বিশ্বকাপের ৩২তম ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১৯০ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে রান রেটে এগিয়ে থেকে স্বাগতিক ভারতকে টপকে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান দখল করলো প্রোটিয়ারা। অন্যদিকে, বড় হারে সেমিফাইনালের জটিল সমীকরণের মারপ্যাচে আটকে গেল ব্ল্যাকক্যাপসরা।
বুধবার (১ নভেম্বর) পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানায় নিউজিল্যান্ড। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে চার উইকেটে ৩৫৭ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। রান তাড়া করতে নেমে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ৩৫.৩ ওভারে ১৬৭ রান তুলতেই গুটিয়ে যায় কিউইরা। এতে ১৯০ রানের বড় জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে টেম্বা বাভুমার দল।
শুরুতে ব্যাট করতে নেমে খানিকটা সাবধানী শুরু করেন দুই প্রোটিয়া ওপেনার টেম্বা বাভুমা ও কুইন্টন ডি কক। টেম্বা বাভুমা আক্রমণাত্বক খেলার চেষ্টা করলেও ডি কক দেখেশুনেই ব্যাটিং করেন। দ্রুত রান তুলতে গিয়ে জুটি বড় করতে পারেননি তারা। ইনিংসের নবম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় প্রোটিয়ারা। টেন্ট্র বোল্টের লেন্থ ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন বাভুমা। এজ হয়ে বল স্লিপে থাকা ড্যারিল মিচেলের হাতে গেলে ফিরে যেতে হয় তাকে। সাউথ আফ্রিকার অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ২৪ রান।
তিনে নামা ডুসেনকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন ডি কক। তারা দু’জনে মিলে দারুণ জুটিও গড়ে তোলেন। ২০.১ ওভারে দলের শতরান পূরণ করে প্রোটিয়ারা। সেই ওভারে ৬২ বলে হাফ সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ডি কক। আরেক ব্যাটার ডাসেন হাফ সেঞ্চুরি পান ৬১ বলে। এরপর রীতিমতো তাণ্ডব চালান এই দুই ব্যাটার। মারমুখি ব্যাটিংয়ে বিশ্বকাপের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন ডি কক। ২০০ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। দলীয় ২৩৮ রানে ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ১১৬ বলে ১১৪ রান করে সাজঘরে ফিরে যান ডি কক।
এরপর উইকেটে আসা ডেভিড মিলারকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন ডুসেন। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে তিনিও সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। সেঞ্চুরির পরও মারমুখি ব্যাটিং চালিয়ে যান ডুসেন। মিলারও চড়াও হন কিউই বোলারদের ওপর। তবে দলীয় ৩১৬ রানে ৯ চার ও ৫ ছক্কায় ১১৮ বলে ১৩৩ রান করে আউট হন ডুসেন। তার বিদায়ের পর ক্রিজে আসা হেনরিখ ক্লাসেনকে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন মিলার।
ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ২৯ বলে অর্ধশতক পূরণ করেন মিলার। এরপরেই ৩০ বলে ৫৩ রান করে আউট হন মিলার। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩৫৭ রান সংগ্রহ করে প্রোটিয়ারা।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই হোঁচট খায় নিউজিল্যান্ড। দলটির হয়ে ইনিংস উদ্বোধনে নামেন ডেভন কনওয়ে ও উইল ইয়ং। ব্যাট হাতে দেখেশুনে খেলতে থাকেন এ দুই ব্যাটার।
ইনিংসের তৃতীয় ওভারের শেষ বলে কনওয়েকে সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন মার্কো জানসেন। তার বিদায়ে ক্রিজে আসেন রাচিন রবীন্দ্র। তবে ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই সাজঘরে ফিরেছন রবীন্দ্র।
এরপরই ড্রেসিংরুমের পথ ধরে উইল ইয়ং। কোয়েৎজের বলে ডি ককের তালুবন্দী হওয়ার আগে ২৯ করেন তিনি।
পরে দলের চাপ সামাল দিতে ক্রিজে আসেন কিউই দলপতি টম লাথাম। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ হয়ে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন।
উইকেটে থিতু হয়েও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি ড্যারিল মিচেল। কেশব মহারাজের ঘূর্ণিতে কাটা পড়েন তিনি। আউট হওয়ার আগে ২৪ রান করেন এ ডানহাতি ব্যাটার।
এরপর শুধু আসা-যাওয়ার মিছিলে যোগ দেন কিউই ব্যাটাররা। প্রোটিয়াদের দেওয়া লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ব্যর্থ হয়েছেন ৮ ব্যাটার। এদের কেউই দুই অঙ্কের ঘর স্পর্শ করতে পারেননি।
তবে ব্যাট হাতে শুধু হারের ব্যবধান কমিয়েছেন গ্লেন ফিলিপস। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ অর্ধ শতক তুলে নেন। এরপরই কোয়েৎজের বলে রাবাদার তালুবন্দী হন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৬০ রান করেন এ ডানহাতি ব্যাটার।
এদিন প্রোটিয়াদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট শিকার করেন কেশব মহারাজ। এছাড়াও তিনটি উইকেট নিয়েছেন মার্কে জানসেন।
একুশে সনবাদ/ড.য.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :