গত বছর টটেনহ্যাম থেকে হ্যারি কেনকে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে নেবার চেষ্টা করেছিলেন কোচ এরিক টেন হাগ। কিন্তু তার পরিবর্তে রাসমাস হোলান্ডকে শেষ পর্যন্ত দলে ভেড়াতে সমর্থ হয় ইউনাইটেড। ইংলিশ অধিনায়ক কেন শৈশবের ক্লাব টটেনহ্যাম ছেড়ে গত মৌসুমে বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দিয়েছেন। এরপর বুন্দেসলিগা জায়ান্টদের হয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় কেন ৪৩ গোল করেছেন।
কেনের পরিবর্তে ইউনাইটেড ড্যানিশ তারকা হোলান্ডাকে ৭২ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে আটালান্টা থেকে চুক্তিভূক্ত করে। ২১ বছর বয়সী হোলান্ড এ পর্যন্ত ১৪ গোল করে। সাবেক ইউনাইটেড অধিনায়ক গ্যারি নেভিলকে স্কাই স্পোর্টসে দেয়া এক সাক্ষাতকারে টেন হাগ বলেছেন, ‘আমাদের প্রতিটি ম্যাচ জয় করতে হবে। আর যখন এই প্রত্যাশা নিয়ে কোন দল মাঠে নামে তখন তা পূরণে সেই মানের খেলোয়াড়দেরও প্রয়োজন হয়।’
কিন্তু ইউনাইটেড ম্যানেজার স্বীকার করেছেন গত কয়েক দশকে যে মানের খেলোয়াড় এখানে এসেছে তা ধরে রাখা ওল্ড ট্রাফোর্ডের পক্ষে সাম্প্রতিক সময়ে সম্ভব হয়নি। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ক্লাবের অনেক কিছুই বিবেচনা করতে হয়। যারা ইতোমধ্যেই নিজেদের যোগ্যতা প্রমান দিয়েছেন তাদের পরিবর্তে সত্যিকারের প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের খুঁজে বের করাও একটি ক্লাবে অন্যতম মূল দায়িত্ব। আমাদের সামনে যখন বেছে নেবার সুযোগ এসেছিল তখন আমরা রাসমাস হোলান্ডের মত প্রতিভাকে বেছে নিয়েছি। হ্যারি কেন ইতোমধ্যেই তার যোগ্যতার প্রমান দিয়েছেন। আমরা সেজন্যই তাকে দলে ভেড়াতে চেয়েছি। কিন্তু যেকোন কারনেই হোক আমরা তাকে শেষ পর্যন্ত পাইনি। এরপর আমরা রাসমাসের প্রতি আগ্রহী হই, কারন তার মধ্যে সেই ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা সবাই জানি হ্যারি কেনের পক্ষে এক মৌসুমে ৩০ গোল করা সম্ভব। রাসমাসও সে পর্যায়ে একদিন পৌঁছাবে, কিন্তু এজন্য তাকে সময় দিতে হবে। কেনের সাথে তার তুলনা করার সময় এখনো আসেনি। কিন্তু সেটাও খুব বেশী দুরে নয়। আমি কখনই দুজন খেলোয়াড়ের মধ্যে তুলনা করিনা। কারন সবাই ভিন্ন ভিন্ন মানের। কিন্তু গত গ্রীষ্মে একজন স্ট্রাইকার হিসেবে রাসমানের মধ্যে সর্বোচ্চ সম্ভাবনা আমরা দেখেছি।’
টেন হাগের অধীনে ইতিবাচক প্রথম মৌসুম কাটানোর পর এবারের সময়টা মোটেই ভাল যায়নি ইউনাইটেডের। যদিও ইনজুরির দীর্ঘ তালিকা ইউনাইটেডকে সমস্যায় ফেলেছে। এছাড়া দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের ফর্মহীনতাও ইউনাইটেডকে এগুতে দেয়নি।
এফএ কাপের ফাইনালে তাদের প্রতিপক্ষ ম্যানচেস্টার সিটি। বড়দিনের আগেই ইউনাইটেডের ইউরোপ থেকে বিদায় নিশ্চিত হেেছ। আগামী বছর চ্যাম্পিয়ন্স লিগেও খেলতে পারছে না। এসবই কোচ এরিক টেন হাগকে চাপে ফেলেছে।
যদিও টেন হাগ বিশ্বাস করেন তার দল সঠিক পজিশনেই আছে। তরুণ খেলোয়াড়দের এগিয়ে যাবার জন্য সময় দিতে হবে। একইসাথে ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফেরা খেলোয়াড়দের ফিটনেসের জন্য সময়ের প্রয়োজন। মালিকপক্ষ ক্লাবের সাফল্যের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। যে কারনে ডাচম্যান টেন হাগের ভবিষ্যত শঙ্কার মধ্যে পড়েছে। সম্প্রতি টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে জেসন উইলকক্স ক্লাবে এসেছেন। এর মাধ্যমে ক্লাবের আমুল পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। টেন হাগ নিজেও জানিয়েছেন নতুন করে সবকিছু শুরু করার সময় এসেছে, আর নতুন এই যাত্রায় তিনি নিজেও সামিল হতে চান। এ ব্যপারে মালিকপক্ষের সাথে জানুয়ারিতে বেশ কিছু আলোচনা বেশ ফলপ্রসু হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইউনাইটেড বস ।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :