কোল পালমারের চার গোলে সোমবার এভারটনকে প্রিমিয়ার লিগে ৬-০ ব্যবধানে বিধ্বস্ত করেছে চেলসি। ব্লুজদের হতাশাজনক মৌসুমে ইংলিশ এই তারকাই একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করেছেন। এই মুহূর্তে ম্যানচেস্টার সিটি স্ট্রাইকার আর্লিং হালান্ডের সাথে প্রিমিয়ার লিগে সমান ২০ গোল করে গোল্ডেন বুটের দৌড়ে বেশ খানিকটা এগিয়ে গেছেন পালমার। প্রথমার্ধের ৩০ মিনিটের মধ্যে হ্যাটট্রিক পূরন করে পালমার কার্যত ম্যাচটিকে একপেশে করে তোলেন। বিরতির আগে নিকোলাস জ্যাকসনও স্কোরশিটে নাম লিখিয়েছেন। কিন্তু তারপরও চেলসির গোলের নেশা কাটেনি। পেনাল্টি স্পট থেকে পালমার নিজের চতুর্থ গোল করার পর শেষ মিনিটে ডিফেন্ডার আলফি গিলক্রিস্ট চেলসিকে বড় জয় উপহার দিয়েছেন।
এটাই চেলসি বস হিসেবে মরিসিও পোচেত্তিনোর সবচেয়ে বড় জয়। ম্যাচ শেষে পোচেত্তিনো বলেছেন, ‘আমরা এতটা প্রত্যাশা করিনি। এভাবে ম্যাচ জয় সবসময়ই গর্বের।’
প্রিমিয়ার লিগে এনিয়ে আট ম্যাচে অপরাজিত রয়েছে চেলসি। কিন্তু তারপরও তাদের অবস্থান টেবিলের নয় নম্বরে। যদিও ষষ্ঠ স্থানে থাকা নিউক্যাসলের থেকে তারা মাত্র তিন পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে। হাতে এক ম্যাচ বেশী রয়েছে। শনিবার এফএ কাপের সেমিফাইনালে সিটির বিপক্ষে মাঠে নামবে চেলসি। সিটিকে টানা দ্বিতীয় ট্রেবল জয়ের উৎসব থেকে বঞ্চিত করতে আত্মবিশ^াসী চেলসি। এ সম্পর্কে পোচেত্তিনো বলেছেন, ‘এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ধারাবাহিক ভাবে একটি দল হিসেবে নিজেদের গড়ে তোলা। পুরো মৌসুমে আমরা খুব বেশী ধারাবাহিক ছিলাম না। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের দ্রæত তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’
হতাশাজন এই পরাজয় সত্তে¡ও এখনো এভারটন রেলিগেশন জোন থেকে দুই পয়েন্ট উপরে রয়েছে। রোববার পরবর্তী ম্যাচে গুডিসন পার্ক সফরে যাবে নটিংহ্যাম ফরেস্ট। ৭০ বছর ধরে প্রিমিয়ার লিগে জায়গা ধরে রাখার পথটা আরো কিছুটা সমৃদ্ধ করতে এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই সিন ডায়চের দলের।
এভারটন ডিফেন্ডার জেমন টারকোভস্কি বলেছেন, ‘এই মুহূর্তটা আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে অস্বস্তিকর একটি মুহূর্ত। ফুটবল ইতিহাসে এই ক্লাবটির এতটা বিপর্যয় এর আগে কখনো দেখিনি।’
স্ট্যামফোর্ড ব্রীজে কাল ম্যাচ শুরুর আগেই দু:সংবাদ পায় সফরকারী এভারটন। হ্যামস্ট্রি ইনজুরিতে পড়ে মাঠের বাইরে ছিটকে যান দলের নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় ডোমিনিক কালভার্ট-লুইন। তার ডেপুটি বেটো গোলের দারুন সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু সিমাস কোলম্যানের ক্রস তিনি ঠিকমত নিয়ন্ত্রনে নিতে পারেননি। বিপরীতে আরো একবার পালমার প্রমান করেছেন এ মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে তিনিই ফেবারিট। ২১ বছর বয়সী এই ইংলিশ ফরোয়ার্ডকে ছেড়ে দিয়ে সিটি হয়তো আরো একবার আফসোস করবে। ১৩ মিনিটে জ্যাকসনের সাথে বল আদান প্রদান করে দারুন এক ফিনিশিংয়ে চেলসিকে এগিয়ে দেন পালমার। ইনজুরির কারনে এনজো ফার্নান্দেজ কাল অনুপস্থিত ছিলেন। যে কারনে প্রথমবারের মত ট্রিস্টান মাদুয়েকে ও মিখাইলো মাড্রিকের সাথে পালমার ও জ্যাকসনকে একসাথে মূল দলে খেলিয়েছেন পোচেত্তিনো। আক্রমনভাগের এই চারজনকে সামলাতে এভারটনকে শুরু থেকেই হিমশিম খেতে হয়েছে। মাড্রিকের ক্রস থেকে জ্যাকসনের শট আটকে দেন জর্ডান পিকফোর্ড।
কিন্তু ফিরতি বল সহজেই জালে জড়িয়ে ১৮ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন পালমার। ২৯ মিনিটে পিকফোর্ডের মাথার উপর বল জালে পাঠিয়ে হ্যাটট্রিক পূরণ করেন পালমার। চেলসির হয়ে প্রথম মৌসুমে অনেকটাই ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগতে থাকা জ্যাকসন বিরতির ঠিক আগে দলের হয়ে চতুর্থ গোল করেছে। মৌসুমে এটি তার ১৩ গোল। ৬৪ মিনিটে পেনাল্টি স্পট থেকে পালমার দলের হয়ে পঞ্চম গোল করেন। চেলসির হয়ে সাধারানত পেনাল্টি শট নিয়ে থাকেন মাদুয়েকে ও জ্যাকসন। কিন্তু গতকাল তারা এই দায়িত্ব পালমারের উপর ছেড়ে দেন। এবারের মৌসুমে স্পট কিক থেকে নয়টি শটে নয়টি গোলই করেছেন পালমার। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে মাঠে নামা একাডেমি গ্র্যাজুয়েট আলফি গিলক্রিস্ট ৯০ মিনিটে দলের হয়ে ষষ্ঠ গোলটি করেছেন।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :