টেস্ট ক্রিকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সমস্যার সমাধান বিপুল অর্থ দিয়ে সম্ভব নয় বলে মনে করেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক ব্রায়ান লারা। টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের বিশ্ব রেকর্ডের মালিক লারার মতে, টেস্ট ক্রিকেটে দীর্ঘদিন ধরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের যে সংকট চলছে তা সমাধানের জন্য একাডেমি পর্যায়ে মানসম্পন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি তৃণমূলে স্পন্সরদের আকৃষ্ট করতে হবে।
আশির দশকে ক্রিকেট দুনিয়ায় অপ্রতিরোধ্য এক দল ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টানা ১১ টেস্ট জয়ের রেকর্ডসহ বহু নজির গড়েছিলো দলটি। এক কথায় ক্রিকেট বিশ^কে এককভাবে শাসন করেছিলো ক্যারিবীয়রা। কিন্তু নব্বই দশকের পর নিজেদের হারিয়ে ফেলেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
বর্তমানে আইসিসি টেস্ট র্যাংকিংয়ে অষ্টমস্থানে আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বহুদিন ধরেই একই অবস্থানে আছে তারা। গত ১৫ বছরে মাত্র ১০টি টেস্ট সিরিজ (জিম্বাবুয়ে ও আফগানিস্তান বাদে) জিতেছে ক্যারিবীয়রা। ১০টি সিরিজের মধ্যে বাংলাদেশের বিপক্ষেই ৬টিতে জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে তিনটি টেস্ট সিরিজে অংশ নিয়ে একটিও জিততে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে ১৯৯৭ সালের পর এ বছর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম টেস্ট জয়ের স্বাদ পায় ক্যারিবীয়রা।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চলমান টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে লর্ডসের ময়দানে আড়াই দিনে ইনিংস ও ১১৪ রানের বড় ব্যবধানে হারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এমন হারের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট পারফরমেন্স নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন দেশটির সাবেক ক্রিকেটাররা। এরমধ্যে আছেন লারাও। তার মতে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের টেস্ট ক্রিকেটের সংকট বিপুল পরিমান অর্থ বিনিয়োগ করেও সমাধান হবে না।
বিবিসির পডকাস্ট ‘স্টাম্পড’-এ লারা বলেন, ‘আপনি যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ১শ-২শ মিলিয়ন ডলার দেন, তারপরও কি আমাদের খেলার পরিবর্তন হবে? আমি নিশ্চিত নই। আমাদের যা প্রতিভা আছে, তা কাজে লাগানো হচ্ছে না।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বর্তমান প্রজন্মের অনেক প্রতিভাবান খেলোয়াড়ই টেস্টের প্রতি আগ্রহী নন। নিকোলাস পুরান, শাই হোপ, শিমরোন হেটমায়ারের মত তারকা ক্রিকেটাররা বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি খেলার কারনে টেস্ট খেলতে চান না।
ওয়েস্ট ইন্ডিজে অন্যান্য খেলার মধ্যে অ্যাথলেটিক্সে প্রতিভার ঝলক অনেক বেশি। ক্রিকেটও এমন কিছু চান লারা, ‘শিশুদের জন্য অন্যান্য খেলা এবং বিভিন্ন সুবিধার প্রভাব পড়েছে ক্রিকেটে। আমি এখনো বিশ্বাস করি ওয়েস্ট ইন্ডিজের কর্পোরেটদের এগিয়ে আসা দরকার। তৃণমূলে স্পন্সরদের আকৃষ্ট করার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট যথেষ্ট কাজ করেনি। কিন্তু একাডেমি, অন্যান্য বিষয় এবং সুযোগ-সুবিধাগুলো মানসম্মত। আমার মতে, এ বিষয়গুলো খুবই, খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :