বদলি স্ট্রাইকার স্যামুয়েল চুকুভেজার শেষ ভাগের গোলে নিউক্যাসলকে ২-১ ব্যবধানে পরাজিত করে ইউরোপীয়ান আসরে টিকে রয়েছে এসি মিলান। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে পরাজিত হয়ে বিদায় নিয়েছে প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব নিউক্যাসল।
যদিও এই জয়ের পরেও চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নক আউট পর্বের টিকেট পায়নি মিলান। এফ-গ্রুপের আরেক ম্যাচে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের সাথে ১-১ গোলে ড্র করায় গোল ব্যবধানে মিলানকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলতে উঠেছে পিএসজি। যে কারনে মিলানকে ইউরোপা লিগ নিয়েই আপাতত সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। ২০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলতে আসা নিউক্যাসলের বিদায়টা সুখকর হলোনা।
ইনজুরির তালিকা দীর্ঘ হওয়ায় ম্যাগপাইরা কাল মিলানের বিপক্ষে কোন প্রতিরোধ গড়তে পারেনি। এনিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় তারা টানা তিন ম্যাচে পরাজিত হলো।
নিউক্যাসল বস এডি হাউ বলেছেন, ‘আমরা আজ জয়ের জন্য সবকিছু দিয়েছি। এর থেকে বেশী আর কিছু দেবার নেই। বিশেষ করে ইনজুরির তালিকা দীর্ঘ হওয়ায় যাদের দলে পেয়েছি তাদের উপর বেশ চাপ পড়ে গিয়েছিল। দূর্ভাগ্যবশত : পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে ছিলনা। সম্ভবত এটা আমাদের সেরা পারফরমেন্স নয়। বেশীদুর যেতে না পারায় আমরা সত্যিই হতাশ।’
আগের পাঁচ ম্যাচের ১০জন খেলোয়াড় নিয়েই হাউকে মাঠে নামতে হয়েছিল। দলের শক্তিমত্তা স্বাভাবিক ভাবেই খর্ব হয়েছে স্বীকার করে নিউক্যাসল কোচ বলেছেন গ্রুপ পর্বের প্রথম দুই ম্যাচ পরই তার দল এগিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়েছিল। প্রথম ম্যাচে মিলানের সাথে গোলশুণ্য ড্র করার পর দ্বিতীয় ম্যাচে পিএসজিকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে। কিন্তু শেষ চার ম্যাচ থেকে তার দল মাত্র এক পয়েন্ট অর্জন করে গ্রæপের তলানির দল হিসেবে আসর থেকে বিদায় নেয়। নিউক্যাসল বস বলেছেন, ‘দলের মূল শক্তিমত্তা আমরা হারিয়ে ফেলেছি। বিকল্প দল নিয়ে এত বড় আসরে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। বিষয়টা খুবই হতাশার।’
মিলান শিবিরেও ইনজুরির কারনে দু:শ্চিন্তা ছিল। চাপের মধ্যে থাকা কোচ স্টিফানো পিওলি বলেছেন, ‘চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায়ের বিষয়টি দু:খজনক। আমরা জানি এই গ্রুপটা বেশ কঠিন ছিল। কিন্তু নিজেদের ওপর আস্থা ছিল। অন্য ম্যাচগুলোতে নিজেদের সুযোগ কাজে লাগানো উচিৎ ছিল।’
পিওলির দলে একমাত্র ফিট সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হিসেবে মাঠে ছিলেন ফিকায়ো টোমোরি। তার নৈপুন্যে ম্যাচের শুরুতে পিছিয়ে পড়া থেকে রক্ষা পায় মিলান। জোয়েলিনটনের ক্রসে মিগুয়েল আলমিরনের শট গোল লাইনের উপর থেকে শেষ মুহূর্তে ক্লিয়ার করেন ইংলিশ এই ডিফেন্ডার। বিরতির আগে মিলানের মধ্য মাঠের ভুলে এন্থনি গর্ডনের পাসে জোয়েলিনটন কোনাকুনি শটে নিউক্যাসলকে এগিয়ে দেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আশা টিকিয়ে রাখার জন্য নিউক্যাসলের সামনে জয়ের বিকল্প ছিলনা। একইসাথে ডর্টমুন্ডের সাথে পিএসজি যাতে এগিয়ে যেতে না পারে সেই প্রার্থনা করেছিল।
ডর্টমুন্ড এগিয়ে রয়েছে, দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে এই খবর শোনার পর সেন্ট জেমস পার্কের চেহারাই পাল্টে যায়। কিন্তু জার্মানীতে পিএসজি সমতায় ফেরার পরপরই ৫৯ মিনিটে রাফায়েল লিয়াওর ক্রস থেকে অলিভার গিরুদের পাসে ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচ মিলানকে সমতায় ফেরান। ড্র হলে কোন দলই সুবিধা পাবে না, এমন সমীকরণে উভয় দলই গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠে। ব্রæনো গুইমারায়েসের শট দারুনভাবে রুখে দেন মিলান গোলরক্ষক মাইক মেইগনান। অন্যদিকে লিওয়ার শট বারে লেগে ফেরত আসে। কিন্তু ম্যাচে শেষের ৬ মিনিট আগে আর শেষ রক্ষা হয়নি। বদলী নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার চুকুভেজার কার্লিং শট আটকানোর সাধ্য ছিল না নিউক্যাসল গোলরক্ষক মার্টিন ডুবরাভকার। স্টপেজ টাইমে থিও হার্নান্দেজ গোলের সহজ সুযোগ নষ্ট করলে ব্যবধান বাড়াতে পারেনি মিলান। এরপর কাউন্টার এ্যাটাকর থেকে টোমোরির শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :