২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর গোটা বিশ্ব যেন ডুবে গিয়েছিল শোকের সাগরে। কিংবদন্তি ফুটবলার দিয়োগো আর্মান্দো ম্যারাডোনা সকলকে কাঁদিয়ে এই দিনেই ঢলে পড়েছিলেন মৃত্যুর কোলে।
তাঁর মৃত্যু নড়িয়ে দিয়েছিল সারা বিশ্বের আপামর ফুটবলপ্রেমী জনতাকে। সেই সময়েই অভিযোগ উঠেছিল, ম্যারাডোনার চিকিৎসায় গাফিলতির। আর্জেন্টিনাইন কিংবদন্তির বিদায়ের পর অবহেলার অভিযোগ ওঠে তাঁর চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যর্মীদের বিরুদ্ধেই। যার সত্যতা আছে বলে মনে করেছিল আর্জেন্টিনার কোর্ট। ফলে বিচারের আওতায় আনা হয়েছিল ৮ চিকিৎসা কর্মীকে। এ বার দেশের অ্যাপিল কোর্টের তরফে জানানো হয়, ট্রায়াল শুরু হবে এই আট জনের। সান ইসিদ্রো বোর্ড অফ অ্যাপিলসের তরফে জানানো হয়েছে, মারাদোনার নিউরোসার্জন লিওপোল্ডো লুক, মনস্তত্ববিদ অগাস্টিনা কোসাচভ এবং আরও ছয় স্বাস্থ্যকর্মী, যারা মারাদোনার দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ট্রায়াল শুরু হবে। এমনটাই জানানো হয়েছে ইএসপিএনের তরফে।
অভিযোগ উঠেছে ম্যারাডোনার নিউরোসার্জন এবং ব্যক্তিগত ডাক্তার লিওপোল্ডো লুক, এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং মনোবিজ্ঞানী, দুই ডাক্তার, দুই নার্সের বিরুদ্ধে। প্রথম থেকেই অবশ্য তাঁরা মৃত্যুর দায় অস্বীকার করেছেন। কিন্তু আদালত সব দিক বিচার করে দেখেছে যে, ম্যারাডোনা উপযুক্ত চিকিৎসা পেলে ‘বেঁচে থাকার আরও সুযোগ পেতেন’।আর্জেন্টিনার পেনাল কোড অনুযায়ী, এই অপরাধে ৮ থেকে ২৫ বছরের কারাদন্ডও হতে পারে। শুনানির পরবর্তী তারিখ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। দিয়েগোর মৃত্যুর পর তাঁর দুই মেয়ের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, যে মাসে ম্যারাডোনা মারা যান, সেই মাসের শুরুর দিকে তাঁর মস্তিষ্কে রক্ত জমাট বাঁধে। সেই সময়ে তাঁর ভালো চিকিৎসা হয়েছিল, ফলে তিনি সুস্থ হয়ে ওঠেন। সফল অস্ত্রোপচার করে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন। তার পর হঠাৎ করেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ জেতানো অধিনায়কের এমন মৃত্যুতে দানা বাঁধতে শুরু করে সন্দেহ। মৃত্যুর কারণ জানতে ২০ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। পরে আর্জেন্টিনার প্রসিকিউটররা ম্যারাডোনার যত্নে নিয়োজিত ডাক্তার এবং নার্সদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর নির্দেশ দেন। তদন্তে চিকিৎসায় ঘাটতি, গাফিলতি, অবহেলা এবং অনিয়ম ধরা পড়ে। অবহেলার প্রমাণ মেলায় বিচারক দোষীদের বিচারের আদেশ দিয়েছেন।
একুশে সংবাদ.কম/সম
আপনার মতামত লিখুন :