- যানবাহনের সংখ্যার তুলনায় তৈরি হয়নি নতুন কোনো রাস্তা
- যানজট নিরসনে সরকারের নানা উদ্যোগ থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়
- রাজধানীর ৭৭ শতাংশ রাস্তা দখল করে রাখে প্রাইভেটকার
- রাজধানীর ৮৫ শতাংশ মানুষ ব্যবহার করছে ২৩ শতাংশ রাস্তা
- ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে- আসমা সিদ্দিকা মিলি (উপ-কমিশনার: ডিএমপি লালবাগ বিভাগ)
ঢাকা শহরের লোকসংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। তার উপর পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। সেই তুলনায় ঢাকায় নতুন কোনো রাস্তা তৈরি হয়নি। উল্টো যে রাস্তাগুলো রয়েছে, তাও বেদখল হয়ে যাচ্ছে। তার উপরে শহরের রাস্তায় অবৈধ গাড়ি পার্কিং। আর যত্রতত্র পার্কিং ঢাকায় যানজটের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যত্রতত্র এই অবৈধ পার্কিং যেন এখন নিয়মে পরিণত হয়েছে। কোথাও কোথাও চলছে রাস্তা দখল করে গাড়ি দাঁড় করিয়ে ‘পার্কিং ফি’ নেওয়ার ব্যবসা। বিভিন্ন জায়গায় গড়ে ওঠা এসব অবৈধ পার্কিং ঘিরে চলে চাঁদাবাজি। বারবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও সমাধানের দেখা মেলেনি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন,
নগরীর ফুটপাত দখল, ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্বে অবহেলা, অসচেতনতা, ঘুষ গ্রহণ, জনগণের মধ্যে আইন অমান্য করার প্রবণতার পাশাপাশি রাস্তার পাশে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিংয়ের কারণে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে যানজট নিরসনে আন্ডারপাস, রোড ডিভাইডার, ওভারব্রিজ নির্মাণসহ সরকারের নানা উদ্যোগ থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয়।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সূত্রে জানা যায়,
তিলোত্তমা নগরী খ্যাত রাজধানী ঢাকার ৭৭ শতাংশ রাস্তা দখল করে রাখে প্রাইভেটকার। রাইড শেয়ারিংসহ এসব ব্যক্তিগত গাড়ির ব্যবহারকারী রাজধানীর ১৫ শতাংশ মানুষ। এর মানে রাজধানীর ৮৫ শতাংশ মানুষ ব্যবহার করছে ২৩ শতাংশ রাস্তা।
সরেজমিনে দেখা যায়, জিপিও মোড় থেকে সমগ্র গুলিস্তানের সড়ক-বাসস্ট্যান্ড হকারদের দখলে। গোলাপ শাহ মাজার চত্বর থেকে স্টেডিয়ামমুখী সড়ক দখল করে বসানো হয়েছে নানা পণ্যের দোকান। ফুলবাড়িয়া ও কাপ্তান বাজার সড়ক দুটি দোকান ও বাসস্ট্যান্ড বানিয়ে রাখায় যানবাহনকে দীর্ঘ সময় যানজটে পড়ে থাকতে হচ্ছে। তাছাড়া সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি হয়ে বাবুবাজার সেতু ও আরমানীটোলা এলাকায় সড়কের দু`পাশের মার্কেট এবং ট্রান্সপোর্টের মালামাল ওঠা-নামার পয়েন্ট ছাড়াও বাস-ট্রাক ও লেগুনাস্ট্যান্ড বানিয়ে রাখা হয়েছে। ওইসব স্থান দিয়ে পার হতে কয়েক ঘণ্টা সময় লেগে যাচ্ছে পরিবহন যাত্রীদের।
রাজধানীর গুলিস্তানসহ আশেপাশের এলাকায় সড়ক দখলের কারণে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয় যাত্রীদের। ঘরে ফেরা যাত্রীদের বাসায় ফিরতে নাকাল অবস্থার পড়তে হয়। পুরো এলাকাটির সড়কজুড়ে গাড়ির স্ট্যান্ডসহ গড়ে তোলা হয়েছে বিভিন্ন দোকানপাট। এর ফলে সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট। ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয় যাত্রীদের।
এছাড়া সড়কের উপর এলোপাতাড়ি গাড়ি রেখে যাত্রী ওঠা-নামা করছে পরিবহনগুলো। ফুলবাড়িয়া বিআরটিসি স্ট্যান্ডের সামনে রাস্তার পূর্বপাশে সুন্দরবন মার্কেটের চারপাশে ইলিশসহ কয়েকটি পরিবহন কোম্পানি ও কদমতলীগামী লেগুনাস্ট্যান্ড বানানো হয়েছে। এদিকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের টোল প্লাজা থেকে বঙ্গবাজার পর্যন্ত ফ্লাইওভারের নিচের রাস্তায় অসংখ্য বাস পার্কিং করে রাখা হয়েছে। সরু রাস্তাটির দুই পাশে বাস রাখায় রিকশা চলানোও দায় হয়ে পড়ছে।
এইদিকে, টিএন্ডটির রমনা ভবনের সামনের রাস্তা থেকে বায়তুল মোকাররম হয়ে জাতীয় স্টেডিয়াম পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশ স্ট্যান্ড বানিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন পরিবহন বাস ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করছে হকাররা। এদের মধ্যে রয়েছে ফুলবাড়িয়ায় বনশ্রী পরিবহন, গাজীপুর পরিবহন, কালশী রুট ও চিড়িখানা রুটের গাড়ি। রাস্তাটির পূর্বপাশে বানানো হয়েছে পরিবহনের ভাসমান টিকিট কাউন্টার।
অন্যদিকে,
বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটের সামনে উৎসব, বন্ধন, শীতল পরিবহনসহ একাধিক কোম্পানির গাড়ি যাত্রী ওঠা-নামাসহ কাউন্টার বানিয়ে বসতে দেখা যায়। জাতীয় স্টেডিয়ামের ১ ও ২নং গেটের সামনে রাস্তার দুই পাশে বোরাক, বোরাক এসি, দোয়েলসহ বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার বানিয়ে যাত্রী ওঠা-নামা করছে। বঙ্গবন্ধু স্কয়ার, পাতাল মার্কেটের সামনে থেকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে উঠার রাস্তা পর্যন্ত স্ট্যান্ড বানিয়ে রাস্তা দখল করে রেখেছে পরিবহনগুলো।
একই চিত্র দেখা যায়, মৌচাক এলাকায়। অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং তীব্র যানজটের সৃষ্টি করছে। রাস্তার দুপাশে গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য সাধারণ মানুষকে পড়তে হচ্ছে ভোগান্তিতে। মৌচাক দিয়ে নিয়মিত যাতায়াত করেন আসাদ উল্লাহ। তিনি বলেন, দুপুরের পর থেকে মৌচাক এলাকায় গাড়ি পার্কিং বেশি লক্ষ্য করা যায়। এসব গাড়ির জন্য প্রতিদিনই অস্বস্তিতে পড়তে হয়। সাধারণ মানুষ রাস্তা দিয়ে ভাল করে একটু হাঁটতেও পারে না।
যানজটের মাত্রা বিপদসীমা অতিক্রম করেছে মহাখালীতে। এখানে রাস্তার পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে অসংখ্য দূরপাল্লার বাস। অপরদিকে সড়কে যানবাহনেরও চাপ বিস্তর। কিন্তু পাশেই দূরপাল্লার পরিবহনের জন্য রয়েছে বিশাল টার্মিনাল। তবুও প্রধান সড়ককেই অবৈধ পার্কিং হিসেবে ব্যবহার করছেন দূরপাল্লার পরিবহন শ্রমিকরা। এতে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট।
সরেজমিনে দেখা যায়,
টার্মিনাল ঘেঁষে সড়কের পাশে অবৈধ পার্কিং করা রয়েছে সারি-সারি বাস। প্রধান সড়কের নাবিস্কো থেকে মহাখালী পর্যন্ত জায়গায় জায়গায় একইভাবে রাখা হয়েছে বাসগুলো। এতে সড়কের একটি লেন প্রায় দূরপাল্লার গণপরিবহনের দখলেই থাকছে। অপর দিকে মহাখালী ইউটার্ন দিয়ে টার্মিনাল থেকে বাস বের হওয়ার সময়ও সড়কে সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। টার্মিনালের বিপরীত পাশে বাস দাঁড় করিয়ে তোলা হচ্ছে যাত্রী।
এসময় আরও দেখা যায়, সড়কের পাশে দাঁড় করানো অবস্থায় রয়েছে শ্যামলী বাংলা পরিবহন, এনা, সৌখিন এক্সপ্রেস, রাজিব, বিনিময়, একতা, রিফাত পরিবহন, ইমাম, আলম এশিয়া, সোনার বাংলা, ইসলাম পরিবহন, লাবিবা, পিপিএল সুপার, দ্রুতগামী, জলসিঁড়ি, উজান-ভাটি, সম্রাট পরিবহন, অনন্যা পরিবহনসহ আরও বিভিন্ন কোম্পানির একাধিক বাস। এই বাসগুলো টার্মিনালের বাইরে সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
অপর দিকে ইউটার্নের মধ্যে সড়কে রাখা হয়েছে পুলিশে র্যাকার যান। অন্যদিকে সড়কের দুই পাশেই দায়িত্বরত রয়েছে পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সদস্যরা। কিন্তু সড়কে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা থাকলেও সড়কের পাশে অবৈধ পার্কিং করতে কোনো দ্বিধা করছেন না পরিবহন শ্রমিকরা। এ যেন মঘের মুল্লুক। সাধারণ মানুষে ভোগান্তি হলে কার বাপে কি?
সদরঘাট যাওয়ার উদ্দেশ্যে রিকশা নিয়ে যাত্রা করেন মোঃ সিদ্দিক। তিনি বলেন,
আমি সদরঘাট যাবো। ব্যবসার কাজে প্রায় যেতে হয় আমাকে। প্রচুর গরম পড়েছে। রিকশা নিয়ে যাচ্ছি। বাসে উঠলে অনেক সময় লেগে যাবে। যানযটের কারণে বাসে উঠতে মন চায় না। বাসের আগে রিকশায় যাবো। তবে এখন দুপুরের সময় যানযট কম লাগে। গরমে মানুষ কম বের হয়। অফিস ছুটির সময় থেকে রাত পর্যন্ত সৃষ্টি হয় দীর্ঘ যানজট।
দাউদকান্দিগামী মোঃ মাইনুল ইসলাম আনোয়ার বলেন, অনেক সময় হয়েছে গাড়িতে উঠেছি। থেমে থেমে যাত্রী নিচ্ছে বাসটি। বাড়িতে যাচ্ছি নানুকে আনতে। দুপর বেলা বের হয়েছি, জ্যামটা কম পাবো বলে কিন্তু জ্যামতো লেগেই আছে। রোদের কারণে মানুষ কম বের হয়। ইনশাআল্লাহ গাড়ি ছেড়ে দিলে যেতে বেশি সময় লাগবে না। এদিকে রাস্তা দখল করে যাত্রী উঠাচ্ছে। হকারের চাপেতো আছেই। কবে এ থেকে মুক্তি পাবো।
রাজধানীর আজিমপুরে থাকেন আরাফাত খন্দকার। প্রতিদিন নিউমার্কেট, মিরপুর রোড দিয়ে গণপরিবহনে অফিস করেন শ্যামলীতে। তিনি বলেন, নিউমার্কেটের এই রাস্তায় লেগুনা আর প্রাইভেটকারের অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে যানজট লেগেই থাকে। এখান থেকেই বের হতেই ৩০ মিনিটের বেশি লেগে যায়। এভাবেই চলছে। এর কোনো সমাধান নেই।
তিনি বলেন, সকালে স্বভাবতই বেশিরভাগ মানুষের অফিসে যাওয়ার তাড়া থাকে। তখন সড়কে গাড়ি বেড়ে যায়। কিন্তু রাস্তায় অবৈধ পার্কিংয়ের কারণে যানজট আরও বেড়ে যায়। প্রতিটি মার্কেটে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকলে যানজট অনেকটা কমে যেত, সময়ও অনেক বেঁচে যেত। আরাফাত খন্দকারের মতো রাজধানীর বহু মানুষকে প্রতিনিয়ত এরকম ভোগান্তি পোহাতে হয়।
বেলায়েত হোসেন প্রতিদিনই পল্টন থেকে মহাখালী অফিস করেন। তাকেও মৌচাকের রাস্তায় যানযটের কবলে পড়তে হয়। কারণ, এ রাস্তায় প্রচুর প্রাইভেটকার অবৈধভাবে পার্কিং করা থাকে। রাস্তার চারপাশের মার্কেটগুলোর কোনো পার্কিং ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়ত এ অবস্থার সৃষ্টি হয়।
গুলিস্তানের ব্যবসায়ী সবুজ জানান, এই এলাকায় বাসস্ট্যান্ড ও ফুটপাতের দোকানের কারণে যানজট লেগেই থাকে। ৩০ বছর থেকে একই রকম দেখছি। তেমন কোন পরিবর্তন চোখে পড়ে না।
রোববার সরেজমিন দেখা যায়, নিউমার্কেটের দক্ষিণ পাশের ব্যস্ত সড়কটিও অবৈধ গাড়ি পার্কিং আর হকারদের দখলে। এ সড়কের দুই পাশে দিনভর অসংখ্য গাড়ি পার্কিং করায় সড়ক সরু হয়ে যায়। গাড়ি চলাচলের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে থাকে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন,
নীতি-নির্ধারণী পর্যায় থেকে প্রাইভেটকারকে প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে বেশি, ফলে গণমানুষের জন্য গণপরিবহন সবসময় উপেক্ষিত থেকেছে। এমনকি যে বিআরটিসি সাধারণ মানুষের জন্য গণপরিবহন চালানোর কথা, তারাও তাদের বাস শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ভাড়া দিয়ে রেখেছে।
একাধিক সূত্র নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, এই নগরীর ব্যাস্ততম সড়কগুলোতে বসানো স্ট্যান্ডকে ঘিরে মাসে কোটি টাকার চাঁদাবাজি হয়। রাজনৈতিক নেতারা ও ট্রাফিক পুলিশ মিলে গাড়ি থেকে চাঁদা আদায় করে। এখানে প্রতিটি সড়কে রয়েছে নির্ধারিত লাইনম্যান। তাদের মাধ্যমেই হয় চাঁদাবাজি। আর চাঁদা না দিলেই উচ্ছেদ ও মামলা। একাধিকবার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে, কোন প্রতিকার হয়নি বলেও জানান তারা।
গুলিস্তান মোড় থেকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার যাত্রী পরিবহন করা মালিক সমিতির বাসের ড্রাইভার মোঃ মনির হোসেন বলেন, যাত্রী ওঠা-নামার জন্য নির্দিষ্ট কোনো স্থান না থাকায় আমরা যেখানে সেখানে যাত্রী উঠাই। এর জন্য যাত্রীদের অনেক গালমন্দ খেতে হয় আমাদের। কিন্তু কি করব দেখেন! আমাদের তো বাঁচতে হবে।
গুলিস্তান টু ভুলতা গাউসিয়াগামী গাউছিয়া এক্সপ্রেসের ড্রাইভার গুলজার হোসেন বলেন, আমাদের গালাগালি দেওয়া কখনো বন্ধ হবে না। জায়গা কম কি করব? যাত্রী না উঠলে নিজে কি খাবো, পরিবারকে কি খাওয়াবো! মালিকের টাকা ঠিক মত না দিলে বেতন পাবো না। আমাদের স্থায়ী বন্দোবস্ত করার দাবি জানাই।
গুলিস্তান মোড়ে দায়িত্বরত কনস্টেবল প্রেমানন্দ বলেন,
এখন আমাদের মধ্যে নতুন চিন্তাভাবনা কাজ করছে। জায়গা সীমিত হওয়ার কারণে এই যানজট। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি যাত্রীদের সেবা দেওয়ার। এখানে অবস্থানরত গাড়ির কাউন্টারগুলো বৈধ কি না বলতে পারবো না। এর চেয়ে বেশি কিছু আমি জানি না।
গুলিস্তান আরেক মোড়ের ট্রাফিক কনেস্টেবল হাবিব বলেন, যানজট নিরসনে আইন অমান্যকারী গাড়ি ধরতেছি, মামলা দিতেছি, ডাম্পিংও করছি। যাত্রীদের হয়রানি রোধে আইন অনুযায়ী সকল পদক্ষেপ আমরা নেয়।
গুলিস্তান মোড়ের ট্রাফিক ইনচার্জ টিআই মশিউর রহমান বলেন,
রাস্তার উপর কোন হকার নাই, সব হকার ফুটপাতে। ট্রাফিকের সাথে হকারের কোন সম্পর্ক নাই। এদের নিরসনে অনেক জনবল প্রয়োজন। এতো জনবল আমার নাই। এদের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। এখানের গাড়ির কাউন্টারগুলো প্রায় ৪০-৪৫ বছর ধরে রয়েছে, এ বিষয়ে বলতে পারছি না। এ ছাড়াও ডিপিডিসির উন্নয়ন কাজ চলায় এই মোড়ে গাড়ির চাপ বেশি। তাই শতভাগ নিয়ম কানুন মানতে পারছি না। আমি এখানে দায়িত্বে আসার পর যাত্রীদের হয়রানি বন্ধে আইন অমান্যকারী সকল পরিবহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। ইনশাআল্লাহ সামনের দিনগুলোতে আরও যানযট নিরসনে সোচ্চার থাকব। এ ছাড়াও সকল জনসাধারণের সচেতনতাই পারে এই যানজট নিরসন করতে।
ডিএমপি লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ট্রাফিক) আসমা সিদ্দিকা মিলি বলেন,
যাত্রীদের হয়রানি বন্ধে পুলিশের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি। গুলিস্তান সড়কে গাড়ি রাখার জন্য কোন স্ট্যান্ড সিটি কর্পোরেশন থেকে বরাদ্দ না থাকায় সড়কে গাড়ি রাখা হচ্ছে। এতে যানবাহনের শৃঙ্খলা রক্ষায় ট্রাফিক সদস্যদের অনেক বেগ পেতে হয়। যানজট নিরসনে রেজিস্ট্রেশনবিহীন, ফিটনেসবিহীন, ড্রাইভিং লাইসেন্সবিহীন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বন্ধে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। কোনো ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগের চেয়ে এখন অনেক কমেছে যানজট।
একুশে সংবাদ/ বাবু/ জাহা
আপনার মতামত লিখুন :