আগামীকাল থেকে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ শুরু করবে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। বৃষ্টির কারনে মাঠের অনুশীলনও ঠিকঠাক করতে পারেনি দু’দল। আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ হওয়ায় সিরিজটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ দু’দলের জন্য। ফাইনালে খেলার দৌড়ে টিকে থাকতে সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টায় শুরু হবে প্রথম টেস্ট।
ব্যাঙ্গালুরুতে বৃষ্টির কারনে গত দু’দিন উইকেট বেশিরভাগ সময় ঢাকা ছিলো। ব্যাঙ্গালুরু আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানিয়েছে, টেস্টের পাঁচ দিনই আকাশ মেঘলা থাকবে। টেস্টের প্রথম দিন বৃষ্টির সম্ভাবনা ৪১ শতাংশ। শেষ চারদিনও গড়ে ৪৫ শতাংশ বৃষ্টি হবে।
এ মাসের শুরুতে কানপুরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের সর্বশেষ টেস্টও বৃষ্টিতে আড়াই দিনের বেশি ভেস্তে গিয়েছিলো। তারপরও পৌনে দু’দিনে ম্যাচ জিতেছিলো ভারত। এছাড়া গত মাসে গ্রেটার নয়ডায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের একমাত্র টেস্টও বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছিলো। ঐ টেস্টে টসই করতে পারেনি দু’দল।
বাংলাদেশের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতেছে ভারত। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে আগ্রাসী ক্রিকেট খেলেছে টিম ইন্ডিয়া। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও আগ্রাসী ক্রিকেট খেলার কথা জানালেন ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীর। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমরা চাই ছেলেরা আগ্রাসী ক্রিকেট খেলবে। আমরা এমন দল হয়ে উঠতে চাই, যারা এক দিনে ৪’শ রান তুলতে পারে বা প্রয়োজনে দুই দিন ব্যাট করে ম্যাচ ড্র করতে পারি। এমন করতে পারলেই সেটিকে উন্নতি বলা যাবে। মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা বলা যাবে, সেটিকেই টেস্ট ক্রিকেট বলা যাবে। শুধুমাত্র একমুখী ক্রিকেট খেললে উন্নতি হয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য অবশ্যই ম্যাচ জেতা। এরকম পরিস্থিতি যদি তৈরি হয় যে, ড্রয়ের জন্য খেলতে হবে দলকে, সেই পথও আমরা খোলা রাখবো। এই ধরনের টেস্ট ক্রিকেট আমরা খেলতে চাই।’
ব্যাকফুটে থেকেই ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরু করবে নিউজিল্যান্ড। সদ্যই শ্রীলংকার মাটিতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে ব্ল্যাক-ক্যাপসরা। এছাড়াও খেলার জন্য পুরোপুরি ফিট না হওয়ায় সিরিজের শুরু থেকে দলের সেরা ব্যাটার কেন উইলিয়ামসনকে পাবে না নিউজিল্যান্ড। তবে সিরিজের শেষ দুই টেস্টে খেলবেন তিনি।
কিন্তু মাঠের লড়াই শুরুর আগেই পুরো সিরিজ থেকে মাঠের বাইরে ছিটকে গেছেন পেসার বেন সিয়ার্স। শ্রীলংকা সফরে বাঁ-হাঁটুতে চোট পান তিনি। সিয়ার্সের বদলি হিসেবে দলে সুযোগ পেয়েছেন জ্যাকব ডাফি। দেশের হয়ে ৬টি ওয়ানডে ও ১৪টি টি-টোয়েন্টি খেলার অভিজ্ঞতা আছে তার।
প্রথম টেস্ট শুরুর দিন ভারতের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়বেন ডাফি। তাই প্রথম টেস্টে নিউজিল্যান্ডের পেস আক্রমন সামলাবেন টিম সাউদি, ম্যাট হেনরি ও উইল ও’রুর্ক।
শ্রীলংকার কাছে টেস্ট সিরিজ হারের পর অধিনায়কের পদ থেকে সরে দাঁড়ান পেসার টিম সাউদি। ভারত সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে নেতৃত্ব দিবেন ব্যাটার টম লাথাম। বিভিন্ন সময় নিয়মিত অধিনায়কদের অনুপস্থিতিতে কিউইদের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা আছে লাথামের। ৯টি টেস্ট, ৪৪টি ওয়ানডে ও ১৩টি টি-টোয়েন্টিতে নিউজিল্যান্ডের অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি।
ভারত সিরিজ দিয়ে আবারও নেতৃত্বে ফিরছেন লাথাম। প্রথম টেস্টের আগে লাথাম বলেন, ‘অধিনায়কত্ব বড় দায়িত্ব। নিজ দেশের হয়ে অধিনায়কত্ব করা সম্মানের। এমন গুরুদায়িত্ব আমি ভালোভাবে পালন করতে চাই। ভারত সিরিজ আমাদের চ্যালেঞ্জিং হবে। কারন ঘরের মাঠে খুবই ভয়ংকর দল ভারত। ঘরের মাঠে টানা ১৮ দ্বিপাক্ষীক টেস্ট সিরিজ জিতেছে ভারত। তবে আমরা যদি ভারতের চেয়েও ভালো ক্রিকেট খেলতে পারি, তাহলে জয় অসম্ভব না।’
এখন পর্যন্ত ৬২টি টেস্টে মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও নিউজিল্যান্ড। এর মধ্যে ভারতের জয় ২২টিতে, নিউজিল্যান্ডের জয় ১৩টিতে এবং ২৭টি ম্যাচ ড্র হয়।
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শক্ত অবস্থানে আছে ভারত। ১১ ম্যাচে ৭৪.২৪ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে তারা। ৮ ম্যাচে ৩৭.৫০ শতাংশ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠস্থানে আছে নিউজিল্যান্ড।
ভারত : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), জসপ্রিত বুমরাহ (সহ-অধিনায়ক), যশস্বী জয়সওয়াল, শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, লোকেশ রাহুল, সরফরাজ খান, ঋষভ পান্ত (উইকেটরক্ষক), ধ্রুব জুরেল (উইকেটরক্ষক), রবিচন্দ্রন অশ্বিন, রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব, মোহাম্মদ সিরাজ ও আকাশ দীপ।
নিউজিল্যান্ড : টম লাথাম (অধিনায়ক), টম ব্লান্ডেল, মাইকেল ব্রেসওয়েল (শুধুমাত্র প্রথম টেস্ট), মার্ক চাপম্যান, ডেভন কনওয়ে, ম্যাট হেনরি, ড্যারিল মিচেল, উইল ও’রুর্ক, আজাজ প্যাটেল, গ্লেন ফিলিপস, রাচিন রবীন্দ্র, মিচেল স্যান্টনার, জ্যাকব ডাফি, ইশ সোধি (দ্বিতীয় ও তৃতীয় টেস্ট), টিম সাউদি, কেন উইলিয়ামসন ও উইল ইয়ং।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :