শেষ পর্যন্ত চোখের পানি ধরে রাখতে পারলেন না সানরাইজার্স হায়দরাবাদের সুন্দরী কর্ণধার কাব্য মারান। তিনি প্রকাশ্যেই ছেলেমানুষের মতো কেঁদে ফেললেন। যিনি দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের পর রাজস্থান রয়্যালসের অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনকে কাঁদতে দেখে সান্ত্বনা দিয়েছিলেন, তিনি নিজেই এদিন আর আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না।
রবিবার দু`চোখ ভরা স্বপ্ন নিয়েই অন্য দিনের মতোই চিপকে হাজির হয়েছিলেন কাব্য। স্বপ্ন দেখেছিলেন, ২০১৬ সালের পর ফের আইপিএল ট্রফি জয়ের। ২০১৮ সালেও সানরাইজার্স ফাইনালে উঠেছিল। কিন্তু সেবার রানার্স হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল তাদের। তবে এবার বিশ্বজয়ী অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের হাত ধরে খেতাব জয়ের স্বপ্ন বুনেছিলেন কাব্যসহ সানরাইজার্সের ভক্তরা। কিন্তু কলকাতা নাইট রাইডার্সের দাপটে হতাশাজনক ভাবে ৫৭ বল বাকি থাকতে ৮ উইকেটে ম্যাচ হারে এসআরএইচ। স্বপ্নভঙ্গ হয় কাব্যর।
হায়দরাবাদের লজ্জাজনক পরাজয়ের পর দলের মালিক কাব্য মারান ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে শুরু করেন। তার দু`চোখ বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়তে দেখা যায়। নিজের কান্না থামাতেই পারছিলেন না কাব্য। চোখে পানি নিয়েই হাততালি দিয়ে একদিকে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে যেমন তিনি অভিবাদন জানান, তেমনই নিজের দলের প্লেয়ারদের লড়াইকেও কুর্নিশ জানান কাব্য। তার এই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে। যেখানে কাব্য মারানকে পিছন ফিরে চোখের পানি মুছতে দেখা গিয়েছে। তার পর জোর করে কান্না থামানোরও চেষ্টা করেছেন তিনি। কিন্তু পারেননি। দু`চোখ ভরা পানি নিয়েই অবশ্য হাততালি দিয়ে দলকে উদ্বুদ্ধ করতে ভোলেননি কাব্য। একেই বলে স্পোর্টসম্যান স্পিরিট।
যে বিধ্বংসী ব্যাটিং অর্ডারের হাত ধরে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ২০২৪ আইপিএলে দাপিয়ে বেড়িয়েছে, সেই ব্যাটিং অর্ডারই ফাইনালে ডোবাল তাদের। প্লে-অফের দু`টি ম্যাচেই হায়দরাবাদের ব্যাটিংকে একেবারে সাধারণ স্তরে নামিয়ে আনলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের বোলাররা। কোয়ালিফায়ার ওয়ানের পর আইপিএলের ফাইনাল ম্যাচেও হায়দরাবাদের ব্যাটাদের একেবারে কাঁদিয়ে ছাড়লেন মিচেল স্টার্ক, আন্দ্রে রাসেলরা। এদিন কেকেআর বোলারদের দাপটে ১৮.৩ ওভারে সানরাইজার্স মাত্র ১১৩ রানে অলআউট হয়ে যায়। এটি আইপিএল ফাইনালের ইতিহাসে সর্বনিম্ন স্কোরের নজির।
রবিবার হায়দরাবাদের হয়ে সর্বোচ্চ স্কোর করেছেন দলের অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। তিনি ১৯ বলে ২৪ রান করেছেন। এছাড়া ২৩ বলে ২০ করেন এডেন মার্করাম, ১৭ বলে ১৬ করেন এনরিখ ক্লাসেন, ১০ বলে ১৩ করেন নীতীশ কুমার রেড্ডি। বাকিরা এক অঙ্কের ঘরেই গড়াগড়ি খেয়েছেন। পাওয়ার প্লে-তেই ৩ উইকেট হারিয়ে বসেছিল হায়দরাবাদ। সেখানেই তাদের কোমর ভেঙে যায়। তারপর আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি তারা। পাওয়ার প্লে-তে তিন উইকেটের মধ্যে ২ উইকেট নিয়েছেন কামিন্স। ১ উইকেট নেন বৈভব আরোরা। এদিন কেকেআর-এর হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার আন্দ্রে রাসেল। ২.৩ ওভার বল করে ১৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট তুলে নেন। এছাড়া হর্ষিত রানা নিয়েছেন ২ উইকেট।
রান তাড়া করতে নেমে ১০.৩ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ১১৪ রান করে ফেলে কেকেআর। সেই সঙ্গে তারা তৃতীয় বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পেয়ে যান কিং খানের টিম। কেকেআর-এর হয়ে সর্বোচ্চ রান করেছেন বেঙ্কটেশ আইয়ার। যে পিচে খেলতে গিয়ে নাকানিচোবানি খেয়েছে হায়দরাবাদ, সেই পিচেই বেঙ্কটেশ চারটি চার, তিনটি ছক্কার হাত ধরে দাপটের সঙ্গে ২৬ বলে ৫২ করে অপরাজিত থাকেন। ওপেন করতে নেমে ৩২ বলে ৩৯ করেছিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :