মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে শেষ উইকেট নেওয়ার পর মিচেল স্টার্কের উচ্ছাসটাই বলে দিচ্ছিল, এবারের আইপিএল ঠিক কতটা খারাপ গেছে তার কাছে। প্রায় ২৫ কোটি টাকা খরচা করে তাকে দলে নিয়েছিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। কোথায় তার থেকে বিশ্বমানের স্পেল আশা করছিলেন সমর্থকরা, সেখানে অখ্যাত ব্যাটাররা তাকে মেরে ইকোনমির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। এমনিতে উইকেট ফ্ল্যাট, তারওপর দোসর ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নিয়ম, তাতেই নাভিশ্বাস উঠেছে বোলারদের। এবার ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার রুল নিয়েও মুখ খুললেন নাইটদের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার।
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপক্ষে ৩.৫ ওভার বল করে ৩৩ রান দিয়ে তুলে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। এবারের আইপিএলে তার সেরা বোলিং নিঃসন্দেহে। স্টার্কের থেকে এমন পারফরমেন্স না এলে মুম্বাইয়ের ঘরের মাঠে গিয়ে ১২ বছর পর আর কলকাতা নাইট রাইডার্সের জেতা হত না। অন্তত শাহরুখ খানের শহরে তার সম্মান রেখেছেন আইপিএলের সবচেয়ে দামি ক্রিকেটার, এটাই সবচেয়ে ভালো দিক। জেরাল্ড কোয়েটজিকে আউট করার পর স্টার্ক যেভাবে সেলিব্রেট করলেন, তা হয়ত বিশ্বকাপ জেতার দিনও করেননি তিনি। বোঝাই যাচ্ছিল, ভিতরে ভিতরে এতদিন বেশ অপমানিত বোধই করছিলেন অজিদের এই পেসার। শেষ পর্যন্ত অন্তত একটা ম্যাচ জয়ের ক্ষেত্রে অবদান রেখে যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন তিনি।
ম্যাচ শেষের পর সাংবাদিক সম্মেলনে এসে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপজয়ী তারকা বলছেন, ‘ ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম আসার পর থেকে খেলাতেও কিছুটা বদল এসেছে। এখন অনেক গভীর পর্যন্ত ব্যাটিং লাইন আপ থাকে। সকলে ব্যাটিংয়ে ডেপথ বাড়ানোর সুযোগ পায়। কোনও দল যখন ৮ বা ৯ নম্বর পজিশন পর্যন্ত ব্যাটার বা অলরাউন্ডার খেলানোর সুযোগ পায়, তখন রান তো উঠবেই। আর এখানকার উইকেটে বড় রান ওঠাই স্বাভাবিক। অবশ্য পাওয়ার প্লের ক্ষেত্রে এই নিয়ম খাটে না। আইপিএলে পাওয়ার প্লেতে ভরডরহীনভাবেই রান তুলছে ব্যাটাররা। প্রথম ছয় ওভারে বেশ ভালো ব্যাটিং দেখা যাচ্ছে’।
স্টার্ক বলছেন, ‘ আইপিএলে ভালো রান উঠছে। তবে সময়ই বলবে বিশ্বকাপে কি হবে। কারণ সেখানে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম নেই। ফলে রান ওঠার ক্ষেত্রে এই নিয়ম না থাকা সমস্যা তৈরি করে কিনা সেটাই দেখতে হবে। অধিনায়কদেরও আরও বেশি মাথা খাটাতে হবে কারণ তখন শুধুই ১১জনকে নিয়ে খেলতে হবে। বিশ্বকাপের আগে আইপিএলে মঞ্চে খেলা, প্রস্তুতির সবচেয়ে ভালো জায়গা, নিজেকে ঝালিয়ে নেওয়ারও সেরা সুযোগ। তবে বিশ্বকাপ নয় এখন প্রথম টার্গেট কেকেআরকে চ্যাম্পিয়ন করা’।
এবারের আইপিএলে স্টার্কের ইকোনমি দেখে চোখ ঢাকবেন বিশেষজ্ঞরা। ৯ ম্যাচে নিয়েছেন ১১ উইকেট, ইকোনমি ১১.৪০। তবে মুম্বাই ম্যাচে শেষ ওভারে ৪ বলে তিন উইকেট নিয়ে স্টার্ক ক্রিকেটবিশ্বকে জানান দিয়েছেন স্বমহিমাতেই ফিরছেন তিনি। তবে স্টার্কের এই ফর্মে ফেরা আইপিএলে নাইটদের পৌষ মাস আর বিশ্বকাপে ভারতের সর্বনাশ হবে না তো, সেই চিন্তায় ক্রিকেটপ্রেমীরা।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :