সময় পেড়িয়ে অনেক দিন। স্বৈরাচারের রাজত্বের দিন পেরিয়ে রাত, তারপর ভোর। জীবনের এই নিয়তি যখন প্রতিদিন, ঠিক তখন এক অজানা পথের ডাক। এক নতুন জীবন, এক স্বপ্নের হাতছানি। এক প্রতিভা ও এক রাশ আবেগ যখন মনের মাঝে ঘুরপাক খাচ্ছে, তখন অভিনন্দন ও ভালোবাসার ছড়াছড়ি।
শুরু হলো পথচলা, কিন্তু একি? এতো এক কঠোর সমীকরণ। স্বৈরাচারের পক্ষ, না নিরপক্ষ, এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে সবাইকে, সেই লক্ষ্যে কাজ। তা নাহলে এক সংস্থাতে যেতে হবে প্রতিদিন। ভাবলাম কেন এই প্রচলন, আমার স্বপ্নের ছবি তো এই শর্ত দেয়নি। আমার পিতার এক ঐতিহাসিক রায় কি আমার বিপক্ষে? তাহলে কি সেই মাথাখারাপবেশী নেত্রীর রোষানলে আমি কি আক্রান্ত? না এক বিরোধী প্রতিবাদী ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কারণে এই জুলুম।
আমি হতবাক আর অস্তির, কারণ প্রতিদিন এক সংস্থার কাছে বিবরণ ও মাঝে মধ্যে সচিবালয় শাসন। কখনও এক প্রভাবশালী মন্ত্রী বা তার সহকারীরা। আমার অন্যায় আমি বিদ্যুৎ বিল পরিসদ করেছি, কিন্তু শৈরাচেরের প্রচার করিনি, সেই উজির মহোদকে প্রণাম করিনি ও ঋণের অর্থ মওকুফ করিনি।
এই জীবনের স্বপ্ন ছবি আমি দেখেছি মনে পরে না। প্রতিদিন ভাবি আমি কি আমার পরিচয় হারিয়ে ফেলেছি? না নতুন কোনো পরিচয় পাচ্ছি, যা জীবনের বিপ্পনতা প্রসারিত করছে।
একদিন জানলাম, কিছু তাদের দলীয় আমার নাম তাদের সাথে যোগ করেছে অর্থের প্রয়োজনে। ভাবলাম একি আপদ, তাদের কথা মতো যোগাযোগ, প্রসাধন, আচ্ছাদন ও সংযোগ। কেন এই প্রতারণা নিজের সাথে। এক বিশ্বাস থেকে বিষাদ।
সেই চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে নিহত প্রিয় মানুষটার প্রিয় মুখ আমাকে বলল, “আমি বুঝি তোমার হতাশা, আর জানি তুমি অসহায়। তোমার এই অবস্থা তুমি পারবে ভেঙে দিতে”, মনে পড়ল সেই দিন যেইদিন আমার পিতা কর্নেল তাহেরকে ফাঁস দিয়ে ঝুলানোর আদেশ আদায় করে নিলেন ও সেই ভালোবাসার মুখ যিনি আমাকে আদর করে বলতেন “আমি মেজর জিয়া বলছি” আজ তুমি স্বাধীন।
আমি আজ স্বাধীন, নাই পরাধীনতার শিকল, নাই কোন কমিটির জোরপূর্বক অনুরোধ, নাই হাজিরা দেওয়ার আতঙ্ক।
আমি এখন বাঁচার স্বপ্ন দেখি, আত্মহাসি আর নতুন দিনের পরিকল্পনা করি। সকালের রোদ আর মুক্ত বাতাস দুটো যেন আজ পরিচ্ছন্ন।
যারা জীবন দিলো তাদের নিয়ে ভাবি আর অহংকার করি। ভালো থেকো ও আমাদের দেকে রেখ।
লেখক: তারিক আফজাল
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :