“নির্মাণে হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জেটি নিউ এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড”
“কক্সবাজারকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন তত্পরতার অংশ এ প্রকল্প”
“প্রস্তাবিত এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২০ বছর বিদ্যুৎ কিনবে সরকার”
দেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে কক্সবাজারের চকরিয়ায় স্থাপন করা হচ্ছে ২২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন আরেকটি বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র। এটি নির্মাণ করবে হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান জেটি নিউ এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড। বেসরকারি খাতে বিল্ড-ওন-অপারেট (বিওও) ভিত্তিতে এবং নো ইলেকট্রিসিটি, নো পেমেন্টের শর্তে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সার্বিক ব্যয় বহন করবে এ প্রতিষ্ঠান। প্রস্তাবিত এ বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২০ বছর বিদ্যুৎ কিনবে সরকার।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে মিশ্র জ্বালানি ব্যবহারের অংশ হিসেবে নবায়নযোগ্য শক্তিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সৌর, বর্জ্য থেকে বিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ, বায়ুবিদ্যুৎ আগামী দিনে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কক্সবাজারকে ঘিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে উন্নয়ন তত্পরতা পরিচালনা করছেন, তার অংশ হিসেবে এ বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ করা হচ্ছে। এটি হতে যাচ্ছে দেশের বৃহত্তম বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানায়, এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুতের ট্যারিফ হার নির্ধারণ করা হয়েছে দশমিক ১২২৫ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুতের দাম পড়বে ১৩.৪১৪ টাকা (১ ডলার=১০৯.৫০ টাকা হিসেবে)। সে হিসেবে ২০ বছরে স্পন্সর প্রতিষ্ঠানকে আনুমানিক ১২ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হবে।
প্রস্তাবিত প্রকল্প থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ ইভাকুয়েশনের বিষয়ে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের (পিজিসিবি) মতামত এবং বিদ্যুৎ কেনার বিষয়ে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের মতামত নেওয়া হয়েছে। স্পন্সর কোম্পানি প্রকল্প স্থাপনের লক্ষ্যে নিজ খরচে প্রয়োজনীয় জমি সংগ্রহসহ অবকাঠামো নির্মাণ এবং পরবর্তীতে তা সংরক্ষণ ও মেরামত করবে। প্রকল্প বাস্তবায়নে স্পন্সর কোম্পানিকে নিজ খরচে প্রকল্প স্থান থেকে পিজিসিবির চকোরিয়া ১৩২/৩৩ কেভি গ্রিড উপকেন্দ্র পর্যন্ত প্রায় ১৩ কিলোমিটার ১৩২ কেভি ডাবল সার্কিট সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করতে হবে।
প্রাথমিকভাবে প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুতের ট্যারিফ হার দশমিক ১৩১৫ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৪.৩৯৯২ টাকা) প্রস্তাব করেছিল স্পন্সর কোম্পানি। পরে দরকষাকষির মাধ্যমে প্রতি কিলোওয়াট/ঘণ্টা বিদ্যুতের ট্যারিফ হার দশমিক ১২২৫ ডলার নির্ধারণ করা হয়। নির্ধারিত এই ট্যারিফ হারের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে অনুমোদিত বিভিন্ন ট্যারিফ হারের সামঞ্জস্য রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, স্পন্সর কোম্পানি বিদ্যুতের বাণিজ্যিক উৎপাদনের জন্য ৩৬ মাস সময় পাবে। বিদ্যুৎ কেনার বিল পরিশোধের ক্ষেত্রে বিল দাখিলের পরবর্তী মাসের প্রথম কার্যদিবসে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ডলার বিনিময় হার বিবেচনা করা হবে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র আরো জানায়, ইতোমধ্যে কক্সবাজারে ৬০ মেগাওয়াট ও মংলায় ৫৫ মেগাওয়াট বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের চুক্তি সই করা হয়েছে। কক্সবাজারের ৬০ মেগাওয়াট বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ পরীক্ষামূলকভাবে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে। এ ধারাবাহিকতায় হংকংয়ের প্রতিষ্ঠানটি নিজ উদ্যোগে বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব দিলে প্রস্তাব প্রক্রিয়াকরণ কমিটি এবং কারিগরি কমিটির কাছে তা গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়।
সর্বজনীন বিদ্যুৎসেবা এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানির উন্নয়ন ও প্রসারে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনাময় উৎস বায়ুশক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
একুশে সংবাদ/আ.জ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :