যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার ২০২৩ এর জন্য ৮ টি ক্যাটাগরিতে মোট ১০ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও ২ টি প্রতিষ্ঠানকে মনোনীত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল এমপি।
তিনি বলেন, আগামী ৫ আগস্ট, ২০২৩ শনিবার সকাল ০৯.৩০ টায় রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে পুরস্কার বিজয়ীদের পুরস্কার প্রদান করবেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পুরস্কার হিসেবে প্রত্যককে একলক্ষ টাকা, ক্রেস্ট ও সম্মাননা সনদ দেওয়া হবে। তিনি আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সভাকক্ষে আয়োজিত যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক শহীদ শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন ও শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার ২০২৩ প্রদান অনুষ্ঠান উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা জানান।
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে ‘শহীদ শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার ২০২৩’ এর জন্য মনোনীতদের নাম ঘোষণা করেন।
পুরস্কার বিজয়ীরা হলেন:
১। আজীবন সম্মাননা : আবদুস সাদেক
২। খেলোয়াড়/ক্রীড়াবিদ : সাবিনা খাতুন, তাসকিন আহমেদ, জিয়ারুল ইসলাম
৩। উদীয়মান খেলোয়াড়/ক্রীড়াবিদ: মুহতাসিন আহমেদ হৃদয়, আমিরুল ইসলাম
৪। ক্রীড়া সংগঠক : মালা রানী সরকার, ফজলুল ইসলাম
৫। ক্রীড়া অ্যাসোসিয়েশন/ফেডারেশন/ক্রীড়া সংস্থা : বাংলাদেশ আরচ্যারী ফেডারেশন
৬। ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষক/স্পন্সর : বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি)
৭। ক্রীড়া সাংবাদিক : খন্দকার তারেক মোঃ নুরুল্লাহ
৮। ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার : আতাহার আলী খান
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল ছিলেন একজন স্বাপ্নিক তরুণ। বাংলাদেশের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে প্রচলিত সনাতনী ক্রীড়া-উন্নয়ন ধারনা থেকে বেরিয়ে এসে তিনি বাংলাদেশের আধূনিক ও আন্তর্জাতিকমানের ক্রীড়া প্রবর্তনে প্রয়াসী হয়েছিলেন। অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আবাহনী ক্রীড়া চক্র। ব্যক্তিগত প্রজ্ঞা ও নিজস্ব ক্রীড়া ভাবনায় এদেশে আধুনিক ফুটবলের পথিকৃৎ তিনি।
ক্রীড়ানুরাগী, সংস্কৃতিমনা, তারুণ্যদীপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল মহান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশগ্রহণ করেছেন। জাতির এ কীর্তিমান তরুণ শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের অবদানকে স্বরণীয় এবং তাঁর প্রতি গভীর শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরুপ ক্রীড়ার বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার’ প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। পুরস্কার প্রদানের ৮টি ক্ষেত্র সমূহ হচ্ছে ক) আজীবন সম্মাননা খ) খেলোয়াড়/ক্রীড়াবিদ গ) ক্রীড়া সংগঠক ঘ) উদীয়মান খেলোয়াড়/ক্রীড়াবিদ ঙ) ক্রীড়া সাংবাদিক চ) ক্রীড়া অ্যাসোসিয়েশন/ফেডারেশন/ক্রীড়া সংস্থা ছ) ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষক/স্পন্সর জ) ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ক্রীড়াঙ্গনের বিভিন্ন শাখায় অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ নীতিমালার আলোকে সংশ্লিষ্ট কমিটি কর্তৃক পুঙ্খনাপুঙ্খরুপে যাচাইবাছাই পূর্বক আমরা উপরেউল্লেখিত ৮ টি ক্যাটাগরিতে মোট ১০ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও ২ টি প্রতিষ্ঠানকে ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার’ ২০২৩ প্রদান করছি। আমি সম্মানজনক এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত সকলকে অগ্রীম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি বিশ্বাস করি এ পুরস্কার ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট সকলকে ভবিষ্যতে ক্রীড়াক্ষেত্রে আরো ভালো কাজ করতে উৎসাহ যোগাবে।
তিনি আরো বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ০৬ আগস্ট তার শাহাদাৎ বরণের মাত্র ৯দিন পূর্বে দেশের খেলোয়াড় ও তাদের পরিবারের কল্যাণার্থে ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করেন । পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন আইন, ২০১১ প্রণয়ন করেন। প্রতিষ্ঠার পর ১৯৭৫ হতে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত এ ফাউন্ডেশনের সিডমানির পরিমাণ ছিল ১,২৫,০০,০০০/- (এক কোটি পঁচিশ লক্ষ) টাকা, যা ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৭ কোটি টাকায় পৌঁছায়। আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন, বর্তমান সরকারের মেয়াদে অর্থাৎ বিগত সাড়ে চার বছরে মাদার অভ হিউম্যানিটি খ্যাত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এ ফাউন্ডেশনকে ৫০ কোটি টাকার সীডমানি প্রদান করেছেন যার ফলে বর্তমানে সিডমানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬৭,৮৫,০০,০০০/- (সাতষট্টি কোটি পঁচাশি লক্ষ) টাকা। করোনা মহামারি ও ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের ফলে সৃষ্টি বিশ্ব আর্থিক মন্দার মধ্যেও আমাদের খেলোয়াড়দের কল্যানে ৫০ কোটি টাকা সীডমানি প্রদান করায় দেশের সমগ্র ক্রীড়া পরিবারের পক্ষ থেকে ক্রীড়াবান্ধব মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অশেষ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি।
বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন হতে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর হতে ক্রীড়াক্ষেত্রে কৃতিত্ব অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের ক্রীড়া শিক্ষায় উৎসাহিত করার জন্য প্রথমবারের মতো ৫ম শ্রেণি হতে ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাসিক ১,০০০/- (এক হাজার) টাকা হারে বাৎসরিক ১২,০০০/- (বার হাজার) টাকা এবং একাদশ শ্রেণি হতে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মাসিক ২,০০০/- (দুই হাজার) টাকা হারে বাৎসরিক ২৪,০০০/- (চব্বিশ হাজার) টাকা হিসাবে মোট ৫০০ (পাঁচশত) জনকে বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া শিক্ষা বৃত্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। আগামী ৫ আগস্ট মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রথমবারের মতো প্রবর্তিত "বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া শিক্ষা বৃত্তি" প্রদান কার্যক্রমে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব ড.মহিউদ্দিন আহমেদ স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। এ সময়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (ক্রীড়া) মো: নজরুল ইসলাম, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব পরিমল সিংহসহ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :