দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে আইসিসি। আগামী অক্টোবরে টি-২০ নারী বিশ্বকাপের ভেন্যু পরিবর্তনের বিষয়টিও ভাবছে ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা। তবে নবগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশ্বকাপের আয়োজন করতে জাতিসংঘের ইউএন মাধ্যমে শেষ চেষ্টা করছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ জানিয়েছেন, যে দেশগুলো তাদের নাগরিকদের বাংলাদেশে ভ্রমণের উপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তারা জাতিসংঘের সাথে কথা বলবে। বর্তমানে বাংলাদেশে ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য (ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড), ভারত ও নিউজিল্যান্ড সরকার। ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েনবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
আইসিসি আগামী টি-২০ নারী বিশ্বকাপে অংশ নিতে যাওয়া দেশগুলোর বোর্ডগুলোকে শনিবার জানিয়েছিল, তারা এখনো বাংলাদেশের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। টুর্নামেন্ট অন্যত্র সরানোসহ সব রকমের বিকল্প নিয়ে বিবেচনা করবে। কয়েকটি দেশের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা জারির বিষয়টিকে টুর্নামেন্ট আয়োজনে সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে দেখছে বিসিবি । ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা কিংবা বিধিনিষেধ কেবলমাত্র কোনো দেশের সরকারই তুলে নিতে পারে। ক্রিকেট বোর্ডের তাদের খুব একটা প্রভাব নেই। নিষেধাজ্ঞা জারি ঘোষণা কেবলমাত্র সরকারই তুলে নিতে পারে।
যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, কিছু দেশের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই আমরা জাতিসংঘের সাথে কথা বলব। নিরাপত্তা ও অবকাঠামো সংক্রান্ত কিছু সমস্যা রয়েছে এবং আমরা এ বিষয়ে অধ্যাপক ইউনূসের (অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে কথা বলব । তিনি একজন ক্রীড়াপ্রেমী। আশা করি তিনি বিষয়টির সমাধান করতে পারবেন।
বিশ্বকাপ নিয়ে অনিশ্চয়তা এমন এক সময়ে দেখা দিয়েছে, যখন বিসিবিও বড় ধরনের সংকটের ভেতর দিয়ে যাচ্ছে। বোর্ড সভাপতি ও সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান পাপন গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে নিখোঁজ হয়েছেন। প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ রাজনৈতিক যোগাযোগ রয়েছে এমন অনেক পরিচালকেরও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
আফিফ মাহমুদ বিসিবি পরিচালনার জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন বডি গঠনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছিলেন। তবে সিদ্ধান্ত গ্রহণে বোর্ডের স্বায়ত্তশাসনের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে তিনি সচেতন রয়েছেন।
তার ভাষ্য, বিসিবি সভাপতি অনুপস্থিত। অবশ্যই একটি ফেডারেশন কাজ করার জন্য তার সকল অঙ্গকে কাজ করতে হবে। সভাপতি একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন এবং তিনি অনুপস্থিত আছেন। বিসিবি একটি স্বায়ত্তশাসিত ফেডারেশন এবং আমরা তাদের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারি না।
‘আমরা বিসিবি পরিচালকদের আইসিসির আইনি কাঠামোর মধ্যে কীভাবে সমস্যাটি সমাধান করা যায়, তা দেখার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের জন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়া হবে কিনা, সেটি তারা পরে আমাদের কাছে রিপোর্ট করবে। আমরা এই বিষয়ে প্রক্রিয়া চালিয়ে যাব।’
‘আমরা প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করতে চাই। কিন্তু একই সঙ্গে আমাদের একটি প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। আমরা ব্যক্তি পরিবর্তন করতে চাই না; বরং আমরা পদ্ধতিগত পরিবর্তন করতে চাই। যাতে সেই ব্যবস্থা অনুসরণ করে যে কেউ আসে, দুর্নীতি করে না আসতে পারে। আমরা পদক্ষেপ নিতে চাই, যাতে আমরা একটি স্থায়ী সমাধান করতে পারি।’
এর আগে ক্রিকইনফো তাদের প্রতিবেদনে জানায়, টি-২০ নারী বিশ্বকাপের ভেন্যু পরিবর্তনের বিষয়টিও ভাবছে ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা। বিকল্প ভেন্যুর সংক্ষিপ্ত তালিকায় সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত ও শ্রীলংকার নাম রয়েছে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :