টিম ম্যানেজমেন্ট আস্থা রাখলে দলের জন্য একজন লেগ-স্পিনার কতটা মূল্যবান হতে পারে-তার প্রমান দিয়েছেন বাংলাদেশের রিশাদ হোসেন। বিশেষ করে বাংলাদেশে লেগ-স্পিনারদের খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয় না। কারণ ঘরোয়া ক্লাব ক্রিকেটে বল হাতে ব্যয়বহুল হয়ে থাকেন তারা। এমনকি দেশের প্রথম শ্রেনির টুর্নামেন্টেও তাদের গুরুত্ব কম থাকে।
কিন্তু সবসময় রিশাদকে সমর্থন দিয়েছেন বাংলাদেশের বর্তমান টিম ম্যানেজমেন্ট এবং অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। যদিও ঘরোয়া ক্রিকেটে খুব বেশি খেলার সুযোগ হয়নি রিশাদের।
লেগ-স্পিন শেখাটা একটা কঠিন শিল্প। তবে প্রায় সব দেশই লেগ-স্পিনারদের সমর্থন করে থাকে। এই ধরণের স্পিনাররা গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট শিকারে অবদান রাখতে পারেন। রিশাদকে পরিপূর্ণভাবেই দেখভাল করেছে জাতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। প্রথম থেকেই প্রত্যাশা পূরণ করে আসছিল সে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম খেলতে নেমেই দলের জয়ে মূল ভূমিকা পালন করেছেন রিশাদ। তার পারফরমেন্সে সন্তুষ্ট টিম ম্যানেজমেন্ট বুঝতে পেরেছে, রিশাদের উপর আস্থা রাখাটা যথার্থই ছিলো।
বাংলাদেশের প্রথম লেগ-স্পিনার হিসেবে বিশ্বকাপের মতো বড় ইভেন্টে খেলেতে নেমেই ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করেছেন রিশাদ। প্রথম ম্যাচেই ২২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হন রিশাদ।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগারের চেয়ে ম্যাচে অনেক বেশি প্রভাব বিস্তারের কারনে আলোচনার বেন্দ্রবিন্দুতে রিশাদ। মন্থর উইকেটে ব্যাট হাতে ভালো শুরু করেছিলো শ্রীলংকা। শুরুটা ভালো হওয়ায় ১৫০ রানের বেশি সংগ্রহ পাবার সুযোগ ছিলো লংকানদের। তেমনটা হলে বাংলাদেশের ম্যাচ জয় কঠিন হয়ে যেত।
১৪ ওভার ৩ উইকেটে ১শ রান পেয়ে যাওয়ায় শেষদিকে আক্রমানত্মক হয়ে ওঠার পরিকল্পনায় ছিলো শ্রীলংকা। কিন্তু ১৫তম ওভারে রিশাদের জোড়া আঘাতে চাপে পড়ে যায় লংকানরা। পরপর দুই ডেলিভারিতে চারিথ আসালঙ্কা ও হাসারাঙ্গা ডি সিলভাকে আউট করে শ্রীলংকার রানের লাগাম টেনে ধরার পথ তৈরি করেন রিশাদ। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১২৫ রানে আটকে যায় শ্রীলংকা।
ক্রিজে দুই শ্রীলংকান দুই সেট ব্যাটার থাকায় রান দেওয়ার সম্ভাবনা ছিলো রিশাদের। কিন্তু রিশাদের উপর আস্থা রেখেছিলেন অধিনায়ক শান্ত। তিনি জানতেন, সব সময়ই লেগ স্পিনারদের উইকেট শিকারের সুযোগ থাকে।
শান্ত বলেন, ‘সে আমাদের উইকেট শিকারী বোলার। আমাদের ঐ সময় উইকেট দরকার ছিলো। এজন্য তাকে আক্রমনে এনেছি এবং সে প্রত্যাশা পূরণ করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সে ভালো করছে। আমি আশা করি সে এই পারফরমেন্স অব্যাহত রাখবে । তেমনটা হলে , সে হবে আমাদের দলের জন্য বড় সম্পদ। কারণ একজন লেগ-স্পিনার যে কোনও পরিস্থিতিতে আপনাকে উইকেট এনে দিতে পারে।’
রিশাদ বলেন, প্রতিপক্ষ কে এবং ব্যাটার কে, সেসব নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি সবসময় দলের জন্য অবদান রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা এবং সঠিক লাইনে বল করি। আমি জানি, আমি যদি ভালো বল করি তাহলে ডান-হাতি বা বাঁ-হাতি, যেমন ব্যাটার হোক না কেন উইকেট পাওয়া আমার জন্য সম্ভভ হবে।’
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :