লাস্ট হয়েও দর্শকদের এমন অভিবাদন পাওয়া যায়, প্যারিস অলিম্পিক্সের ম্যারাথনে না নামলে জানতেই পারতেন না ভুটানের কিনজ্যাং লামো। অলিম্পিক গেমসের মাহাত্ম্য বোঝা গেল আরও একবার।রবিবার প্যারিস অলিম্পিক্সের শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হয় মেয়েদের ম্যারাথন দৌড়। ইভেন্টে অংশ নেন মোট ৯১জন অ্যাথলিট। যাঁদের মধ্যে রেস শেষ করেন ৮০ জন। ১১ জন অ্যাথলিট ইভেন্ট শেষই করতে পারেননি।
প্যারিসে মেয়েদের ম্যারাথনে অলিম্পিক্স রেকর্ড গড়ে গোল্ড মেডেল জেতেন নেদারল্যান্ডসের সিফান হাসান। তিনি ২ ঘণ্টা ২২ মিনিট ৫৫ সেকেন্ডে শেষ করেন ইভেন্ট। দ্বিতীয় হয়ে রুপো জেতেন ইথিওপিয়ার আসেফা। তিনি সময় নেন ২ ঘণ্টা ২২ মিনিট ৫৮ সেকেন্ড। অর্থাৎ, চ্যাম্পিয়ন সিফানের থেকে মোটে ৩ সেকেন্ডে পিছিয়ে থাকেন রুপোজয়ী তারকা।
তৃতীয় স্থানে থেকে ব্রোঞ্জ জেতেন কেনিয়ার হেলেন ওবিরি। তিনি সময় নেন ২ ঘণ্টা ২৩ মিনিট ১০ সেকেন্ড। অর্থাৎ, সোনাজয়ী সিফানের থেকে ১৫ সেকেন্ডে পিছিয়ে থাকেন হেলেন। রেস শেষ করার সময়ের নিরিখে এটি তাঁর কেরিয়ারের সেরা পারফর্ম্যান্স।
মেয়েদের ম্যারাথনে একেবারে শেষে অর্থাৎ, ৮০ নম্বরে রেস শেষ করেন ভুটানের কিনজ্যাং লামো। তিনি ইভেন্ট শেষ করতে সময় নেন ৩ ঘণ্টা ৫২ মিনিট ৫৯ সেকেন্ড। অর্থাৎ, সোনাজয়ী সিফানের থেকে ১ ঘণ্ট ৩০ মিনিট ৪ সেকেন্ড সময় বেশি নেন লামো।
এমনকি ৭৯তম স্থানে থাকা নেপালের শান্তশি শ্রেষ্ঠা প্যারিস অলিম্পিক্সের ম্যারাথন ইভেন্ট শেষ করতে সময় নেন ২ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট ৬ সেকেন্ড। যার অর্থ, সেকেন্ড লাস্ট অ্যাথলিটের থেকেও প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে রেস শেষ করেন ভুটানের কিনজ্যাং লামো। তাঁকে শেষ এক ঘণ্টা দৌড়তে হয় একা।
একের পর এক অ্যাথলিট যখন মাঝপথেই রেস ছেলে বেরিয়ে গিয়েছেন, কিনজ্যাং লামো হাল ছাড়েননি। তিনি লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। এক্ষেত্রে তিনি পাশে পেয়ে যান প্যারিসের দর্শকদের। রাস্তার দু`ধারে তো বটেই, এমনকি শেষ কয়েক কিলোমিটারে দর্শকরা সাইকেল চালিয়েও তাঁকে সঙ্গ দেন।
দর্শকদের চিৎকার ও করতালি এক্ষেত্রে পাথেয় হয় লামোর। একসময় রাস্তার ধারের দর্শকরাও দৌড়তে শুরু করেন তাঁর সঙ্গে। লামো রেস শেষ করার পরে দর্শকদের বিপুল অভিবাদন পান। সকলে দাঁড়িয়ে তাঁকে কুর্নিশ জানান। প্যারিস অলিম্পিক্সে পদক জোটেনি। তবে রেসের শেষ মুহূর্তটা লামোর খেলোয়াড় জীবনের সব থেকে বড় পাওনা হিসেবে বিবেচিত হবে নিশ্চিত।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :