ফুটবল বিশ্বের এক চিরন্তন অমীমাংসিত প্রশ্ন, সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর কখনোই মিলবার নয়। তবে ‘কালোমানিক’ খ্যাত পেলেকে ফুটবল সম্রাট বললে ভুল বলা হবে না। ক্রীড়াজগতের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র ব্রাজিলিয়ান এই কিংবদন্তি। গতবছর পরপারে পাড়ি জমানো এই ফুটবল কিংবদন্তির ৮৩তম জন্মদিন আজ।
কিংবদন্তি এই ফুটবলারের পুরো নাম এডসন অরান্তেস দো নাসিমেন্তো পেলে। বাবা মা বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনের সঙ্গে মিল রেখেই তার এমন নাম রেখেছিলেন। অবশ্য বস্তির বন্ধুরা তাকে চিনতো ডিকো নামে। ১৯৪০ সালের ২৩ অক্টোবর ব্রাজিলের সাও পাওলো শহরের ট্রেস কোরাকয়েসের এক বস্তিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন পেলে।
১৯৫৮ বিশ্বকাপেই তার বাবাকে দেয়া কথা রেখেছিলেন পেলে। মারিও জাগালো, ভাভা, দিদি, গারিঞ্চাদের সঙ্গে কিশোর পেলে ব্রাজিলকে এনে দেন তাদের প্রথম বিশ্বকাপ। ফাইনালে সুইডেনের বিপক্ষে তার গোল বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা গোল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১৯৬২ বিশ্বকাপটা জিতলেও তাতে খুব বেশি অবদান রাখা হয়নি পেলের। ইনজুরিতে মাঠের বাইরে ছিলেন বেশিরভাগ সময়। আর সত্তরে তো হাজির হয়েছিলেন ইতিহাসে সেরা দল নিয়ে। অলস্টার সেই দলে ছিলেন কার্লোস আলবার্তো, রিভেলিনো, জাইরজিনহোদের নিয়ে গড়া সেই ব্রাজিলকে একবাক্যের বিশ্বের সেরা দল মেনে নেন বোদ্ধারা। মেক্সিকোতে অনুষ্ঠিত সেই আসরেও শিরোপা জেতেন পেলে।
পেলের হাত ধরে ব্রাজিল পেয়েছে অনেক সাফল্য। তিনবার বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন দেশকে। ১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০ সালে পেলের অসাধারণ নৈপুণ্যে ব্রাজিল বিশ্বকাপ জেতে। এ ছাড়া আরো অনেক সাফল্য এনে দিয়েছেন দেশকে। ক্যারিয়ারে এক হাজার ৩৬৬ ম্যাচ খেলে গোল করেছেন এক হাজার ২৮৩টি। আর ব্রাজিলের জার্সিতে ৯২ ম্যাচে ৭৭টি গোল করেন তিনি।
অনেকে মনে করেন পেলে ইচ্ছে করেই ইউরোপের প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে যাননি। তবে বাস্তবতা একেবারেই ভিন্ন। পেলের অনন্য ফুটবলশৈলীর কথা বিবেচনায় নিয়ে তাকে জাতীয় সম্পত্তি ঘোষণা করেছিল নিজ দেশের সরকার। আশঙ্কা ছিল, ইউরোপিয়ানদের কড়া ট্যাকেলের কারণে নষ্ট হয়ে যেতে পারে তার ক্যারিয়ার।
কিংবদন্তি এই ফুটবলার পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন গত বিশ্বকাপের সময়ে। চিরবিদায়ের আগে দেখেছেন ব্রাজিলের হার। একরাশ কষ্ট নিয়েই বিদায় বলেছিলেন পৃথিবীতে।
একুশে সংবাদ/স ক
আপনার মতামত লিখুন :