চ্যাম্পিয়নশীপ প্লে-অফের ফাইনালে লিডসকে ১-০ গোলে পরাজিত করে এক মৌসুম পরেই আবারো প্রিমিয়ার লিগে ফিরেছে সাউদাম্পটন। ম্যাচের একমাত্র গোলটি করেছে এ্যাডাম আর্মস্টং। ওয়েম্বলির ফাইনালে ২৪ মিনিটে আর্মস্টংয়ের গোলে সাউদাম্পটনের জয় নিশ্চিত হয়। গত মৌসুমে শীর্ষ লিগ থেকে অবনমনের তিক্ত অভিজ্ঞতা কাটিয়ে খুব বেশীদিন অপেক্ষা করতে হলোনা সাউদাম্পটনকে।
প্রিমিয়ার লিগে উন্নীত হবার কারনে সাউদাম্পটন ম্যাচের সম্প্রচার ও বাণিজ্যিক আয় থেকে প্রায় ১৪০ মিলিয়ন পাউন্ড অর্জন করেছে। ফিনান্সিয়াল বিশেষজ্ঞ ডেলোয়িট জানিয়েছে আগামী মৌসুমে রেলিগেশন এড়াতে পারলে সব মিলিয়ে সাউদাম্পটনের ব্যাংকে জমা হবে ৩০৫ মিলিয়ন পাউন্ড। অর্থ অবশ্যই একটি ক্লাবের জন্য একটি বিশাল বোনাস, কিন্তু দ্বিতীয় টায়ারের ছোট দল প্লাইমাউথ ও অক্সফোর্ডের পরিবর্তে বিশ^সেরা দল ম্যানচেস্টার সিটি কিংবা আর্সেনালকে মোকাবেরা করা অনেক বেশী সম্মানের। আর এই ক্ষুধাই সাউদাম্পটনকে আবারো প্রিমিয়ার লিগের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে যথেষ্ঠ ছিল।
এর আগে ১৯৭৬ সালে বড় কোন শিরোপা হিসেবে একবারই এফএ কাপ জয় করেছিল সাউদাম্পটন। রেলিগেশনে যাবার আগে ১১ বছর তারা প্রিমিয়ার লিগে খেলেছে। এবার তারা আশা করছে ওয়েম্বলিতে ৩৫ হাজার সমর্থকের যে সমর্থন তাদের এগিয়ে যাবার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে তার মাধ্যমে আরো একবার দীর্ঘ সময় তারা নিজেদের সম্মানের জায়গাটুকু ধরে রাখতে পারবে।
এই প্রথমবারের মত প্লে-অফের ফাইনালে খেলেছে সাউদাম্পটন। এর মাধ্যমে এনিয়ে লিডসের বিপক্ষে এবারের মৌসুমে তারা তিনবারই জয়ী হয়েছে। যদিও নিয়মিত মৌসুমে এলান্ড রোডের ক্লাবটির থেকে তিন পয়েন্ট পিছিয়ে তারা চ্যাম্পিয়নশীপ শেষ করেছে। সেইন্ট বস ৩৮ বছর বয়সী রাসেল মার্টিনের জন্য অনেক বড় একটি সাফল্য। মাত্র তিন বছর আগে লিগ ওয়ানের লিন্ড কেইনেস ডনসের হয়ে কোচিং ক্যারিয়ার শুরু করেন মার্টিন। সাউদাম্পটনকে প্রথম বছরেই একেবারে বদলে দিয়েছেন এই স্কটিশ কোচ। এবারের মৌসুমে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগের কোন দলই সাউদাম্পটনের মত এত বেশী পজিশন দখলের রেকর্ড গড়তে পারেনি।
কাল ম্যাচ শেষে উচ্ছসিত মার্টিন বলেছেন, ‘আমি বোর্ডের জন্য দারুন আনন্দিত। কারন তারা আমার নিয়োগ নিয়ে খুব একটা উত্তেজিত ছিলনা। সোয়ানসির হয়ে আমি টেবিলের ১০ম স্থান অর্জন করেছিলাম। এখানে এসে আমি সত্যিকার অর্থেই আমি সাহসী কাজ করেছি। এই দলটি নিয়ে আমি দারুন গর্বিত। এই জয়টা তাদের প্রাপ্য ছিল।’
গত মৌসুমে সাউদাম্পটনের সাথে লিডসও প্রিমিয়ার লিগ থেকে অবনমিত হয়ে গিয়েছিল। যে কারনে এই পরাজয়ে লিডস বস ড্যানিয়েল ফারকের জন্য দারুন হতাশার। এনিয়ে চতুর্থ প্লে-অফের ফাইনালে পরাজয় বরণ করতে হয়েছে লিডসকে। ১৯৯২ সালের পর তিনবারের ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা ওয়েম্বলিতে কোন জয় ছাড়াই মাঠ ছেড়েছে।
কাল ফাইনাল ম্যাচে লিডস শুরুটা বেশ ভালই করেছিল। যদিও প্রথমে এগিয়ে যায় সাউদাম্পটন। ওয়েস্ট ব্রæমের বিপক্ষে প্লে-অফের সেমিফাইনালে দুই গোল করেছেন আর্মস্টং। এবার ফাইনালে ২৪ মিনিটে তিনি জয়সূচক গোলটি উপহার দেন। মৌসুমে এটি তার ২৪তম গোল। লিডসের অফসাইড ট্র্যাপকে চতুরতার সাথে কাটিয়ে ১২ গজ দুর থেকে দুর্দান্ত স্ট্রাইকে আর্মস্টং বল জালে জড়ান। স্মলকোনের দ্রুতগতির ফ্রি-কিক থেকে আর্মস্ট্রং ব্যবধান প্রায় দ্বিগুন করেই ফেলেছিলেন। কিন্তু পোস্টের কাছ থেকে তার এই শটটি রুখে দেন লিডস গোলরক্ষক ইলান মেসলিয়ার।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ডিফেন্ডার জো রোডোন গোলের ভাল সুযোগ পেলেও শেষ মুহূর্তে টেইলর হারউড-বেলিস তা ব্লক করলে হতাশ হতে হয় লিডসকে। ড্যানিয়েল জেমসের শট বারে লেগে ফিরে আসে। স্টপেজ টাইমে আবারো এই উইঙ্গারের শট গোলরক্ষক এ্যালেক্স ম্যাককার্থি রুখে দিলে জয় নিশ্চিত হয় সাউদাম্পটনের।
একুশে সংবাদ/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :