বাংলাদেশ কাবাডি ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনায় অনুষ্ঠিত ‘সিটি গ্রুপ নারী কাবাডি লিগ-২০২৩’ এ আজ সোমবার, ৪ ডিসেম্বর দুটি সেমিফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। তাতে নিজ নিজ খেলায় জয় পেয়ে ফাইনালে পা রাখে বাংলাদেশ পুলিশ কাবাডি ক্লাব এবং বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি কাবাডি দল। আগামীকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় ফাইনাল ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) পল্টনস্থ কাবাডি স্টেডিয়ামে দিনের প্রথম সেমিফাইনালে পুলিশের প্রতিপক্ষ ছিল উত্তরবঙ্গ কাবাডি ক্লাব।
ম্যাচে উত্তরবঙ্গ কোনো প্রতিদ্বন্দ্বতাই গড়তে পারেনি। ৪৩-১৫ পয়েন্ট ব্যবধানে উত্তরবঙ্গ কাবাডি দলকে উড়িয়ে ফাইনালের মঞ্চে পা রাখে বাংলাদেশ পুলিশ কাবাডি ক্লাব।
তবে দিনের দ্বিতীয় সেমিফাইনাল ম্যাচটি ছিল দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ। আনসার এবং মেঘনা ক্লাবের খেলোয়াড়দের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে এবং তা প্রতি পয়েন্টের জন্যই। খেলায় একবার আনসার এগিয়ে যায় তো খানিকবাদে মেঘনা ক্লাব। দারুণ উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ২৭-২৪ পয়েন্টে জিতে শিরোপার মঞ্চে পা রাখে আনসার। অথচ ম্যাচের প্রথমার্ধে ১৩-১৪ পয়েন্ট পিছিয়ে ছিল দলটি। খেলার শেষ ৫ মিনিটেও ৩ পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে ছিল মেঘনা কাবাডি দল। সেখান থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় আনসারের খেলোয়াড়রা। এর মধ্যে কয়েকবার খেলায় ছেদও পড়ে। পয়েন্ট নিয়ে রেফারিদের সঙ্গে আনসারের বাকবিতণ্ডও হয়। দু’বার খেলায় রিভিউয়ের ঘটনাও ঘটে।
তবে পয়েন্ট নিয়ে রেফারিদের সঙ্গে বিতণ্ডা হলেও দু’দলের খেলোয়াড়-কর্মকর্তাদের আচরণ সকলের প্রশংসা কুঁড়িয়েছে। গ্যালারিতে বসে দুর্দান্ত এক ম্যাচ উপভোগ করেছেন মাঠে উপস্থিত দুদলের সমর্থকরা। ম্যাচ শেষে জয়ী দলের খেলোয়াড় স্মৃতি জানান, ‘দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ ছিল। আমাদের দলে কোনো বিদেশি খেলোয়াড় ছিল না। এরপর আমরা পুরো লিগে দুর্দান্ত খেলেছি। গ্রুপপর্ব সেমিফাইনাল অপরাজিত থেকে ফাইনালে এসেছি। আশাকরি আগামীকাল ফাইনালেও আমরা সেরাটা খেলে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি ঘরে তুলব।; আনসারের কোচ শাহনাজ পারভীন মালেকা বলেন, ‘আমার মেয়েরা অনেক পরিশ্রম করেছে। ভালো খেলে তারা ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা হলো আমাদের টিমে কোনো বিদেশি খেলোয়াড় নেই। বিদেশি খেলোয়াড় ছাড়াই আমাদের দল নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে ফাইনালে উঠে এসেছে। ফাইনালে আমার দল ভালো করবে এবং অবশ্যই শিরোপা জেতার জন্যই কাল আমরা মাঠে নামব।’
আনসার-মেঘনা ক্লাবের মধ্যকার ম্যাচটি মাঠে বসে উপভোগ করেছেন বাংলাদেশ আনসারের উপমহাপরিচালক মো. জিয়াউল হাসান। ম্যাচশেষে তিনি বলেন, ‘কাবাডিতে আমাদের মেয়েরা বরাবরই ভালো খেলে। আজ সেমিফাইনালেও তারা দুর্দান্ত খেলেছে। এবারের লিগে বেশ কয়েকটা দল বিদেশি খেলোয়াড় এনেছে। আমাদের দলে বিদেশি খেলোয়াড় নেই। তারপর আমাদের মেয়েরা সেমিফাইনালসহ পুরো লিগে যেভাবে খেলেছে, তাদের জন্য আমার পক্ষ থেকে, আমাদের মহাপরিচালক মহোদয়ের পক্ষ থেকে বিশেষ ধন্যবাদ। আমাদের মহাপরিচালক মহোদয় স্যার সব সময়ই কাবাডিকে বিশেষ প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। ওনার জন্যই আমাদের দলটা এতদূর এসেছে। আশাকরি পুরো লিগে মেয়েরা যেভাবে খেলেছে ফাইনালেও ভালো খেলে দলকে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি এনে দেবে।’
ম্যাচ শেষে বাংলাদেশ আনসারের সহকারী পরিচালক (ক্রীড়া ও সংস্কৃতি) মোহাম্মদ রায়হান উদ্দীন ফকির বলেন, ‘আজ সেমিফাইনাল ম্যাচটি ছিল দারুণ উত্তেজনাপূর্ণ। আমি আত্মপ্রত্যয়ী ছিলাম আমাদের দল ফাইনালের মঞ্চে পা রাখবে। লিগ শুরুর আগ থেকেই মেয়েরা অনেক পরিশ্রম করেছে। যার ফলশ্রুতিতে আমরা ফাইনালে উঠতে সক্ষম হলাম। আশাকরি ফাইনালে আমাদের মেয়েরা নিরাশ করবে না। বিদেশি খেলোয়াড় ছাড়া ফাইনালে উঠে আসা চাট্টিখানি কথা নয়। এ সবই সম্ভব হয়েছে আমাদের মহাপরিচালক স্যার, উপ-মহাপরিচালক স্যারের যোগ্য নেতৃত্বের কারণে। আমাদের স্যাররা সব সময় মেয়েদের উৎসাহ-অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন।’
একুশে সংবাদ/স.ক.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :