শনিবার লিঁওকে ফাইনালে ২-১ ব্যবধানে হারিয়ে ফ্রেঞ্চ কাপের শিরোপা জয় করেছে পিএসজি। ফরাসি চ্যাম্পিয়নদের হয়ে এটাই ছিল তারকা ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপ্পের শেষ ম্যাচ। ফাইনাল শেষে পিএসজি কোচ লুইস এনরিকে বলেছেন এমবাপ্পের সাথে কাজ করাটা তার জন্য সৌভাগ্যের ছিল।
পিএসজি ছেড়ে এমবাপ্পের রিয়াল মাদ্রিদে যাবার জোড় সম্ভাবনা রয়েছে। কালকের ফাইনালে ওসমানে ডেম্বেলে ও ফাবিয়ার রুইজের প্রথমার্ধের গোলে পিএসজির জয় নিশ্চিত হয়। জেক ও’ব্রায়ানের এক গোলে বিরতির পর লিঁও ব্যবধান কমালেও তা পরাজয় এড়াতে পারেনি। বিদায়বেলায় এমবাপ্পে পিএসজির হয়ে নিজের ২৫৬ গোলের রেকর্ডকে আর বাড়াতে পারেননি।
ফ্রেঞ্চ কাপের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল ক্লাব হিসেবে পিএসজি ১৫টি ট্রফি জয়ের কৃতিত্ব দেখালো। এর মধ্যে গত এক দশকে জিতেছে সাতটি শিরোপা। ২০১৭ সালে টিনএজার এমবাপ্পে মোনাকো থেকে পিএসজিতে আসার পর জয় করেছেন চারটি ট্রফি।
এই জয়ের মাধ্যমে লুইস এনরিকের প্রথম মেয়াদে ঘরোয়া লিগ ও কাপ শিরোপাসহ ডাবল জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করলো পিএসজি। যদিও ক্লাবের মূল লক্ষ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা এখনো অধরাই রয়ে গেছে। বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে সেমিফাইনালে পরাজিত হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে পিএসজিকে।
এনরিকে বলেছেন, ‘আমরা ফাইনালে ভাল খেলেছি। ম্যাচের মধ্যে আলাদা একটি আবহ ছিল। আমি মনে করি এই মৌসুমটা দারুন কেটেছে। আরো একটি সপ্তাহ যদি একসাথে কাটানো যেত, তারপর ছুটিতে যেতাম। কিন্তু এটাই জীবন। কেউই বলতে পারবে না ফুটবলে সবকিছু ন্যয় হয়েছে। কিন্তু এটা কোন অর্থবহন করেনা। আগামী মৌসুমে আমরা আরো শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবো। জয়ের জন্য ক্ষুধার্ত আরো কিছুখেলোয়াড়কে চুক্তি করার ইচ্ছে আছে।’
এমবাপ্পে সম্পর্কে এনরিকে আরো বলেছেন, ‘আমি মনে করি কিলিয়ানের সাথে কাজ করাটা সৌভাগ্যের। কিন্তু সাত বছর কাটানোর পর এটা তার জন্য একটি কঠিন মৌসুম ছিল। যা কিছু সে অর্জন করেছে এরপর বিদায় বলাটা কঠিন। সবসময়ই সে দলকে সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত থাকতো। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’
নিজের ঘরের ক্লাবের হয়ে এমবাপ্পে ৩০৮তম ফাইনাল খেলতে মাঠে নেমেছিলেন। মোনাকো থেকে ১৮০ মিলিয়ন ইউরোতে তিনি ২০১৭ সালে পিএসজিতে যোগ দিয়েছিলেন। পিএসজির জার্সিতে চারটি ফ্রেঞ্চ কাপ ও ছয়টি লিগ ওয়ান ও দুটি লিগ কাপের শিরোপা জয় করে তিনি বিদায় নিচ্ছেন। শেষ মৌসুমে তিনি পিএসজির হয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় ৪৪ গোল করেছেন। এর মধ্যে কাপ ফাইনালের পথে পিএসজিকে আট গোল উপহার দিয়েছেন।
লিলি স্তাদে পিয়েরে-মারয়তে শুরুতেই পিএসজিকে এগিয়ে দেবার সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপ্পে। অলিম্পিকের কারনে স্তাদে ডি ফ্রান্স প্রস্তুতিতে ব্যস্ত থাকায় লিলির মাঠে ফাইনাল আয়োজন করা হয়। দ্বিতীয় মিনিটে কর্ণার থেকে লুকাস বেরালডোর হেডে এমবাপ্পের ডাইভিং শট নিতে গেলে অল্পের জন্য তিনি বলে পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন। শুরুতেই গোল হজম থেকে রক্ষা পেলেও ২২ মিনিটে ফাঁকায় দাঁড়ানো ডেম্বেলে ঠিকই গোল করে লিঁওকে পিছনে ফেলেন। ৩৪ মিনিটে ডেম্বেলের শট পোস্টে লেগে ফেরত এলে স্প্যানিশ মিডফিল্ডার রুইজ দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় বল জালে জড়ালে ব্যবধান দ্বিগুন হয়।
লিগ ওয়ানে অভাবনীয় উন্নতি করে ডিসেম্বরে টেবিলের তলানির অবস্থান থেকে শেষ পর্যন্ত ষষ্ঠ স্থানে থেকে মৌসুম শেষ করেছে লিঁও। এর ফলে ইউরোপা লিগে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। কর্ণার থেকে আইরিশ ডিফেন্ডার ও’ব্রায়ানের হেডে বিরতি পর ১০ মিনিটে লিলি কিছুটা আশা জাগিয়ে তুলেছিল। পিএসজি গোলরক্ষক গিয়ানলুইগি ডোনারুমা নিকোলাস টাগলিয়াফিকোর হেড দুর্দান্ত গতিতে কর্ণারের মাধ্যমে সেভ করে দলকে রক্ষা করেছেন। আলেক্সান্দ্রে লাকাজেত্তের শট ডিফ্লেকটেড হয়ে পোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :