প্রতি বছর দেশের সেরা ক্রীড়াবিদ, ফেডারেশন এবং সংগঠকসহ মোট আটটি পদে প্রেরণ করা হয় শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার। এবারেও তার ব্যতিক্রম নয়। এবার ১২ ক্রীড়াবিদ, সংগঠক ও সংস্থাকে দেওয়া হবে এই পুরস্কার।
আগামীকাল (সোমবার) বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামালের ৭৫তম জন্মদিনে ক্রীড়াবিদদের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তেজগাঁও কার্যালয়ে হবে এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
এ বছর আজীবন সম্মাননা পাচ্ছেন বর্ষীয়ান ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা তানভীর মাজহারুল ইসলাম তান্না। সত্তর দশকের একজন তারকা ক্রিকেটার তিনি। এ ছাড়াও শেখ কামালের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধুও ছিলেন। ক্রিকেটার হলেও স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের ম্যানেজার ছিলেনও তান্না।
খেলোয়াড় হিসাবে ক্যারিয়ার শেষ করার পর সংগঠক হিসাবে কাজ করেন তিনি। ১৯৮৫-৮৬ সালে দেশের শীর্ষ ক্লাব আবাহনী ক্রীড়া চক্রের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তান্না। বিসিবির সাধারণ সম্পাদক ও পরিচালকও ছিলেন তিনি।
দেশের সেরা খেলোয়াড় এবং ক্রীড়াবিদ বিভাবে পুরস্কার পেয়েছেন তিনজন। যার অন্যতম শুটার শাকিল। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি স্বর্ণ, চারটি রুপা ও পাঁচটি ব্রোঞ্জ এবং জাতীয় পর্যায়ে ১৩টি স্বর্ণের সঙ্গে পাঁচটি রুপা ও দুটি ব্রোঞ্জ পদক জেতা শাকিলের জন্ম ১৯৯৫ সালে খুলনার ডুমুরিয়ায়।
এরপরই রয়েছেন পাবনার ছেলে সাঁতারু মাহফিজুর। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি স্বর্ণের সঙ্গে দুটি রুপা ও ১০টি ব্রোঞ্জ জয়ের পাশাপাশি জাতীয় পর্যায়ে ৬৮টি স্বর্ণ জিতেছেন। সেই সঙ্গে ২১টি রুপা ও ১০টি ব্রোঞ্জ জিতেছেন তিনি।
খেলোয়াড় বিভাগে পুরস্কার পাওয়া আরেক ক্রীড়াবিদ ভারোত্তোলক ফিরোজা খাতুন। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাউথ এশিয়ান গেমসে দুটি ব্রোঞ্জপদক রয়েছে কেরানীগঞ্জের এই ভারোত্তোলকের। এছাড়া জাতীয় পর্যায়ে ২২টি স্বর্ণ ও ছয়টি রুপা জেতেন তিনি।
উদীয়মান খেলোয়াড় কোটায় পুরস্কার পাচ্ছেন তরুণ ক্রিকেটার তাওহীদ হৃদয় এবং স্প্রিন্টার জহির রায়হান।
২০২৩ সালে মার্চে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হওয়া হৃদয় এখন পর্যন্ত ৩০টি ওয়ানডে ও ২৯টি টি ২০ ম্যাচ খেলেছেন। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ও এ বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন হৃদয়। তাই ২৩ বছর বয়সী ডান-হাতি ব্যাটারকে বাংলাদেশের ভবিষ্যতের তারকা মনে করা হচ্ছে।
আর স্প্রিন্টার জহির রায়হান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ২২টি স্বর্ণ, চারটি রুপা ও তিনটি ব্রোঞ্জ জিতেছেন। সম্প্রতি এশিয়ান ইনডোর চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০ মিটার স্প্রিন্টে রুপা জিতে আলোচনায় আসেন শেরপুরের এই কৃতী সন্তান।
সংগঠক হিসাবে পুরস্কার পাচ্ছেন সিলেট জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মাহি উদ্দিন। তিনি সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থা ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনসহ (বাফুফে) বেশ কটি ক্রীড়া সংস্থা ও সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। তার সঙ্গে রয়েছেন কলাবাগান ক্লাবের বর্ষীয়ান সংগঠক মো. আতিকুল হাবিব।
ফেডারেশন শ্রেণিতে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন এবং পৃষ্ঠপোষক বিভাগে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পাচ্ছে হামিদ গ্রুপ।
এই গ্রুপ ঢাকার কেরানীগঞ্জে প্রফেসর হামিদুর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠা করেছে। এছাড়া শুটিং ফেডারেশনে আন্তর্জাতিক জিমন্যাশিয়াম, হামিদুর রহমান জাতীয় ইয়ুথ শুটিং প্রতিযোগিতাসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে।
অন্যদিকে ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে পুরষ্কার পাচ্ছে খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম। আর ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে কল্যাণ কুমার সাহা।
এক নজরে পুরস্কার প্রাপ্ত ব্যক্তিদের নাম:
১। আজীবন সম্মাননা : বীর মুক্তিযোদ্ধা তানভীর মাজহার ইসলাম
২। খেলোয়াড়/ক্রীড়াবিদ : মো. মাহফিজুর রহমান, ফিরোজা পারভীন, শাকিল আহমেদ
৩। উদীয়মান খেলোয়াড়/ক্রীড়াবিদ: মো. জহির রায়হান, মো: তাওহীদ হৃদয়
৪। ক্রীড়া সংগঠক : বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিকুল হাবিব, মো: মাহি উদ্দিন আহমদ
৫। ক্রীড়া অ্যাসোসিয়েশন/ফেডারেশন/ক্রীড়া সংস্থা . বাংলাদেশ টেবিল টেনিস ফেডারেশন
৬। ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষক/স্পন্সর : হামিদ গ্রুপ
৭। ক্রীড়া সাংবাদিক : খন্দকার মঞ্জুরুল ইসলাম
৮। ক্রীড়া ধারাভাষ্যকার : কল্যাণ কুমার সাহা
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :