বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত হয়ে নেপাল, ভুটান ও চীনের সঙ্গে রেল সংযোগ স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে রেলপথেই বাংলাদেশ থেকে যাওয়া যাবে নেপাল-ভুটান-চীন। অপরদিকে বাংলাদেশের রেলপথ ব্যবহার করতে চায় ভারত। বাংলাদেশ হয়ে ভুটান সীমান্ত পর্যন্ত ট্রেন চালানোর প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি। অনুমতি পেলে ৩০০ কিলোমিটার সাশ্রয় হবে ভারতের। তার বিপরীতে বাংলাদেশের রয়েছে দুটি রুটের প্রস্তাব।
বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ট্রেন চালাতে চায় ভারত। প্রথমে একটি ট্রেন পরীক্ষামূলক চালানোর প্রস্তাব । দর্শনা দিয়ে ঢুকে চিলাহাটি দিয়ে ট্রেন নিতে চায় ভারত। বিনিময়ে ভুটান সীমান্তে ভারতের হাসিমারা পর্যন্ত রেললাইন চাইবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে রেলপথ যোগাযোগ দীর্ঘদিনের। দুই দেশের মধ্যে চালু হচ্ছে আরও নতুন নতুন রেল সংযোগ। ফলে গতিশীল হচ্ছে বাণিজ্য, যোগাযোগে পাচ্ছে নতুন মাত্রা। প্রতিবেশী অন্য দেশের সঙ্গেও এই সুবিধা পেতে কাজ করছে বাংলাদেশ।
সে লক্ষ্যে পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা দিয়ে প্রতিবেশী চারটি দেশের মধ্যে রেলসংযোগ স্থাপন করতে চায় বাংলাদেশ। প্রকল্পের আওতায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বাংলাবান্ধা রুটে ৫৭ কিলোমিটার নতুন ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মিত হবে। প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে তিন হাজার ৭৫৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন এক হাজার ৩১৩ কোটি ২৪ লাখ এবং বৈদেশিক ঋণ দুই হাজার ৪৪০ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে ২০২২ সালের জুলাই থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত। বৈদেশিক ঋণের সম্ভাব্য উৎস হিসেবে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) ছাড়াও যে কোনো উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রস্তাব করা হয়েছে।
মূল প্রকল্প শুরুর আগে রেলওয়ের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পসমূহের সম্ভাব্যতা যাচাই করছে সরকার। বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়,
প্রকল্পের নীতিগত অনুমোদনের জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা কমিশনে প্রস্তাবনা পাঠিয়েছে পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত নতুন ডুয়েলগেজ রেলপথ নির্মাণের। অপরদিকে বাংলাদেশের রেলপথ ব্যবহার করে ট্রেন চালাতে চায় ভারত। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের নদীয়া জেলার গেদে রেলওয়ে স্টেশন থেকে আলিপুরদুয়ার জেলার বীরপাড়ার ডালগাঁও রেলওয়ে স্টেশন পর্যন্ত রেলপথ রয়েছে। কিন্তু এই দুই স্টেশনের মাঝে বাংলাদেশের রেলপথ ব্যবহার করতে চায় তারা। এতে ভারতের ট্রেন চালানোর সময় ও দূরুত্ব কমে আসবে।
এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দর্শনা দিয়ে ঢুকতে চায় ভারতের ট্রেন। পরে ঈশ্বরদী-আব্দুলপুর-পার্বতীপুর হয়ে চিলাহাটি পর্যন্ত রেলপথ ব্যবহার করে ভারতীয় ট্রেনটি আবার ভারতে প্রবেশ করবে—এমন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় রেল বোর্ডের এ প্রস্তাব বাংলাদেশ রেলওয়ের কাছে তুলে ধরেছে ভারতীয় হাইকমিশন।
বাংলাদেশের জমি ব্যবহার করে ভারতীয় ট্রেন চালানোর প্রস্তাবের আগে সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারতের সীমান্তবর্তী গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের ইন্টারচেঞ্জ ঘুরে দেখেছে ভারতের প্রতিনিধিদল। এর ভিত্তিতে বাংলাদেশের দর্শনা দিয়ে ভারতের ট্রেনের প্রবেশ এবং চিলাহাটি দিয়ে বের হওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে,
চিলাহাটি দিয়ে বের হয়ে ভারতের হলদিবাড়ী-জলপাইগুড়ি-ধুপগুড়ি-ফালাকাটা-হাসিমারা হয়ে ডালগাঁও স্টেশন পর্যন্ত যাবে নদীয়ার গেদে থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন। এই রেললাইন ব্যবহার করতে পারলে ভারতের পথ এবং খরচ কমে আসবে।
এবিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক বলেন, ‘আমরা শুধু দুই দেশের মধ্যে রেলপথ সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পাশাপাশি নেপাল-ভুটানকে ও যুক্ত করতে চাই।’
ভারতের ট্রেন যাত্রীবাহী না পণ্যবাহী হবে, এটি তাদের প্রস্তাবে জানানো হয়নি। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক একটি ট্রেন চালানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে । এমনকি ভারতের পক্ষ থেকে অনুষ্ঠানিকভাবে এখনো ‘ট্রানজিটের’ কথা না বলে বলা হচ্ছে ‘মুভমেন্ট’। এতে বিষয়টিতে আরো কিছুটা ধোঁয়াশা রয়েছে। ভারতের কাছে মুভমেন্টের ব্যাখ্যা চাইলে এটিকে ট্রানজিট করিডর হিসেবে ব্যবহার করা হবে বলে জানানো হয় বাংলাদেশকে।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে,
ভারতের গেদে থেকে বাংলাদেশের দর্শনা-ঈশ্বরদী-আব্দুলপুর-পার্বতীপুর-চিলাহাটি হয়ে ভারতের হলদিবাড়ী হয়ে ভুটান সীমান্তবর্তী ভারতীয় রেলওয়ে স্টেশন ডালগাঁও পর্যন্ত একটি এম্পটি রেক (খালি ট্রেন) দিয়ে ট্রায়াল রানের (পরীক্ষামূলক) প্রস্তাব দিয়েছে ভারতীয় রেল বোর্ড। যদিও এটি ভারতের দ্বিতীয় প্রস্তাব। প্রথম প্রস্তাবে ভারতের লক্ষ্য ছিল হলদিবাড়ী পর্যন্ত ট্রেন চালানো।
যোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে প্রটোকল কেমন হবে, সেটা আন্তর্জাতিকভাবে নির্ধারণ করা আছে। এটা স্পষ্ট ট্রানজিট। ফলে ভারত বন্ধু রাষ্ট্র হলেও বাংলাদেশকে সক্ষমতার পরিচয় দিয়ে নিজের লাভের অংশ বুঝে নিতে হবে। এবিষয়ে অভিজ্ঞ একজন বলেন, ‘আমরা নৌপথে সেই সক্ষমতা দেখাতে পারিনি। ভারত এই পথ ব্যবহার করে যে লাভ করবে, সেই লাভ থেকে নিজের পাওনা বুঝে না নিতে পারলে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে।’
ভারতের প্রস্তাবের বিপরীতে ১৫ মে আন্ত মন্ত্রণালয় সভা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, জননিরাপত্তা বিভাগ, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন এ বিষয়ে মতামত দিয়েছে। সভায় বলা হয়, বর্তমানে ভারতীয় হাইকমিশন থেকে আগের প্রস্তাবিত রুট বৃদ্ধি করে ভুটান সীমান্তের কাছে ভারতীয় রেলওয়ে স্টেশন ডালগাঁও পর্যন্ত প্রস্তাব পাওয়া গেছে। এই প্রস্তাব নিয়ে আবার আন্ত মন্ত্রণালয় সভা হওয়ার কথা।
একটি বিশেষ সূত্র জানায়,
বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ভারতের ট্রেন চালানোর বিষয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মত দিয়েছে, ট্রানজিটের বিপরীতে যেন উপযুক্ত ‘রেট’ (রেলপথ ব্যবহার করতে দেওয়ার জন্য টাকা নেওয়া) নির্ধারণ করা হয়।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আটটি ইন্টারচেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি ইন্টারচেঞ্জ কার্যকর। সেগুলো হলো—বেনাপোল-পেট্রোপোল, দর্শনা-গেদে, রোহনপুর-সিংবাধ, বিরাল-রাধিকারপুর ও চিলাহাটি-হলদিবাড়ী। এসব পথে নিয়মিত পণ্য ও যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল করছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের ট্রেন ভারতে প্রবেশের আগে দর্শনায় ইন্টারচেঞ্জে বাংলাদেশের ইঞ্জিনের পরিবর্তে ভারতের ইঞ্জিন যুক্ত করা হয়। সেখান থেকে ট্রেনটি ভারতের চালক চালানো শুরু করেন। একইভাবে ওই ট্রেনটি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় ভারতের ইঞ্জিন পরিবর্তন করে বাংলাদেশের ইঞ্জিন যুক্ত করা হয়। এখান থেকে বাংলাদেশের চালক দায়িত্ত গ্রহণ করে।
এসবের বিপরীতে বাংলাদেশ চাইবে ভারতের রেলপথ। অনেকটা বিনিময় সুবিধার ভিত্তিতে ভারত এই রেলপথ নিতে চাইছে। সহজ পথে ভুটানের কাছে যেতে চায় ভারত। আবার বাংলাদেশকেও ভুটানের কাছে যাওয়ার সুযোগ করে দেবে ভারত। কিন্তু ভারতের ডালগাঁও পর্যন্ত রেললাইন ব্যবহারের সুযোগ দিতে চাচ্ছে ভারত সরকার।
কিন্তু বাংলাদেশ চাচ্ছে সেখান থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে হাসিমারা পর্যন্ত যেতে। আবার হাসিমারা স্টেশনের কাছে ভুটানের স্থলবন্দর আছে, যার নাম ফুশিলং। যদি এই স্থলবন্দর পর্যন্ত যাওয়া যায় তাহলে ট্রান্সশিপমেন্ট করে ট্রেন থেকে পণ্য খালাস করে ট্রাকে ভুটানে নেওয়া যাবে।
ভারতের দেওয়া প্রস্তাবে যে রুটের কথা বলা হয়েছে তা হলো- ভারতের গেদে দিয়ে বাংলাদেশের দর্শনা হয়ে ঈশ্বরদী, আব্দুলপুর, পার্বতীপুর ও চিলাহাটি বর্ডার হয়ে ভারতের হলদিবাড়ী দিয়ে ডালগাঁও (ভুটান সীমান্তের নিকটবর্তী ভারতীয় রেলওয়ে স্টেশন) পর্যন্ত। এর ফলে অন্তত ৩০০ কিলোকিলোমিটার পথ সাশ্রয় হবে ভারতের। বর্তমানে ভারতীয় রেলওয়ে পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে বিহার হয়ে ঘুরে আবার পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে নিউ জলপাইগুড়ি তথা শিলিগুড়ি পথে ট্রেন চালায় ভারত।
জানা গেছে,
ভারতের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিবের সভাপতিত্বে গত ১৫ মে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় পরীক্ষামূলক ট্রেন পরিচালনার প্রস্তাবের ওপর মতামত চাওয়া হয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের কাছে।। এরপর চিঠি দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মতামত পাওয়া গেছে। ইতিবাচক মত পাওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে একটি সূত্র।
রেলওয়ে সূত্রে প্রকাশ, ভারতের দেওয়া রুটের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ রেলওয়ে দুটি রুটের প্রস্তাব করার ব্যাপারে পরিকল্পনা তৈরি করছে। যার একটি বাংলাদেশ দর্শনা-চিলাহাটি হয়ে ভারতের হলদিবাড়ী, জলপাইগুড়ি, ধুপগুড়ি, ফালাকাটা, ডালগাঁও হয়ে হাসিমারা স্টেশন পর্যন্ত। অর্থাৎ হাসিমারা স্টেশন পর্যন্ত ট্রেন চালানো যেতে পারে। সেই সুযোগ আছে। হাসিমারা স্টেশনের কাছাকাছি ১৮ কিলোমিটারে মধ্যে ভুটানের ল্যান্ড পোর্ট আছে, যার নাম ফুলছড়িং। যদি এই ল্যান্ড পোর্ট পর্যন্ত যাওয়া যায়, তাহলে ট্রান্সশিপমেন্ট করে ট্রেন থেকে মাল আনলোড করে ট্রাকে ভুটানে নেওয়া যাবে। কারণ ভুটানে কোনো রেললাইন নেই। তবে ভুটানের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য আছে, যা ভুটান থেকে ভারত হয়ে বাংলাদেশ আসে।
রেলওয়ের আরেকটি রুটের পরিকল্পনা হচ্ছে আসামের কোকরাজ থেকে গেলেগু পর্যন্ত ৫৮ কিলোমিটার রেলপথ হচ্ছে। এই ৫৮ কিলোমিটার রেলপথ হলে ভুটানের অভ্যন্তরে রেলপথ হয়ে যাবে। বর্তমানে ভুটানে কোনো রেলপথ নেই। ফলে বাংলাদেশের চিলাহাটি হয়ে ভারতের হলদিবাড়ী দিয়ে আসাম কোকরাজ-গেলেগু (ভুটান) পর্যন্ত এই রুটেরও পরিকল্পনা করা হয়েছে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভারতের প্রস্তাবের বিপরীতে এই দুটি রুটের প্রস্তাব করা হবে। যদিও গেলেগু পর্যন্ত রেললাইন হতে সময় লাগবে। এটি যতদিন না হয় ততদিন হাসিমারা পর্যন্ত ট্রেন চালানো যেতে পারে।
বর্তমানে পাঁচটি রুটে বাংলাদেশ-ভারত ট্রেন চলে। তিনটি যাত্রীবাহী ইন্টারচেঞ্জ, বাকি দুটি পণ্যবাহী। বর্তমান পদ্ধতিতে ভারতীয় ট্রেন সীমান্তে আসার পর বাংলাদেশি ইঞ্জিনে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আসে। বাংলাদেশি লোকোমাস্টার (চালক) তা চালিয়ে আনেন। ফিরে যাওয়ার সময়েও একই রকম নিয়ম অনুসরণ করা হয়।
কিন্তু পরীক্ষামূলক যাত্রার জন্য ভারতের সাম্প্রতিক প্রস্তাবে বলা হয়েছে,
তারা বাংলাদেশের ওপর দিয়ে দেশটির এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ট্রেন নিতে চায়। ভারত এর আগে প্রস্তাব দিয়েছিল, পরীক্ষামূলক যাত্রার পণ্যশূন্য রেলগাড়ি ভারতের গেদে থেকে বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় আসবে। সেখান থেকে পাবনার ঈশ্বরদী, নাটোরের আব্দুলপুর, দিনাজপুরের পার্বতীপুর, নীলফামারী সীমান্তবর্তী চিলাহাটী স্টেশন হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ী স্টেশনে যাবে। তবে দেশটির নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী ট্রেনটি হলদিবাড়ী থেকে যাবে ভুটান সীমান্তবর্তী ডালগাঁও স্টেশন পর্যন্ত।
ডালগাঁও পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার একটি স্টেশন। এ স্টেশন হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার রেললাইন গেছে। এই লাইন উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্যকে যুক্ত করেছে দেশটির মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে। ভূরাজনৈতিক কারণে এ রেলপথ ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে দেশটির উত্তর-পূর্বগামী ট্রেন জলপাইড়গুড়ির ‘চিকেন নেক’ করিডোর ঘুরে যায়। বাংলাদেশের দর্শনা-ঈশ্বরদী-আব্দুলপুর-পার্বতীপুর-চিলাহাটী হয়ে গেলে ৩০০ কিলোমিটার পথ কমবে। আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল রাজ্যের সঙ্গে বাকি ভারতের রেল যোগাযোগ সহজ হবে।
একুশে সংবাদ/হ.ক.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :