রোববার লিঁওর কাছে মোনাকোর ৩-২ গোলের পরাজয়ে লিগ ওয়ানের শিরোপা নিশ্চিত হয়েছে পিএসজির।মোনাকোর এই পরাজয়ে পিএসজি ১২ পয়েন্টের সুষ্পষ্ট ব্যবধানে টেবিলের শীর্ষস্থান নিশ্চিত করেছে। মৌসুম শেষ হতে আর মাত্র তিন ম্যাচ বাকি। এর মাধ্যমে রেকর্ড ১২ বারের মত ফরাসি শিরোপা ঘরে তুললো প্যারিসের জায়ান্টরা।
ধুকতে থাকা লে হাভরের বিপক্ষে গতকাল ঘরের মাঠে জিততে পারলেই পিএসজির শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যেত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দুই গোলে পিছিয়ে থেকে যোগ হওয়া সময়ের গোলে কোনমতে ৩-৩ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে লুইস এনরিকের দল। যদিও ঐ ম্যাচের পরপরই এনরিকে বলেছিলেন আমাদের লিগ শিরোপা নিশ্চিত হয়ে গেছে, এতে কোন সন্দেহ নেই। যেহেতু ১২ পয়েন্টে পিএসজি এগিয়ে ছিল, আর ১২ পয়েন্টের খেলা বাকি ছিল, এছাড়া মোনাকোর থেকে গোল ব্যবধানেও অনেকটাই এগিয়ে ছিল পিএসজি।
যদিও মোনাকোর এই পরাজয়ে এখনই লিগ শিরোপা জয় উদযাপন করতে চাইছে না পিএসজি। বুধবার বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটিকে ঘিড়ে এখন তাদের সব গুরুত্ব।
লিঁওর গ্রুপামা স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরুর প্রথম মিনিটেই লিড নিয়েছিল মোনাকো। উইসাম বেন ইয়েডার সফরকারীদের এগিয়ে দেন। এরপর স্বাগতিকদের হয়ে সমতা ফেরান আলেক্সান্দ্রে লাকাজেত্তে। ২৬ মিনিটে সাইদ বেনরাহমার গোলে এগিয়ে যায় লিঁও। ৬০ মিনিটে বেন ইয়েডার দ্বিতীয় গোল করে মোনাকোর হয়ে সমতা ফেরান। বদলী খেলোয়াড় মালিক ফোফানা শেষভাগের গোলে লিঁওর জয় নিশ্চিত হয়। ইউরোপীয়ান আসরে খেলার যোগ্যতা অর্জনের জন্য এখনো লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে টেবিলের অষ্টম স্থানে থাকা লিঁও।
গত ১২ মৌসুমে পিএসজি ১২ শিরোপার মধ্যে ১০টি নিজেদের করে নিয়েছে। ২০১১ সালে কাতার সরকারের বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট ক্লাবের মালিকানা নেবার পর থেকেই পিএসজির পুনরুত্থান শুরু হয়। বদলে যাওয়া ক্লাবটি ক্রমেই ইউরোপীয়ান ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি হিসেবে নিজেদের আবির্ভূত করে।
ইতোমধ্যেই ফ্রেঞ্চ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নিজেদের করে নেবার পর আগামী ২৫ মে লিঁওর বিপক্ষে ফ্রেঞ্চ কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে পিএসজি। এছাড়া ডর্টমুন্ডকে সেমিফাইনালে পরাজিত করে আগামী ১ জুন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে খেলার জন্য মুখিয়ে আছে এনরিকের দল।
এদিকে কাল লিগ ওয়ানের আরেক ম্যাচে ইনজুরি টাইমের গোলে রেনেকে ৫-৪ ব্যবধানে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে প্রথমবারের মত খেলার যোগ্যতা অর্জনে অনেকটাই এগিয়ে গেছে ব্রেস্ট। রেনের সাবেক
ডিফেন্ডার লিলিয়ান ব্রাসিয়ার স্টপেজ টাইমে ষষ্ঠ মিনিটে জয়সূচক গোলটি করেন। অথচ ৯ মিনিটে আরনাড কালিমুয়েন্ডোর জোড়া গোলে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছিল ব্রেস্ট। দ্রæত এক গোল দিয়ে স্বস্তি ফেরান স্টিভ মুনি। বিরতির পরপর ওয়ার্মড ওমারির আত্মঘাতি গোলে সমতায় ফিরে সফরকারীরা। উরুগুইয়ান স্ট্রাইকার মার্টিন সাট্রিয়ানো ৫৪ মিনিটে ব্রেস্টকে এগিয়ে দেন। এরপর মাহদি কামারার গোলে ব্যবধান ৪-২ হয়। নাটকীয় ম্যাচটিতে ১০ মিনিটের ব্যবধানে আর্থার থিটে ও মার্টিন টিয়েরার পরপর দুই গোল করে রেনেকে আবারো লড়াইয়ে ফেরান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর নিজেদের রক্ষা করতে পারেনি স্বাগতিক রেনে। আগের দুই ম্যাচে পরাজিত ব্রেস্ট দারুন এই টেবিলের তৃতীয় স্থান ধরে রেখেছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মোনাকোর থেকে দুই পয়েন্ট পিছিয়ে রয়েছে তারা।
এই জয়ে আগামী বছর অন্তত ইউরোপীয়ান ফুটবলের কোন এক আসরে ক্লাব ইতিহাসে প্রথমবারের মত খেলা নিশ্চিত করেছে ব্রেস্ট।
উচ্ছসিত ব্রেস্ট কোচ এরিক রয় বলেছেন, ‘গত মৌসুমে আমরা তিন ম্যাচ হাতে রেখে লিগে টিকে থাকা নিশ্চিত করেছিলাম। আজ আমরা ইউরোপীয়ান আসরে খেলা নিশ্চিত করেছি, এটা সত্যিই অভাবনীয়।’
আগামী বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বর্ধিত আসরে লিগ ওয়ানের প্রথম তিন দল সরাসরি খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। লিগে চতুর্থ স্থানে থাকা দলটি প্রিলিমিনারি রাউন্ডে খেলার সুযোগ পাবে।
দিনের অন্য ম্যাচগুলোতে লিলি ২-১ গোলে মেটজকে পরাজিত করেছে। নিস ৩-১ গোলে স্ট্রাসবার্গকে হারিয়ে পঞ্চম স্থান নিশ্চিত করেছে। মৌসুমে ২৭তম গোল করে অভিজ্ঞ পিয়েরে-এমেরিব অবামেয়াং লেন্সের বিপক্ষে মার্সেইকে ২-১ গোলে জয় উপহার দিয়েছেন। ঘরের মাঠে তুলসের কাছে ২-১ গোলে পরাজিত হয়ে সেফটি জোন থেকে এখনো তিন পয়েন্ট দুরে রয়েছে লোরিয়েন্ট।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :