পাট বা জুট থেকে উৎপাদিত রঙিন সুতা রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। আর এই সাফল্য দেখাতে সক্ষম হয়েছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় অবস্থিত বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত কর্ণফুলী জুট মিল। এই কারখানা থেকে উৎপাদিত সুতা ইন্দোনেশিয়া, চীন, ইরানসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, ১৯৬৩ সালে রাঙ্গুনিয়া উপজেলার পোমরা ইউনিয়ন এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হয় কর্ণফুলী জুট মিল। স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের আওতাধীন এই কারখানা অত্যন্ত সফলভাবে পাট থেকে সুতা কার্পেটসহ নানা ধরনের পণ্য উৎপাদন করে সাফল্য দেখিয়ে আসছিলো। কিন্তু একে একে দেশের বিভিন্ন পাটকল সমূহের অব্যাহত লোকসান ও বন্ধ হয়ে যাওয়ার ধারাবাহিকতায় সঙ্কটের মুখে পড়ে এই পাটকলটিও। সর্বশেষ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মাসিক ভাড়া ভিত্তিতে ২০ বছরের জন্য বরাদ্দ পায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইউনিটেক্স গ্রুপ। এর পর নতুন ব্যবস্থাপনায়, নতুন উদ্যোমে কারখানাটি আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে।
বর্তমান কর্ণফুলী জুট মিলের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ ইউনিটেক্স গ্রুপের ডিপুটি জেনারেল ম্যানেজার ফখরুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বরাদ্দ নেওয়ার পর থেকেই নতুন বিনিয়োগ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পাটকলটিকে বহুমুখী উৎপাদন এবং লাভজনক করতে নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়। প্রায় ৪৭ একর জায়গা জুড়ে প্রতিষ্ঠিত এই কারখানায় বর্তমানে এক হাজারেরও বেশি শ্রমিক-কর্মচারী কাজ করছেন। এখানে দুই শিফটে জুট থেকে দৈনিক ৩০ টনের বেশি সুতা উৎপাদিত হয়। এসব সুতা রপ্তানি হয় চীন, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, তুর্কি, ইরানসহ বিশ্বের প্রায় ১২টি দেশে। গত অর্থবছরে এই কারখানা থেকে সুতা রপ্তানি করে ৮৫ লাখ মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হয়েছে।
ইউনিটেক্স গ্রুপের সহকারী পরিচালক রায়হান আহমেদ বলেন, কর্ণফুলী জুট মিলে পাট থেকে সুতা উৎপাদনের লক্ষ্যে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছ থেকে পাট সংগ্রহ করা হয়। উপযুক্ত মূল্য পরিশোধে পাট সংগ্রহের ফলে প্রান্তিক কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। পাটের সোনালী দিন ফিরিয়ে আনতেই ইউনিটেক্স গ্রুপ কাজ করে যাচ্ছে।
একুশে সংবাদ/আ.জ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :