জেডন সানচো ও মার্কো রেয়াসের গোলে পিএসভিকে শেষ ষোলর দ্বিতীয় লেগে ২-০ গোলে পরাজিত করে দুই লেগ মিলিয়ে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করেছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড।
নেদারল্যান্ডে প্রথম লেগের ম্যাচটি ১-১ গোলে ড্র ছিল। জয়ের নেশায় ঘরের মাঠ সিগন্যাল ইডুনা পার্কে মাঠে নামা ডর্টমুন্ডের হয়ে সানচো কোন সময় নষ্ট করেননি। ডি বক্সের বাইরে থেকে লো শটে তিনি ডর্টমুন্ডকে এগিয়ে দেন। ২০২১ সালের নভেম্বরের পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটি সানচোর প্রথম গোল। ম্যাচের তিন মিনিটে লিড নেবার পর ডর্টমুন্ডকে খুব একটা স্বস্তিতে খেলতে দেখা যায়নি। পিএসভি এর মধ্যে কিছু সুযোগ নষ্ট করেছে। ৫৩ মিনিটে হার্ভিং লোজানোর শট পোস্টে লাগলে হতাশ হতে হয় ডাচ জায়ান্টদের। স্টপেজ টাইমেও সমতায় ফেরার সুযোগ পেয়েছিল পিএসভি। কিন্তু তার পরিবর্তে আরো এক গোল হজম করে বসে। ইসাক বাবাডির দূর্ভাগ্যজনক ভাবে পড়ে যাওয়া রেয়াসকে গোলের সুযোগ করে দেয়।
ডর্টমুন্ড গোলরক্ষক গ্রিগর কোবেল বলেছেন, ‘এটা সত্যিই দারুন এক অনুভূতি। প্রথম ৩০ মিনিট আমরা তাদেরকে কোন নি:শ্বাস নিতে দেইনি। পরের রাউন্ডে বড় প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করতে আমি মুখিয়ে আছি।’
পিএসভিকে সহজেই পরাজিত করেছে ১৯৯৭ সালের বিজয়ী ডর্টমুন্ড । কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে বড় পরীক্ষার মুখে পড়তে যাচ্ছে। ২০২১ সালের পর আবারো শেষ আটের টিকেট পেয়েছে জার্মান জায়ান্টরা।
ডর্টমুন্ড কোচ এডিন টারজিক বলেছেন, ‘প্রথমার্ধ নিয়ে আমি দারুন খুশী। যদিও দ্বিতীয়ার্ধে নিজেদের মেলে ধরতে পারিনি। কিন্তু দিনের শেষে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলা দারুন স্বস্তির। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য পূরণ হয়েছে।’
পিএসভি ম্যাচে বেশ কিছু সুযোগ নষ্ট করে নিজেদের দূর্ভাগ্য নিজেরাই লিখেছে। ইনজুরি টাইমে ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন লুক ডি জং। ২০১৭ সালে মাত্র ছয় মাসের জন্য ডর্টমুন্ডে হতাশাজনক সময় কাটিয়েছেন পিএসভি বস পিটার বজ। কাল ম্যাচ শেষে বজ বলেন, ‘ম্যাচটি আমাদের আয়ত্বের মধ্যেই ছিল। কিন্তু গোল করতে ব্যর্থ হওয়ায় শেষ পর্যন্ত আর পেরে উঠিনি। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ সর্বোচ্চ পর্যায়ের খেলা। আমরা সত্যিই হতাশ।’
বুন্দেসলিগায় জাভি আলনসোর বায়ার লেভারকুজেনের চেয়ে ২০ পয়েন্ট পিছিয়ে টেবিলের চতুর্থ স্থানে রয়েছে ডর্টমুন্ড। ইতোমধ্যে জার্মান কাপ থেকেও বিদায় নিয়েছে দলটি। যে কারনে চ্যাম্পিয়ন্স লিগই একমাত্র ভরসা হিসেবে তাদের সামনে টিকে রয়েছে। ঘরোয়া আসরে হতাশাজনক পারফরমেন্সের পর ইউরোপে শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছে ডর্টমুন্ড।গ্রুপ পর্বে তারা পিএসজি, এসি মিলান ও নিইক্যাসলকে পরাজিত করে নক আউট পর্বে উঠেছিল।
অন্যদিকে ডাচ লিগে এই মুহূর্তে শীর্ষে থাকা পিএসভি ২০১৮ সালের পর প্রথম লিগ শিরোপা জয়ের স্বপ্নে এগিয়ে চলেছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফেইনুর্ড থেকে তারা ১০ পয়েন্ট এগিয়ে রয়েছে।
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে জানুয়ারিতে ধারে জার্মানীতে খেলতে আসার পর সানচোর এটাই প্রথম গোল। জুলিয়ান ব্র্যান্ডেটের পাস থেকে ৩ মিনিটে কোনাকুনি শটে তিনি স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন। এই গোলেই মূলত ডর্টমুন্ড জয়ের সুবাতাস পেয়ে যায়। ব্রান্ডেট ও পিএসভির সাবেক উইঙ্গার ডনিয়েল মালেনের দুটি শট সফরকারী গোলরক্ষক ওয়াল্টার বেনিটেজ দুর্দান্ত দক্ষতায় রুখে দেন।
বিরতির পর পিএসভি কিছুটা আগ্রাসী হয়ে উঠে। বদলী বেঞ্চ থেকে উঠে আসা লোজানোর শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। একের পর এক আক্রমন করলেও গোল করতে ব্যর্থ হওয়ায় এগিয়ে যাওয়া হয়নি পিএসভির। দুটি ভাল সুযোগ হাতছাড়া করেছেন ডি জং। ম্যাচ শেষে ১৫ মিনিট আগে উরুর ইনজুরির কারনে সানচোর পরিবর্তে মাঠে নামেন রেয়াস। ডর্টমুন্ডের এই অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার স্টপেজ টাইমের পঞ্চম মিনিটে গুরুত্বপূর্ণ গোলটি করেছেন। এর আগে নিকলাস ফুয়েলক্রুগের গোল অল্পের জন্য অফসাইডের কারনে বাতিল হয়ে যায়।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :