জয়ের ধারা অব্যাহত রাখার লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হবে স্বাগতিক বাংলাদেশ। ম্যাচটি শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত সিরিজের প্রথম তিন ম্যাচ জিতে ইতোমধ্যেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
সিরিজের শেষ দুই ম্যাচের জন্য অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান এবং মুস্তাফিজুর রহমান দলে ফেরায় আরো বেশি শক্তিশালী হয়েছে বাংলাদেশ। ইনজুরি থেকে সুস্থ হওয়ায় শেষ দুই ম্যাচের জন্য সাকিব-ফিজের সাথে দলে ফিরেছেন সৌম্য সরকারও।ব্যাটাররা এ পর্যন্ত নিজেদের সেরাটা দিতে না পারলেও সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
সিরিজ জয় নিশ্চিত হলেও চতুর্থ ম্যাচ নিয়ে বাংলাদেশ সতর্ক বলে জানালেন পেসার তাসকিন আহমেদ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মোটেই আত্মপ্রসাদে ভুগতে রাজি নয় টাইগাররা। তার মতে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয় তাদেরকে কোন কৃতিত্ব দিবে না, কিন্তু হেরে গেলে সমালোচনা শুনতে হবে।
আজ ম্যাচের আগে এক সংবাদ সম্মেলনে তাসকিন বলেন, ‘আমরা নিশ্চিন্তে থাকতে পারছি না। আমরা জিতলে কোন কৃতিত্ব পাবো না, কিন্তু আমরা হেরে গেলে সবাই বলবে জিম্বাবুয়ের কাছে হেরেছে এবং আমাদের নিয়ে সমালোচনা করা হবে।’
তাসকিন জানান, দলের মূল লক্ষ্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া। তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য বিশ্বকাপ। আমরা যেখানেই খেলি না কেন আমাদের কাজ হল নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করা। কিন্তু আপনাকে বুঝতে হবে- কন্ডিশন, প্রতিপক্ষ, আমরা কোন দলের বিপক্ষে খেলছি, কোথায় খেলছি, কি কি বিষয় আমাদের নিয়ন্ত্রের বাইরে আছে। খেলোয়াড় হিসেবে যেখানেই খেলি, আমরা সেরাটা দিয়ে থাকি। এমনকি ডিপিএলেও যখন খেলি, আমরা ভালো খেলার চেষ্টা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মূল লক্ষ্য হলো বিশ্বকাপ। আমরা যদি অন্তত পাঁচ শতাংশও উন্নতি করতে পারি, সেটি আমাদের জন্য অনেক বড় বিষয়। আমাদের ভালো শুরু করতে হবে। বিশ্বকাপে আমরা কিভাবে ভালো খেলতে পারি সেদিকেই সবার মনোযোগ। এমন লক্ষ্য নিয়েই আমরা কঠোর অনুশীলন করছি।’
এই সিরিজকে যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখা হচ্ছে, তখন প্রশ্ন উঠেছে- জিম্বাবুয়ের মতো দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলে কিভাবে উপকৃত হবে বাংলাদেশ। এছাড়া আধুনিক যুগের টি-টোয়েন্টি বিবেচনায় বাংলাদেশের ব্যাটিং দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। এমনকি জিম্বাবুয়ের মত মাঝারি মানের বোলিংয়ের বিপক্ষেও ভালো স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করতে পারেনি তারা।
তাসকিন বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ক্ষেত্রে কন্ডিশন গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের উইকেট এমন নয়, আপনি ক্রিজে গিয়ে প্রথম বল থেকেই বোলারদের উপর আক্রমনাত্মক খেলবেন। আমাদের উইকেট বেশি স্কোর করার মত নয়। কিন্তু আমরা প্রতিটি ক্ষেত্রে উন্নতি করার জন্য কঠোর অনুশীলন করছি।’
প্রথম ম্যাচে ৮ উইকেটে এবং দ্বিতীয়টিতে ৬ উইকেটের জয় পেয়েছিলো বাংলাদেশ। তৃতীয় ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ১৬৫ রান করে টাইগাররা। জবাবে ৯ উইকেটে ১৫৬ রান করে ৯ রানে ম্যাচ হারে জিম্বাবুয়ে। প্রথম তিনটি ম্যাচে মিতব্যয়ী বোলিংয়ে দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তাসকিন। ৩ ম্যাচে ৬ উইকেট নেন এবং কোন ম্যাচেই ৪ ওভারে ২১ রানের বেশি দেননি তিনি।
তৃতীয় ম্যাচ জিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ২৩বারের মোকাবেলায় জয়ের সংখ্যাটা ১৬তে নিয়ে গেছে বাংলাদেশ। সফরকারীদের বিপক্ষে মাত্র ৭টি ম্যাচে হেরেছে টাইগাররা।
বাংলাদেশ দল(সম্ভাব্য: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান তামিম, সাকিব আল হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদুল্লাহ, জাকের আলি, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব, সৌম্য সরকার, তানভীর ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।
জিম্বাবুয়ে দল(সম্ভাব্য): সিকান্দার রাজা (অধিনায়ক), ফারাজ আকরাম, ব্রায়ান বেনেট, রায়ান বার্ল, জোনাথন ক্যাম্পবেল, ক্রেগ আরভিন, জয়লর্ড গাম্বি, লুক জঙ্গি, ক্লাইভ মাদান্দে, তাদিওয়ানাশে মারুমানি, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, ব্লেসিং মুজারাবানি, এন্সলি এন্দলোভু, রিচার্ড এনগারাভা ও সিন উইলিয়ামস।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :