চালু হচ্ছে বাংলাদেশের ‘সুলতানগঞ্জ’ পশ্চিমবঙ্গের ‘ময়া’ নৌপথ। রাজশাহীর সুলতানগঞ্জ থেকে পশ্চিমবঙ্গের ধুলিয়ানের ময়া পর্যন্ত নৌপথটি ২০২০ সালের অক্টোবরে মাসে চালু হবার কথা ছিল। কিন্তু নানা প্রতিকূলতার কারণে তা পিছিয়ে যায়। এবারে ফের চালুর উদ্যোগ চলছে জোর কদমে এগুচ্ছে।
২০০৪ সালেও এই নৌপথটি সচল ছিল। ধুলিয়ানের ১৫ কিলোমিটার উজানে ভারতের ঝাড়খণ্ডের পাকুড় থেকে পাথর এসেছে যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের জন্য। কিন্তু নাব্যতা জনিত সংকটের দরুন জলপথটির ব্যবহার বন্ধ হয়ে যায়।
২০২০ সালে শুরুতে এটি সচলে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমিটি নৌপথটি পরিদর্শন করে রিপোর্ট দেওয়ার পর বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জলপথের চ্যানেল মার্কিংয়ের কাজ সম্পন্ন করে।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ১০টি নৌপথ রয়েছে। বর্তমানে কয়েকটি সচল রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ব্যবহার নৌপথ হচ্ছে, কলকাতা-চট্টগ্রাম-নারায়ণগঞ্জ। কলকাতা থেকে সবচেয়ে বেশি পরিবাহিত পণ্যটি হচ্ছে ফ্লাই অ্যাশ। এক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ বাংলাদেশি জাহাজ ব্যবহার হয়ে থাকে।
সুলতানগঞ্জ-ময়া নৌপথ চালুর সর্বশেষ পরিস্থিতি দেখতে সরেজমিন পশ্চিবঙ্গের ময়া পোর্ট পরিদর্শন করেন একটি প্রতিনিধি দল। চট্টগ্রাম, মোংলা বন্দর ছাড়াও কমলাপুর রেলওয়ে আইসিডিসহ বিভিন্ন বন্দর হ্যান্ডলিংয়ে একমাত্র প্রতিষ্ঠান ‘সাইফ পোর্ট হ্যান্ডলিং সেখানে একটি প্রতিনিধি দল পাঠায়।
ঢাকায় ফিরে আসা প্রতিনিধি দলের অন্যতম সদস্য এবং সাইফ পাওয়ারটেকের জেনালের ম্যানেজার পবিত্র কুমার সরকার বলেন, একুশে সংবাদ.কমকে বলেন, ময়াতে পণ্য খালাসের জন্য ভারত সরকার দুটো কনভেয়ার বেল্ট, কাস্টমস জন্য স্থাপনার ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছে। পুজোর পর বাকী কাজগুলা সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে করার পদক্ষেপও নেওয়া হয়েছে।
পবিত্র কুমার সরকার বলেন, সম্ভাবনাময় এই স্থলবন্দরটি চালু হলে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি বাণিজ্যের নতুন মাত্রা যোগ হবে।
পশ্চিমবঙ্গের ময়া থেকে পদ্মার বুক চিরে পণ্য আসবে বাংলাদেশের রাজশাহীর সুলতানগঞ্জে। এই নৌপথে যেমন পণ্য আসবে, তেমনি যাবেও। সম্ভাবনাময় নৌপথ সুলতানগঞ্জ-ময়া। মাত্র ১৮ কিলোমিটারের স্বল্প দূরতের নৌপথটি চালু হলে রাজশাহীর গোদাগাড়িতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা যেমন হবে, তেমন বাণিজ্যেরও প্রসায়ার ঘটবে।
অতিসম্প্রতি রাজশাহীর গোদাগাড়ির সুলতানগঞ্জ বন্দর স্থান পরিদর্শন করে এসেছেন গাজী গোলাম মোক্তাদির। যিনি সাইফ পোর্ট হ্যাল্ডলিংয়ের জেলারেল ম্যানেজার অপারেটিংয়ের দায়িত্বে রয়েছেন। গাজী গোলাম মোক্তাদির বলেন, বাণিজ্যের মূল কথা হচ্ছে সময়-সাশ্রয়ী পরিবহন। সুলতানগঞ্জ-ময়া বাণিজ্যিক নৌপথ সেই স্বাক্ষরই বহন করে।
সম্ভাবনাময় এই নৌপথটি ঘিরে এরই মধ্যে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে দারুণ উৎসাহ দেখা দিয়েছে। বলা যায় ব্যবসায়ীদের অনুরোধও রয়েছে নৌপথটি দ্রুত চালু করতে।
এই নৌপথটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বিপাকে পড়েন উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা। দু’দেশের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সুলতানগঞ্জ-ময়া জলপথ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। দু’দেশ থেকেই পণ্য পরিবাহিত হবে। বিশেষ করে বাংলাদেশি জাহাজ যোগেই অধিকাংশ পণ্য পরিবাহিত হবে।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :