টি-২০র পর টেস্টে অভিষেকের অপেক্ষায় আছেন জাকের আলী অনিক। দেশের ক্রিকেটাঙ্গনে মারকুটে ব্যাটারের তকমা লাগলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে দীর্ঘ পরিসরের ফরম্যাটে তার পারফরম্যান্স উজ্জ্বল। ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্ট সিরিজে রানের প্রত্যাশায় রয়েছেন এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার।
জাকের সবশেষ বিপিএলে ১৪ ম্যাচের ১০ ইনিংসে ব্যাট করে ১৪১ স্ট্রাইক রেটে করেছেন ১৯৯ রান। ফিনিশার হিসেবে তার এই পারফরম্যান্সই জাতীয় দলের দরজায় তিনি কড়া নাড়ছিলেন। কিন্তু সুযোগটা মিলছিল না।
অবশেষে গত মাসে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে পাকিস্তান সফরে গিয়ে শাহিনসের বিপক্ষে ২৮৬ বলে ১৭২ রানের ক্যারিয়ারসেরা ইনিংস খেলেন জাকের। ১৭টি চার এবং ৫টি ছক্কায় খেলা সেই ইনিংসের পর তাকে আর উপেক্ষা করতে পারেননি নির্বাচকরা।
টেস্ট দলে প্রথমবার জায়গা পাওয়ার পর নিজের অনুভূতি প্রকাশ করলেন ২৬ বর্ষী এই ক্রিকেটার। শুক্রবার মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেশে সাংবাদিকদের তিনি বলেন,‘সবারই স্বপ্ন থাকে টেস্ট ক্রিকেট খেলার। সেটার জন্য দলে সুযোগ পেয়ে অবশ্যই ভালো লাগছে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আমি ২০১৭ সাল থেকে খেলছি। যে সংস্করণই হোক, ঘরোয়া ক্রিকেটে আমি ভালো করার চেষ্টা করি। ওই রকম প্রক্রিয়ায়ই আগাই।’
স্কোয়াডে পর্যাপ্ত ব্যাটার থাকা সত্ত্বেও কেন জাকেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন বিসিবির নির্বাচক হান্নান সরকার। বৃহস্পতিবার দুপুরে দল ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটারকে নেয়ার দুটি কারণ উল্লেখ করেন। ভারতের কন্ডিশন বিবেচনায় ব্যাটারদের ছড়াছড়ি থাকা সত্ত্বেও আরেকজন মিডল অর্ডার ব্যাটার নেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। শাহাদাৎ হোসেন দীপুর আহামরি পারফরম্যান্স না থাকাই মূল কারণ হিসেবে হান্নান তুলে ধরেন।
জাকের অবশ্য সুযোগের সদ্ব্যবহার করে জায়গা ধরে রাখার ইঙ্গিত দিলেন। তার সাফ কথা, ‘স্কোয়াডে যেহেতু নির্বাচিত হয়েছি, উনারা প্রস্তুত মনে করেছেন বলেই নিয়েছেন। এখন আমার দায়িত্ব, নিজের সেরা পারফরম্যান্স।’
ভারতের টেস্ট দলে রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, মোহাম্মদ সিরাজ ও জাসপ্রিত বুমরাহর মতো বোলাররা বিশ্বের যেকোনো ব্যাটিং লাইনআপের জন্যই বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারেন। বাংলাদেশের জন্য তাদের সামলানোর কাজটা মোটেও সহজ হবে না। জাকের অবশ্য ইতিবাচক ভাবনায় আশাবাদী হতে চাইছেন।
টিম ইন্ডিয়ার বোলিং আক্রমণ নিয়ে তার ভাষ্য, ‘তাদের যারা যারা খেলবে, এমন খেলোয়াড়দের নিয়ে অবশ্যই পরিকল্পনা হচ্ছে। নিজের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করবো। অবশ্যই চ্যালেঞ্জ থাকবে। তবে এই চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে রান করা গেলে আমার মনে হয় অনেক ভালো কিছু হবে।’
‘চ্যালেঞ্জ তো সব দিক দিয়ে থাকবে। তাদের ব্যাটিং লাইনআপও তো অনেক ভালো। আমরা যদি ব্যাটিং বিভাগ হিসেবে ভালো করতে পারি। সর্বশেষ দুইটা টেস্ট যদি দেখেন, আমরা সব কিছুতেই ভালো করেছি, বিশেষ করে ব্যাটিংটা কিন্তু ভালো ছিল। আমরা স্ট্রাগল করি ব্যাটিং নিয়েই। ব্যাটিং যখন খারাপ হয়, আমরা হেরে যাই। বোলাররা বেশিরভাগ সময় সাপোর্ট করে। আমরা ব্যাটিংটা যদি ভালো করতে পারি, আমাদের জন্য খুবই ভালো হবে।’
পাকিস্তান সফরে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের পর বাংলাদেশের সামনে এখন কঠিন প্রতিপক্ষ ভারত। নিকট অতীত থেকে আত্মবিশ্বাস নিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যই থাকবে বলে জাকের জানান।
‘যেহেতু সবশেষ সিরিজটা খুব ভালো গেছে, সেই আত্মবিশ্বাস তো অবশ্যই থাকবে। আমার মনে হয়, এই বছর আমাদের চেষ্টা থাকবে, যেটা আমরা দল হিসেবে আগে কখনো করতে পারিনি, সেটা করার চেষ্টা থাকবে। আমি কিছু দিন আগেও বললাম, আমরা যে দুইটা ম্যাচ জিতলাম, আধিপত্য দেখিয়ে জিতে আসা, এটা তো অবশ্যই কালচার বদলানোর একটা আভাস।’
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :