ব্রিটিশ তারকা এ্যাডাম পিটির আধিপত্য খর্ব করে পুরুষদের ১০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে স্বর্ণ জয় করেছেন ইতালির নিকোলো মার্টিনেগি। টানা তৃতীয় অলিম্পিকে সাঁতারের অন্যতম আকর্ষণীয় এই ইভেন্টে স্বর্ণ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে পুলে নেমেছিলেন পিটি। কিন্তু অল্পের জন্য তাকে রৌপ্য পদক নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।
সপ্তম লেনে থাকা মার্টিনেগি ৫৯.০৩ সেকেন্ডে টার্গেট স্পর্শ করে স্বর্ণ জয় করেন। ব্রিটিশ ফেবারিট পিটি ও যুক্তরাষ্ট্রের নিক ফিঙ্ক যৌথভাবে মাত্র দশমিক দুই সেকেন্ড কম সময় নিয়ে রৌপ্য পদক ভাগাভাগি করে নিয়েছেন।
ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়ন চীনের কিন হেইইয়াং শুরুটা ভাল করলেও শেষ পর্যন্ত সপ্তম স্থানে থেকে প্রতিযোগিতা শেষ করেছেন।এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কিংবদন্তী মাইকেল ফেল্পসের একই ইভেন্টে টানা তৃতীয় অলিম্পিক শিরোপা জয়ের রেকর্ড আর স্পর্শ করা হলোনা পিটির। প্রতিযোগিতা শেষে পিটি অনেকটাই আবেগপ্রবণ হয়ে গিয়েছিলেন। এসময় তাকে কাঁদতেও দেখা গেছে। যদিও তিনি বলেছেন, এখানে মোটেই দু:খ পাবার কিছু নেই। আমি বিশ^াস করি যে কেউ নিজেকে শীর্ষে নিয়ে যেতে পারে। প্রতিবারই জয় হবে, এটা ভাবার কোন কারন নেই। পরাজয়ের মধ্যেও শেখার অনেক কিছুই আছে। সঠিক ব্যক্তিই আজ বিজয়ী হয়েছে, এজন্য আমি দারুন খুশী। এটা আমার ষষ্ঠ অলিম্পিক পদক। মাত্র ১৪ বছর বয়সে যেখানে শুরু হয়েছিল সেখানে আজ আমি ছয়টি অলিম্পিক পদকের মালিক। এর মধ্যে তিনটি আবার স্বর্ণপদক। এখনো দুটি ইভেন্টে আমি বিশ্ব রেকর্ড ধরে রেখেছি। সাঁতার আমাকে জীবন দিয়েছে, আমি আজ যেখানে দাঁড়িয়ে আছি তার পুরো অবদান এই সাঁতারের।’
২০০ মিটার ব্রেস্টস্ট্রোকে বিশ্ব রেকর্ডধারী কিন ও পিটির মধ্যেই এতদিন এই ইভেন্টের মূল প্রতিদ্বন্দিতা ছিল। মানসিক কিছু সমস্যার কারনে পিটি কিছুটা পিছিয়ে পড়লে কিন গত বছর ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশীপে ব্রেস্টস্ট্রোকে সবগুলো স্বর্ণ ছিনিয়ে নেয়। কিন্তু প্যারিসে আসার আগে কিনের ক্যারিয়ার ছিল শঙ্কার মুখে। তিন বছর আগে টোকিও গেমসে ডোপিংয়ের দায়ে যে ২৩জন চাইনিজ সাঁতারু নিষিদ্ধ হয়েছিলেন তাদের মধ্যে কিনও ছিলেন। যে কারনে এবারের গেমসে তাকে মানসিক ভাবে বেশ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়েছে।
এই দুজনকে ছাপিয়ে কাল লাইমলাইটে উঠে এসেছেন মার্টিনেগি। টোকিওতে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী ২৪ বছর বয়সী এই দীর্ঘদেহী ইতালিয়ান কাল নিজের স্বপ্ন পূরণ করেছেন। প্রতিযোগিতা শেষে গণমাধ্যমের সামনে তিনি বলেছেন, ‘এটা সত্যিই অভাবনীয়। আমার স্বপ্ন আজ পূরণ হয়েছে। সবসময়ই অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নিজেকে পোডিয়ামে দেখার স্বপ্ন নিয়ে বড় হয়েছি। আজ সেটা সফল হয়েছে। এ্যাডাম পিটি আমার আদর্শ। তাকে দেখেই আমি স্বপ্নের জাল বুনেছি। আজ তার,আমার পরিবার এবং সতীর্থদের সামনে স্বর্ণ জয় করেছি, যা অসাধারণ এক অনুভূতি।
সাত নম্বর লেন আমার ফেবারিট। আমার কোচও সকালে আমাকে এই লেনের কথাই বলেছিল। ছোট বয়সে আমি সবসময়ই সাত নম্বর লেনেই অনুশীলন করেছি।’
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :