১৯ বছর বয়সী আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার আলেহান্দ্রো গারাঞ্চোর আদায় করা দুই পেনাল্টিতে গোল নিশ্চিত করে শনিবার এভারটনকে ২-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। ওল্ড ট্রাফোর্ডের ম্যাচ শেষে গারাঞ্চোর অবদানের ভূয়শী প্রশংসা করেছেন ইউনাইটেড বস এরিক টেন হাগ।
ব্রুনো ফার্নান্দেস ও মার্কাস রাশফোর্ড স্পট কিক থেকে গোল করে ইউনাইটেডের জয় নিশ্চিত করেন। পাশাপাশি এই জয়ে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের স্বপ্ন টিকে থাকলো রেড ডেভিলসদের। এই জয়ে টেন হাগের দল চতুর্থ স্থানে থাকা এ্যাস্টন ভিলার সাথে আট ও পঞ্চম স্থানে থাকা টটেনহ্যামের সাথে থকে পয়েন্টের ব্যবধান তিনে নামিয়ে এনেছে।
এর আগে এই দুই দল যখন নভেম্বরে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল তখন গারাঞ্চোর দুর্দান্ত ওভারহেড কিকে জয়ী হয়েছিল ইউনাইটেড। আরো একবার এই আর্জেন্টাইন দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দিলেন। তার আদায় করা পেনাল্টিতে গুরুত্বপূর্ণ জয় নিশ্চিত হয় ইউনাইটেডের।
ম্যাচ শেষে টেন হাগ বলেছেন, ‘গারাঞ্চোর বেশ ভাল উন্নতি হচ্ছে। আমরা সবাই দারুন সন্তুষ্ট। আজ আবারো তার অবদান আমাদেরকে জয় উপহার দিয়েছে। যখন সে এই ধরনের ম্যাচ খেলে তখন পরের ম্যাচেও সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করে। এটা তার অনেক বড় একটি গুন।’
টেন হাগের জন্য কঠিন দ্বিতীয় মৌসুমে ইউনাইটেডের হয়ে স্বল্প কিছু ইতিবাচক অর্জনের মধ্যে গারাঞ্চো অন্যতম। ফুলহ্যাম ও ম্যানচেস্টার সিটির কাছে পরপর দুই ম্যাচে পরাজিত ইউনাইটেডের জন্য শীর্ষ চারে টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এখনো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের লড়াইয়ে ভালভাবেই টিকে থাকলো রেড ডেভিলসরা। টেন হাগ আরো বলেন, ‘এ বছর ফুলহ্যামের সাথে আমাদের একটি খারাপ ফলাফল হয়েছে। এখন সেটা কাটিয়ে আমাদের সঠিক পথে থাকতে হবে এবং আমাদের উপরে যে দলগুলো রয়েছে তাতে প্রতিনিয়ত চাপে রাখতে হবে। এখনো বেশ কিছু ম্যাচ বাকি। আমরা আবারো লড়াইয়ে ফিরে এসেছি। এখন এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। দেখা যাক শেষ পর্যন্ত কি হয়।’
এদিকে এই পরাজয়ে এভারটন প্রিমিয়ার লিগে ১১ ম্যাচে জয়বিহীন থাকলো। যদিও এখনো টফিসরা রেলিগেশন জোন থেকে পাঁচ পয়েন্ট উপরে রয়েছে।
পুরো মৌসুমে এভারটন গোলের অভাবে ভুগেছে। আর এটা সাম্প্রতিক সময়ে তাদের নিয়মিত ব্যর্থতায় পরিণত হয়েছে। কাল ২৩টি শট টার্গেটে নিলেও একটিও জালে প্রবেশ করাতে পারেনি। এভারটন বস সিন ডায়চে বলেছেন, ‘আমি কখনই এমন পরিস্থিতিতে পড়িনি। সকলের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি আমি এই দলটির কোচ, এত সুযোগ তৈরী করেও যারা গোল পায়না। যেকোন ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিসংখ্যান হচ্ছে ফাইনাল স্কোরলাইন। আমাদের এই দিকটি নিয়ে কাজ করতে হবে। প্রতি ম্যাচে একই বিষয় হতে পারেনা।’
ম্যাচের ১০ মিনিট গারাঞ্চো এভারটন ডিফেন্ডার জেমস টারকোস্কির বিপক্ষে পেনাল্টি আদায় করে নেন। স্পট কিক থেকে ফার্নান্দেস ইউনাইটেডকে এগিয়ে দিতে কোন ভুল করেননি। মৌসুমে এটি ফার্নান্দেসের অষ্টম গোল। এরপর বেশ কিছু গোলের সুযোগ তৈরী করেছে গারাঞ্চো। তারই ধারাবাহিকতায় এবার তাকে আটকাতে গিয়ে ফাউল করে বসেন বেন গডফ্রে। এবারের মৌসুমে আগের ম্যাচে গুডিসন পার্কের মতই ফার্নান্দেস পেনাল্টির দায়িত্ব তুলে দেন রাশফোর্ডের কাঁধে। ইংল্যান্ড জাতীয় দলের সতীর্থ রাশফোর্ডের শক্তিশালী শট আটকানোর সাধ্য ছিলনা জর্ডান পিকফোর্ডের। ব্যবধান দ্বিগুন করা রাশফোর্ডের এই গোলটি ছিল প্রিমিয়ার লিগের নয় ম্যাচে পঞ্চম গোল। এরপর দুইবার ফার্নান্দেসকে হতাশ করে এভারটনকে রক্ষা করেছেন পিকফোর্ড। প্রথমে ফার্নান্দেসের ফ্রি-কিক এরপর তার লো ড্রাইভ রুখে দেন পিকফোর্ড।
দুই পেনাল্টি আদায়ে সফল হলেও নিজে বেশ কিছু গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে স্কোরশিটে নাম লেখাতে পারেনি গারাঞ্চো।এনিয়ে এবারের মৌসুমে ২৮ লিগ ম্যাচে ১৬ বার ইউনাইটেড প্রতিপক্ষের ১৬ কিংবা তার বেশী শট প্রতিহত করেছে। এবারই প্রথমবারের মত কোন গোল হজম করেনি।
স্টপেজ টাইমে ইউনাইটেড তৃতীয় পেনাল্টি প্রায় পেয়েই গিয়েছিল। জেরার্ড ব্র্যান্টওয়েইট ডি বক্সের মধ্যে রাশফোর্ডকে ফাউল করলেও অফসাইডের কারনে এ যাত্রা রক্ষা পায় সফরকারীরা।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :