স্যাটেলাইট, সাবমেরিন এবং বঙ্গবন্ধু টানেলের পর বাংলাদেশের আরও একটি সক্ষমতার স্মারক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প। সাবমেরিণে বিশ্বে ৪১তম এবং ৩২তম পারমাণবিক দেশ হিসাবে বিশ্বে বাংলাদেশের গর্বিত উপস্থিতি। রূপপুর প্রকল্পের বাস্তবায়ন বাংলাদেশের প্রতীক হয়ে থাকবে জাতীয় সক্ষমতার।
বাংলাদেশের রূপুপর বিশ্বের ৩২তম আর দক্ষিণ এশিয়ার তৃতীয় দেশ হিসেবে পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রবেশ করল। প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে ২০২৪ সালের মার্চে প্রথম ইউনিটে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করার কথা রয়েছে। ২০২৫ সালের মাঝামাঝি দ্বিতীয় ইউনিট চালু হবার সম্ভবনা রয়েছে। দুটি ইউনিটে মোট ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
এরই মধ্যে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম রূপপুরে পৌছেছে। ৫ অক্টোবর প্রকল্প এলাকায় রাশিয়ান কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের কাছে ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করবে। এখন সেই ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানকে ঘিরে রূপপুরের আকাশে-বাতাস বর্ণিল হয়ে ওঠেছে। রং লেগেছে ঈশ্বরদীর রূপপুরে। সর্বত্র সাজ সাজ রব। বর্ণিল সাজে সাজানো হচ্ছে প্রকল্প ও গ্রীণসিটি।
ইতিমধ্যেই রাশিয়া থেকে উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন প্রতিনিধিদল রূপপুরে পৌছে গেছেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানসহ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা ঈশ্বরদীর রূপপুরে অবস্থান করছেন। অনুষ্ঠানকে বর্ণাঢ্য ও স্মরণীয় করতে চলছে মহাকর্মযজ্ঞ। গ্রীণসিটির সামনের প্রাচীরে কালারফুল চিত্রকর্ম অঙ্কন করা হয়েছে। এ চিত্রকর্ম দেখার জন্য এলাকার লোকজন ভিড় জমাচ্ছে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক সংস্থা রোসাটমের মহাপরিচালক আলেস্কি লিখাচেভ সশরীরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর করবেন। বাংলাদেশের পক্ষে গ্রহণ করবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।
‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়াম হস্তান্তর অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আই এর মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি।
রূপপুর প্রকল্পের আবাসন গ্রীণসিটিও সাজানো হচ্ছে বর্ণিল সাজে। গ্রীণসিটির ভেতরেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। ৬ অক্টোবর পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলবে। গ্রীণসিটির সামনের প্রাচীরে দৃষ্টিনন্দন চিত্রকর্ম ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। ঢাকার চিত্রশিল্পী টিপু সুলতান কালারফুল চিত্রকর্মের মাধ্যমে নিউক্লিয়ার নিয়ে সাধারণ মানুষের ভ্রান্ত ধারণাকে দূরীকরণের চেষ্টা করেছেন।
চিত্রশিল্পী টিপু সুলতান বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপিত হলে এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট হবে বলে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। প্রকল্পের কারণে প্রাকৃতিক পরিবেশে যে কোনো প্রভাব পড়বে না, এ বিষয়টি কালারফুল চিত্রকর্মের মাধ্যমে মানুষকে আকর্ষণ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আমাদের দেশের অর্জনগুলো এ চিত্রকর্মে স্থান পেয়েছে।
একুশে সংবাদ/আ.ভ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :