আইপিএল শুরুর মাসে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হওয়া সত্ত্বেও, কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) অধিনায়ক শ্রেয়স আইয়ার যে কোনও নেতিবাচক চিন্তাভাবনাকে দূরে সরিয়ে রাখতে চান। সামনে যে সুযোগ রয়েছে, তাতে মনোনিবেশ করতে বদ্ধপরিকর।
রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ খেলতে আগ্রহ না দেখানোর কারণে বিসিসিআই-এর কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয় শ্রেয়স আইয়ারকে। সেই সঙ্গে পিঠের বারংবার চোটের সঙ্গে লড়াই করতে হয়েছে তাকে। তা সত্ত্বেও মুম্বাইয়ের হয়ে ফাইনালে ৯৫ রানের একটি দুরন্ত ইনিংস খেলেন শ্রেয়স। যদিও ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমি (এনসিএ) তাকে আইপিএলে অংশগ্রহণের ছাড়পত্র দিয়েছে। কেকেআর অধিনায়ক অবশ্য তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে আত্মবিশ্বাসী এবং মাঠে তার সেরাটা দিতে বদ্ধপরিকর।
কলকাতায় সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে কেকেআর-এর প্রথম ম্যাচে শ্রেয়স সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘ডাক্তার কী বলেছেন, চোটটি কী ছিল, তা নিয়ে আমি ভাবতে চাই না। কারণ আমি আগেই বলেছি, আপনি যখন অতিরিক্ত চিন্তা করেন, তখন চোটের দিকে আপনার মনোযোগ বেড়ে যায় এবং সেই মুহুর্তে, আপনি কী করতে চলেছেন, সেটা ভুলে যান। আমি সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছি। সুতরাং আমি এই সমস্ত জিনিসগুলিকে একপাশে সরিয়ে রেখে, প্লেটে আমার জন্য কী আছে, তার উপর ফোকাস করতে চাই।’
ব্যক্তিগত ভাবে তিনি মনে করেন যে, এই টুর্নামেন্টে ভালো জায়গায় আছেন তিনি। তার দাবি, ‘আমি সম্ভাব্য সব বক্সগুলিতে টিক দিয়েছি। তাই আমি আত্মবিশ্বাসী। এই মুহুর্তে আমি যদি নিজের দিকে তাকাই, আমি অনুভব করছি যে, সম্ভাব্য সেরা ফর্মে রয়েছি। আমি এত বছর আইপিএল খেলেছি, তাই এমন নয় যে, আমি এটি থেকে সম্পূর্ণ দূরে ছিলাম। ব্যক্তিগত ভাবে, আমার প্রস্তুতি শীর্ষস্থানীয়ই ছিল।’
গত বছর চোটের কারণে আইপিএলে খেলা হয়নি। এই মৌসুমে আইপিএল শুরুর আগেই একাধিক বিতর্ক। যে কারণে তাঁর নিজেকে ব্যাটার এবং অধিনায়ক হিসেবে প্রমাণ করাটা জরুরি। তাই এবার বড় চ্যালেঞ্জের সামনে শ্রেয়স। বলেওছেন, ‘আমি নিয়মিত অনুশীলন করছি। আমি বল মারছি এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য ব্যাটিং করছি। তাই বলতেই পারি, আমি উন্নতি করছি।’
সঙ্গে তিনি যোগ করেছেন, ‘আমি আইপিএল জেতার অপেক্ষায় রয়েছি। আপনি যদি কোনও অধিনায়ককে জিজ্ঞেস করেন, তাদেরও একই মানসিকতা থাকবে। আর সেই কারণেই আপনাকে যতটা সম্ভব বর্তমানের মধ্যে থাকতে হবে। আপনি যদি অতীত বা ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করেন, আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করি, এতে ভুল করার সম্ভাবনা বাড়বে। তাই সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি এটাই শিখেছি, আপনার হাতে যা কিছু আছে, আপনাকে সেরাটা দিতে হবে। এর বাইরে সিদ্ধান্ত নেওয়া আপনার হাতে নয়। এবং আপনি যত বেশি এই সব নিয়ে ভাববেন, তত বেশি ভুলের মধ্যে লিপ্ত হবেন।’
এই মৌসুমে কেকেআর-কে দু`বার আইপিএল শিরোপা জেতানো অধিনায়ক গৌতম গম্ভীর মেন্টর হিসেবে যোগ দিয়েছেন। এবার গম্ভীরের নতুন ভূমিকা, লক্ষ্য একটাই। গম্ভীর প্রসঙ্গে শ্রেয়স বলেছেন, ‘ও অনেক ইনপুট দিয়েছে। কৌশলগত ভাবে পরিষ্কার ভাবনা রয়েছে। দু`টি আইপিএল জিতিয়েছে। ভেন্যু এবং প্রতিপক্ষ দল সম্পর্কে ও অনেক কিছু জানে। চান্দু স্যার (প্রধান কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত) এবং গৌতম স্যার অনেক ইনপুট দেয়, যখন আমি ওদের সাথে কথা বলি বা অনুশীলন করি।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘আমি এর আগে ওর (গৌতম গম্ভীর) একটি ভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজিতে (দিল্লি) কাজ করেছি এবং আমি জানি, ওর মানসিকতা কী। ও একজন নির্ভীক লোক এবং ও আপনাকে একজন অধিনায়ক এবং একজন খেলোয়াড় হিসেবে অনেক স্বাধীনতা দেয়। সুতরাং, আমি ওর অধীনে খেলতে পেরে সম্মানিত এবং এটি দলের অন্যান্য খেলোয়াড়দের জন্যও ভালো বিষয়। স্বাধীন ভাবে নিজেকে প্রকাশ করার সুযোগ দেয়। সত্যি কথা বলতে গেলে, ছেলেরা সকলেই আত্মবিশ্বাসী। আমার জন্য, বিশেষ করে এক বছর পর দলে ফিরে আসাটা দারুণ আনন্দ দিচ্ছে।’
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :