আইসল্যান্ডের কাছে ১-০ গোলের অস্বস্তিকর হার দিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নশীপের প্রস্তুতি শেষ করেছে ইংল্যান্ড। এই ম্যাচের মাধ্যমে ইংলিশ বস গ্যারেথ সাউথগেটকে এই বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে- আদৌ তার দল টুর্নামেন্ট ফেবারিট কিনা। তারপরও ইউরোর অন্যতম ফেবারিট দল হিসেবে জার্মানী উদ্দেশ্যে পাড়ি জমাবে ইংল্যান্ড। কিন্তু ওয়েম্বলিতে গতকাল শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে আত্মবিশ্বাস ঠিখ রাখাটাই ছিল মূল লক্ষ্য, যা সাউথগেট শিষ্যরা অর্জন করতে পারেনি।
জন ডাগার থ্রোটেইনসনের প্রথমার্ধের গোলে ইংল্যান্ডকে ভালভাবে বিদায় জানাতে পারেনি সমর্থকরা। এমনকি বিরতির সময় ও ম্যাচ শেষে সমর্থকদের দুয়ো ধ্বনিও শুনতে হয়েছে কেন, ফোডেন, পালমারদের। বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ের ৭২তম স্থানে থাকা আইসল্যান্ড ইউরোর চূড়ান্ত পর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। কোল পালমার, এন্থনি গর্ডন, কোবি মেইনুকে ইউরোর মূল একাদশে খেলানোর আগ্রহ থেকেই সাউথগেট গতকাল তার মূল একাদশ সাজিয়েছিলেন। কিন্তু ইংলিশ বসকে হয়তো নতুন করে আবারো দল নিয়ে চিন্তা করতে হবে।
ম্যাচ শেষে সাউথগেট বলেছেন, ‘আমাদের ভাল করতেই হবে। সঠিক সময়ে আমরা সেভাবে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখতে পারিনি। এই ম্যাচে কিছু কিছু প্রশ্ন উঠেছে যার উত্তর আমরা দিতে পারিনি। এটা অবশ্যই একটি হতাশাজনক পারফরমেন্স। আমরা যথেষ্ঠ পরিমানে নিজেদের প্রমানে ব্যর্থ হয়েছি। কিন্তু তারপরও মনে হচ্ছে টুর্নামেন্টের আগে আমাদের ভাল একটি শিক্ষা হলো। এর প্রয়োজন ছিল। আমি আত্মবিশ^াসী আজকের থেকে মূল পর্বে অবশ্যই আমরা ভাল খেলবো। সবাই বলছে টুর্ণামেন্টের অন্যতম ফেবারিট হিসেবে আমরা ইউরোতে খেলতে যাচ্ছি। কিন্তু আন্তর্জাতিক ফুটবলের বাস্তবতা একটু ভিন্ন।’
সাউথগেটের জন্য একটি দু:শ্চিন্তার বিষয় হলো জন স্টোনস বিরতির পর আর মাঠে ফিরতে পারেননি। ইংলিশ এই সেন্টার-ব্যাককে নিয়ে ইউরোর কথা মাথায় রেখে সাউথগেটও হয়তো ঝুঁকি নিতে চাননি। সাউথগেট বলেছেন, ‘আশা করছি সম্ভবত সে ঠিক আছে। আমরা কোন সুযোগ নিতে চাইনি।’ আগামী ১৬ জুন গেলসেনকার্চেনে গ্রুপ-সি’র প্রথম ম্যাচে সার্বিয়ার বিপক্ষে সম্ভবত এই একাদশ নিয়েই মাঠে নামবেন সাউথগেট। অনেকটা কাছাকাছি দলেরই ইঙ্গিত দিয়েছে ইংলিশ বস। রিয়াল মাদ্রিদ তারকা জুড বেলিংহাম যোগ দিলে দলের শক্তি নি:সন্দেহে বাড়বে।
গত সাত ম্যাচের মাত্র দুটিতে কোন গোল হজম না করা ইংলিশ রক্ষনভাগকে নিয়ে সাউথগেটের মূল দু:শ্চিন্তা। তিনি বলেন, ‘বল ছাড়া নিজেদের পজিশনে আমাদের আরো ভাল করতে হবে। আরো বেশী সমন্বিত পারফরমেন্স দেখতে হবে। টুর্নামেন্টের আগে খেলোয়াড়রা ইনজুরি নিয়েও শঙ্কায় ছিল। সে কারনেই কালকের ম্যাচে তারা কোন ঝুঁকি নিতে চায়নি। আমরা এই বাস্তবতা গোপান করতে চাচ্ছিনা। দলে বেশ কিছু শারিরিক ইস্যু রয়েছে। আমাদের শান্ত থাকতে হবে। ফলাফল নিয়ে কোন যুক্তি দিলে চলবে না। দ্রæতই সবকিছুর সমাধান করে মাঠে নামতে হবে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার সাউথগেট তার চূড়ান্ত ২৬ সদস্যের দল থেকে বাদ দিয়েছেন জ্যাক গ্রীলিশ, জেমন ম্যাডিসন ও ইনজুরিতে থাকা হ্যারি ম্যাগুয়েরেকে। সাউথগেটের এই সিদ্ধান্ত সঠিক কিনা তা আগামী একমাস জার্মানীতে পারফরমেন্সের উপরই নির্ভর করবে। তবে ম্যাগুয়েরের অনুপস্থিতি বিশেষ করে দলকে দারুনভাবে ভোগাবে। সেন্ট্রার ডিফেন্সে স্টোনসের সাথে ম্যাগুয়েরের পরিবর্তে মার্ক গুয়েহি আছেন। কিন্তু এই জুটি কাল শুরুতে খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে পারেননি। দ্বিতীয়ার্ধে এজরি কোনসা মাঠে নেমে কিছু প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছেন।
২০১৬ সালে রয় হজসনের ইংল্যান্ডকে ইউরো শেষ ষোলতে পরাজিত করেছিল আইসল্যান্ড। এখনো পর্যন্ত তাদের জন্য এটাই সবচেয়ে বড় জয় হয়ে আছে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :