টেস্ট এবং ওয়ানডের পর এবার নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হারের বৃত্ত ভাঙতে চায় সফরকারী বাংলাদেশ। এমন লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল নেপিয়ারের ম্যাকলিন পার্কে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটি খেলতে নামছে টাইগাররা। ম্যাচটি শুরু হকে বাংলাদেশ সময় দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে।
সদ্যই ওয়ানডেতে জয়ের সুখস্মৃতি নিয়ে নেপিয়ারের ভেন্যুতে প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নামবে বাংলাাদেশ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ৯ উইকেটে বড় ব্যবধানে হারায় টাইগাররা। এতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে প্রথম ওয়ানডে জয়ের দেখা পায় শান্ত-লিটনরা। বাংলাদেশের জয়ে ঘরের মাঠে ওয়ানডে ফরম্যাটে নিউজিল্যান্ডের টানা ১৭ ম্যাচ অপরাজিত থাকার রেকর্ডের সমাপ্তি ঘটে।
ঐতিহাসিক জয়ের ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে মাত্র ৯৮ রানে গুটিয়ে দেয় বাংলাদেশ। এমন দুর্দান্ত পারফরমেন্সের কারণেই প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি জয়ে আত্মবিশ^াসী বাংলাদেশ।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী নিউজিল্যান্ডের মাটিতে টানা নয় টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ হারলেও, শেষ ওয়ানডেতে বাজে পারফরমেন্সের কারনে ব্যাকফুটে থাকবে কিউইরা। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১৭ ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে দু’দল। এরমধ্যে নিউজিল্যান্ডের জয় ১৪টি এবং বাংলাদেশের জয় মাত্র ৩টিতে।
চলতি বছর এ পর্যন্ত তিনটি সিরিজ খেলে সবগুলোতেই জিতেছে টাইগাররা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ জিততে পারলে এ বছর সংক্ষিপ্ত ভার্সনে অপরাজিত রাখবে টাইগাররা। যা দেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এক অবিস্মরনীয় নজির হয়ে থাকবে।
গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভরাডুবির পর, এ বছরের মার্চে ঘরের মাঠে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে শক্তিশালী ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। এরপর আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে এবং আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় টাইগাররা।
ঘরের মাঠেই তিনটি সিরিজ জিতেছিলো বাংলাদেশ। এবার নিউজিল্যান্ডের কন্ডিশনে খেলতে হবে টাইগারদের। পরবর্তী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের খুব বেশি দেরি না থাকায় এই ফরম্যাটে টাইগারদের অগ্রগতি পরীক্ষার জন্য নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
চিকিৎসকদের পরামর্শ এবং আসন্ন ব্যস্ত সূচি বিবেচনায় দলের নিয়মিত অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন এবং পেসার কাইল জেমিসনকে বিশ্রাম দেওয়ায় কিছুটা দুর্বলতা নিয়েই মাঠে নামবে নিউজিল্যান্ড।
এক বিবৃতিতে নিউজিল্যান্ডের কোচ গ্যারি স্টিড বলেন, ‘আমরা চাই কেন এবং কাইল, দু’জনই দক্ষিণ আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের জন্য নিজেদের প্রস্তত করে সেরা অবস্থায় থাকুক। মেডিকেল স্টাফ এবং সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড়ের সাথে আলোচনার পর তাদের জন্য পুনর্বাসন ও কন্ডিশনিংই সেরা উপায় বলে মনে করা হচ্ছে।’
উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতিতে এই সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিবেন মিচেল স্যান্টনার।
দুই অভিজ্ঞ খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতি কিছুটা হলেও সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। কিন্তু তাদের ছাড়াও নিজেদের কন্ডিশনে শক্তিশালী দল নিউজিল্যান্ড।
বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, ‘ওয়ানডেতে হারের বৃত্ত ভাঙ্গার পর টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী। টি-টোয়েন্টি ভিন্ন ফরম্যাট, এজন্য আমরা সেভাবেই পরিকল্পনা করবো।’
অধিনায়ক হিসেবে ইতোমধ্যে নিজের দক্ষতার প্রমান দিয়েছেন শান্ত। শক্তিশালী দলের বিপক্ষে ওয়ানডে এবং টেস্ট ফরম্যাটে জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। এবার প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিবেন এবং এই ফরম্যাটের সাফল্য পাওয়ার সুযোগ তার সামনে।
বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মেহেদি হাসান মিরাজ (সহ-অধিনায়ক), লিটন দাস, রনি তালুকদার, তাওহিদ হৃদয়, শামিম হোসেন, আফিফ হোসেন, সৌম্য সরকার, মাহেদি হাসান, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, শরিফুল হাসান, রিশাদ হোসেন, তানভির ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিব।
নিউজিল্যান্ড দল : মিচেল স্যান্টনার (অধিনায়ক), ফিন অ্যালেন, মার্ক চ্যাপম্যান, রাচীন রবীন্দ্র, জ্যাকব ডাফি, এডাম মিলনে, ড্যারিল মিচেল, জেমস নিশাম, গেøন ফিলিপস, বেন সিয়ার্স, টিম সাইফার্ট, ইশ সোধি ও টিম সাউদি।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :