মেলবোর্ন টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৭৯ রানে হেরে সিরিজও হাতছাড়া হয়েছে পাকিস্তানের। ম্যাচের জয়-পরাজয় ছাপিয়ে আলোচনার তুঙ্গে মোহাম্মদ রিজওয়ানের বিতর্কিত আউট। সফকারীদের মতে, পাকিস্তানি উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানকে এমন বিতর্কিত আউট না দেওয়া হলে ম্যাচের ফল ভিন্ন হতে পারত।
দলটির পরিচালক ও কোচ মোহাম্মদ হাফিজ এ নিয়ে ক্ষোভও ঝেড়েছেন ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে। তিনি জানিয়েছেন, রিজওয়ানের আউট নিয়ে আইসিসির কাছে বিচার দেবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)।
মেলবোর্ন টেস্টের চতুর্থ দিনে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৩১৭ রানের লক্ষ্যে চতুর্থ ইনিংসে জয় থেকে ৯৮ রান দূরে ছিল পাকিস্তান। উইকেটে স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করছিলেন রিজওয়ান ও আগা সালমান। সফরকারীদের হাতে তখনো পাঁচ উইকেট।
এমন সময় অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের একটি দুর্দান্ত ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে আউট হন রিজওয়ান। এর পরই ধস নামে সফরকারীদের লোয়ারঅর্ডারে। শেষ চার ব্যাটসম্যান রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে গেছেন সাজঘরে। কেবল সালমানের কল্যাণে পাকিস্তানের স্কোরবোর্ডে আরও ১৮ রান যোগ হয়। পাকিস্তান গুটিয়ে যায় ২৩৭ রানে।
ম্যাচের গতিপথ বদলে যায় রিজওয়ানের আউটের পরেই। শুরুতে মাঠ আম্পায়ার এটিকে আউট দেননি। প্যাট কামিন্স রিভিউ নিলে টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, বলটি রিজওয়ানের গ্লাভসের রিস্টব্যান্ডে লেগেছে। টিভি আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ এটিকে আউট হিসেবে ঘোষণা দেন। এমন সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট রিজওয়ানকে মাঠ আম্পায়ার জোয়েল উইলসনের সঙ্গেও কথা বলতে দেখা গেছে।
রিজওয়ানের আউট নিয়ে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়ে পাকিস্তান দলে। পিসিবির চেয়ারম্যান জাকা আশরাফ এ নিয়ে কথাও বলেছেন হাফিজের সঙ্গে। পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস জানাচ্ছে, ম্যাচের আম্পায়ারিং ও প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হাফিজ। পিসিবি এ ইস্যুতে নিয়ে আইসিসির সঙ্গে কথা বলবে।
সংবাদ সম্মেলনে হাফিজ বলেছেন, ‘আপনি যদি পুরো ম্যাচ দেখেন, দেখবেন আম্পায়ারের অনেক সিদ্ধান্তে অসঙ্গতি ছিল। আমরা যারা ক্রিকেট খেলি, খেলার নিয়মগুলো স্বভাবজাতভাবে আমাদের জানা।’
ম্যাচের পর রিজওয়ানের সঙ্গে কথা বলেছেন হাফিজ। পাকিস্তান উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান হাফিজকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানিয়েছেন, বল তার গ্লাভস স্পর্শ করেনি। আর পাকিস্তান কোচের যুক্তি, মাঠের আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করতে প্রয়োজনীয় প্রমাণ থাকতে হয়।
ম্যাচে ব্যবহৃত প্রযুক্তি নিয়ে তাঁর ভাষ্য, ‘যাইহোক, মাঝে মধ্যে মনে হয়, মাঠের ক্রিকেটের চেয়ে প্রযুক্তিতে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি, এটি ব্যবহারে সমস্যাগুলো খুঁজে বের করা দরকার।’ ক্রিকেটে স্বচ্ছতার ওপর জোর দিতে বলেছেন হাফিজ। পাকিস্তান কোচের মতে, প্রযুক্তি সবকিছু সামনে এনে দিচ্ছে। কিন্তু এ ধরনের বিভ্রান্তি বা সন্দেহজনক পরিস্থিতি এটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।
তাই বলে ক্রিকেটে প্রযুক্তি ব্যবহারের বিপক্ষে নন তিনি, সেটাও জানালেন হাফিজ, ‘আমি খেলায় প্রযুক্তি ব্যবহারের বিপক্ষে নই। কিন্তু এটা বিভ্রান্তি ও সন্দেহ তৈরি করে, যা মেনে নেওয়া যায় না।’
শুধু প্রযুক্তি নয়, ক্রিকেটের অনেক নিয়মকে নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন পাকিস্তান কোচ, ‘কিছু সিদ্ধান্ত আমার বোধগম্য নয়। বল স্ট্যাম্পে আঘাত করলে সেটা আউট। কিন্তু আমার বুঝে আসে না, তাহলে আম্পায়ারস কলের দরকারটা কী।’
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :