বিশ্বকাপে ব্যাঙ্গালুরুর চিন্মাস্বামী স্টেডিয়ামে আগামীকাল অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হবে পাকিস্তান। সেই ম্যাচকে সামনে রেখে নেটে পাকিস্তানী খেলোয়াড়দের অনুশীলনের মাঝে আলাদা করে শাহিন শাহ আফ্রিদিকে চোখে পড়েছে। সবাই অনেকটা নির্ভার থাকলেও দলের পেস আক্রমনের মূল কান্ডারি শাহিনের ঘাড়েই যেন রাজ্যের বোঝা।
নেটে তাই তাকে ঘিড়েই ছিল অনুশীলনের সব আকর্ষন। বোলিং কোচ মরনে মরকেলও যেন তার মূল শিষ্যকে ফর্মে ফিরিয়ে আনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ভাইরাল জ্বরে আক্রান্ত হবার পর শাহিনের সুস্থতার খবরে স্বস্তি ফিরেছে পাক শিবিরে। কাল নেট অনুশীলনে তাই নিজেকে শতভাগ ঝালিয়ে নিয়েছেন বাঁ-হাতি এই পেসার।
প্রথমে মাঠে নামার পর শাহিনকে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই হালকা অনুশীলন করতে দেখা গেছে। পরবর্তীতে ২৩ বছর বয়সী এই পেসারকে সেন্ট্রাল নেটে ডেকে আনা হয়। ছোট রান-আপে তিনি বোলিং অনুশীলন শুরু করেন। তাকে খুব কাছে থেকে ঐ সময় পর্যবেক্ষন করেছেন মরকেল। সেশন যত গড়িয়েছে শাহিন ততই তার রান-আপ বাড়িয়েছেন, ডান হাতি ব্যাটাররাও ধীরে ধীরে সমস্যায় পড়েছেন। পরবর্তীতে শাহিন ব্যাটিংয়ের প্রস্তুতিটাও সেড়ে নিয়েছেন।
তবে পাকিস্তানের পুরো অনুশীলণ একটাই বার্তা দিয়েছে, ইনজুরিতে থাকা নাসিম শাহর অনুপস্থিতিতে বিশ্বকাপে পাকিস্তান বোলিংয়ে মূল ভরসা শাহিন শাহ আফ্রিদির উপরই করছে। এ পর্যন্ত চার ম্যাচে তিন উইকেট নিয়েছেন শাহিন। লেগ স্পিনার শাদাব খানের ৬ দশমিক ৫৫’র বিপরীতে শাহিনের ইকনোমি রেট ৬ দশমিক ৩১।
কিছুদিন আগেও নতুন বলে ব্যাটারদের ত্রাস ছিলেন শাহিন। পাওয়ার প্লেতে তার বিধ্বংসী বোলিংয়ে প্রতিপক্ষ বোলাররা বেশ হুমকিতে থাকতো। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে তার মধ্যে সেই আগ্রাসী মনোভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা। বোলিংয়ের তীক্ষœতা কমে যাবার পাশাপাশি পাকিস্তান ম্যানেজমেন্ট তার গতি নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেছে। এক নিমিষে ১৫০ কিমি গতি স্পর্শ করার ক্ষমতা রাখেন শাহিন। কিন্তু এবারের বিশ্বকাপে তিনি মাত্র ১৪০ কিমি গতি পার করতে পেরেছেন। ভারতীয় ধীর গতির উইকেটে ব্যাটাররা সহজেই তাকে প্রতিরোধ করতে পারছে। ভারতের বিপক্ষে আহমেদাবাদে অধিনায়ক রোহিত শর্মা সহজেই তাকে ফ্লিক করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি হাঁকিয়েছেন। ফ্রন্ট ফুটে এসে বিরাট কোহলি সহজ একটি কভার ড্রাইভ মেরেছেন।
শাহিন শাহ আফ্রিদির পিএসএল দল লাহোর কালান্দার্সের বোলিং কোচ ওয়াকাস আহমেদ বলেছেন, ‘তাকে একেবারেই চিন্তামুক্ত থাকতে হবে। আমি মনে করি তার মধ্যে সেই আত্মবিশ্বাস আছে। শুধুমাত্র বোলিংয়ের উপর গুরুত্ব দিয়ে নিজেকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এখন তার মূল দায়িত্ব।’
শাহিন ছাড়াও শাদাব খানের ফর্ম নিয়ে দু:শ্চিন্তায় রয়েছে পাকিস্তান। এ পর্যন্ত তিন ম্যাচে মাত্র দুই উইকেট পেয়েছেন শাদাব। মিডল ওভারে ব্যাটারদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে না পারার কারনও শাদাবের ফর্মহীনতা। এই পরিস্থিতিতে ২৭ বছর বয়সী লেগ স্পিনার উসমান মিরের ওপর আস্থা রাখতে পারে পাকিস্তান। জ্বর থেকে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠা মির ক্যারিয়ারে আট ওয়ানডেতে ১১ উইকেট নিয়েছেন।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :