ডর্টমুন্ডে কিলিয়ান এমবাপ্পে গোলের দেখা পেলেও ফ্রান্সের জয় নিশ্চিত করতে পারেননি। পেনাল্টি স্পট থেকে এমবাপ্পে গোল করে ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপে প্রথমবারের মত স্কোরশিটে নাম লিখিয়েছেন এমবাপ্পে। পোল্যান্ডের সাথে ১-১ গোলে ড্র হওয়ায় এবং নেদারল্যান্ডসকে অস্ট্রিয়া পরাজিত করায় ফ্রান্সের শীর্ষস্থান হাতছাড়া হয়েছে।
দিদিয়ের দেশ্যমের দল ২০১২ সালের ইউরোর পর এই প্রথমবারের মত বৈশ্বিক কোন আসরে গ্রুপের শীর্ষস্থান হারালো। কাল বেশ কিছু গোলের সুযোগ নষ্ট করায় ফ্রান্স জয়ী হতে পারেনি।
দেশ্যম বলেন, ‘আমরা নিজেদের প্রথম লক্ষ্য পূরন করেছি। যদিও গ্রুপের শীর্ষস্থানটি পাওয়া হয়নি। কিন্তু পরের রাউন্ডে যাওয়া নিশ্চিত করতে পেরেছি। এখন থেকে নতুন করে আবারো প্রতিযোগিতা শুরু হলো।’
পোল্যান্ডের বিপক্ষে ফ্রান্সই বেশীরভাগ সময় আধিপত্য দেখিয়েছে। জার্মানিতে এ পর্যন্ত তিন ম্যাচে তাদের নামের পাশে মাত্র দুই গোল যোগ হয়েছে। অস্ট্রিয়ার ম্যাক্সিমিলিয়ান ওবারের আত্মঘাতি গোলের পর কাল এমবাপ্পের পেনাল্টি ছাড়া এখনো পর্যন্ত কোন গোল তারা করতে পারেনি। লেস ব্লুজরা শেষ ষোলতে গ্রুপ-ই’র রানার্স দল হিসেবে বেলজিয়াম, ইউক্রেন, রোমানিয়া কিংবা স্লোভাকিয়ার মধ্যে যেকোন একটি দলের মোকাবেলা করবে। এই চার দলই সমান ৩ পয়েন্ট করে অর্জন করেছে। এছাড়া গ্রুপের দ্বিতীয় দল হওয়ায় নক আউট পর্বে পরবর্তীতে সম্ভাব্য প্রতিপক্ষ হিসেবে ফ্রান্স পেতে যাচ্ছে জার্মানি, স্পেন অথবা পর্তুগালকে।
অস্ট্রিয়ার বিপক্ষে নাক ভেঙ্গে যাওয়ায় চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী এমবাপ্পে মাস্ক পড়ে খেলতে নেমেছিলেন। শেষ পর্যন্ত ৫৬ মিনিটে এমবাপ্পে ইউরোতে গোলের দেখা পান। ওসমানে ডেম্বেলেকে ফাউলের অপরাধে জ্যাকুব কিউইরের বিপক্ষে পেনাল্টি আদায় করে নেয় ফ্রান্স। স্পট কিক থেকে ফ্রান্সকে এগিয়ে দেন এমবাপ্পে। ম্যাচ শেষের ১৩ মিনিট আগে ক্যারর সুইডার্স্কি ফ্রান্সের বিপক্ষে পেনাল্টি আদায় করে নেন। রবার্ট লিওয়ানদোস্কির প্রথম শটটি মাইক মেইগনান সহজেই রুখে দিলেও লাইন থেকে বেরিয়ে আসার কারনে পুনরায় শটটি নেবার সুযোগ পায় পোল্যান্ড। এবার আর কোন ভুল করেননি লেভা।
রাল্ফ রাংনিকের অধীনে উজ্জীবিত অস্ট্রিয়া প্রথম ম্যাচে ফ্রান্সের কাছে পরাজিত হলেও গকাল দারুন এক ম্যাচে ৩-২ গোলে ডাচদের পরাজিত করে ডি-গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে নক আউট পর্বের টিকেট নিশ্চিত করেছে।
যেকোন টুর্ণামেন্টে কমলা জার্সিতে পুরো স্টেডিয়ামকে রঙ্গীন করে দেবার ক্ষেত্রে ডাচ সমর্থকদের খ্যাতি রয়েছে। কালও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কিন্তু কাল বার্লিনে কমলা সমর্থকদের ছাড়িয়ে গিয়েছিল অস্ট্রিয়ানরা। ৬ মিনিটে ডনিয়েল মালেনের আত্মঘাতি গোলে অস্ট্রিয়া এগিয়ে গেলে পুরো স্টেডিয়াম উল্লাসে ফেটে পড়ে। বিরতির পর দুই মিনিটের মধ্যে সমতায় ফিরে নেদারল্যান্ডস। অস্ট্রিয়ান মিডফিল্ডার ফ্লোরিয়ান গ্রিলিশ মধ্যমাঠে বলের পজিশন হারালে দ্রæত একটি কাউন্টার এ্যাটাক থেকে কোডি গাকপো দারুন ফিনিশিংয়ে ডাচদের সমতায় ফেরান। ৫৯ মিনিটে রোমানো শিমিডের হেডে অস্ট্রিয়া আবারো লিড নেয়। ৭৫ মিনিটে বদলী খেলোয়াড় ওট ওয়েগর্স্টের পাসে মেমফিস ডিপের দুর্দান্ত ভলিতে আবারো সমতায় ফিরে নেদারল্যান্ডস। পাঁচ মিনিট পর মার্সেল সাবিটাইজারের গোলে অস্ট্রিয়ার দারুন জয় নিশ্চিত হয়।
প্রথমবারের মত কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিতের পথে অস্ট্রিয়া প্রতিপক্ষ হিসেবে পাচ্ছে তুরষ্ক, চেক প্রজাতন্ত্র কিংবা জর্জিয়ার মধ্যে যেকোন একটি দলকে।
নেদারল্যান্ডস পরের রাউন্ডে খেলবে গ্রুপ-সি কিংবা গ্রুপ-ই’র শীর্ষ দলের বিপক্ষে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :