নিজ আগ্রহ থেকে বাংলাদেশে আসলেও দেশের সাধারণ ভক্ত-সমর্থকদের দেখা পাননি আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। সৌজন্য সাক্ষাৎ আর হোটেলবন্দী থেকেই শেষ হয় এই আর্জেন্টাইন ফুটবলারের ঢাকা সফর। সোমবার (৩ জুলাই) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ঢাকা ত্যাগ করেন তিনি।
ঢাকা সফরে মার্টিনেজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। আর্জেন্টাইন এই ফুটবলারের ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশে এসে দারুণ উচ্ছ্বসিত বিশ্বকাপজয়ী মার্টিনেজও। মার্টিনেজের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় প্রধানমন্ত্রী আর্জেন্টাইন এই গোলরক্ষকের প্রশংসা করে বলেন, ‘আপনি সেই ব্যক্তি যিনি আর্জেন্টিনার জন্য গৌরব নিয়ে এসেছেন। আমি আপনার সাফল্য কামনা করি।’
মার্টিনেজকে বাংলাদেশের সমর্থকরা বাজপাখি বলে ডাকেন। সেই ‘বাজপাখি’ উপহার দেওয়া হয়েছে তাকে। আইসিটি মন্ত্রী জুনায়েদ হোসেন পলক বলেন, ‘মার্টিনেজকে বাজপাখি উপহার দিয়েছে ফান্ডেড নেক্সট। এতে সে খুবই খুশি হয়েছে।’ বাজপাখি নামটিও তার খুব পছন্দ বলে জানান মন্ত্রী, `মার্টিনেজ বাজপাখি নামটি বেশ পছন্দ করেছে। সে নিজেও বেশ কয়েকবার এটি বলেছে।’
বাজপাখির সঙ্গে দেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীকও দেওয়া হয়েছে। নদীমাতৃক দেশ নৌকাও দেওয়া হয়েছে আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্যকে, ‘পাটের তৈরি একটি নৌকা এবং বঙ্গবন্ধুর বই উপহার দেওয়া হয়েছে।’
ভক্তদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে দেখা করার সুযোগ ছিল না মার্টিনেজের। তবে আসা-যাওয়ার পথে তার জন্য বিমান বন্দরে ভক্তদের যে অপেক্ষা সেটা নিশ্চয়ই তার নজর কেড়েছে। তাইতো বাংলাদেশ ত্যাগ করার সময় এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে।
কলকাতার বিমানে ওঠার আগে ইনস্টাগ্রাম বার্তায় মার্টিনেজ লিখেছেন, ‘নেক্সট ভেনচার ও ফান্ডেডনেক্সটের সঙ্গে বাংলাদেশে অসাধারণ একটা সফরে এসেছিলাম আমি। এ দেশের মানুষের যত্ন, ভালোবাসা ও অতুলনীয় আতিথেয়তা আমার হৃদয় জয় করেছে। আমি নিকট ভবিষ্যতে এই সুন্দর দেশটিতে আবারও আসতে চাই।’
মার্টিনেজ এরপর লিখেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পুলিশ বাহিনী ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে আমি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। একই সঙ্গে কৃতজ্ঞতা জানাই নাম না জানা আরও অনেককে, এই সফরে যাদের অবদান মোটেও কম নয়। বাংলাদেশের সঙ্গে আমার যে বিশেষ সম্পর্ক, আপনারা সবাই তার অংশ। আমি এই দেশে আমার হৃদয়ের একটা অংশ রেখে যাচ্ছি। পরবর্তী সফরের আগপর্যন্ত সবাইকে বিদায় জানাই। আমি বাংলাদেশের বাজপাখি হতে পেরে মুগ্ধ।’
এর আগে, ভোর ৫ টা ১০মিনিটে আর্জেন্টিনা থেকে ঢাকায় পা রাখেন মার্টিনেজ। কয়েক হাজার মাইল পথ পাড়ি দিতে ট্রানজিটও ছিল ফ্লাইটে। হল্যান্ডের আমস্টারডাম থেকে প্রায় দশ ঘণ্টা বিমান ভ্রমণ করে ভোরে ঢাকা নামেন তিনি। সব মিলিয়ে ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় ভ্রমণে ছিলেন তিনি। সফর শেষে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের ফ্লাইটে কলকাতার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়েন মার্টিনেজ।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :