দীর্ঘ চার বছর দায়িত্ব পালনের পর আইসিসির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে বিদায় গ্রেগ বার্কলে। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রধানের পদে গত ৩০ নভেম্বর নিউজিল্যান্ডের এই ক্রীড়া প্রশাসকের মেয়াদ শেষ হয়। তার স্থলাভিষিক্ত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সদ্য সাবেক সচিব জয় শাহ ও ভারতকে নিয়ে তিনি দিয়ে রাখলেন সতর্কবার্তা।
আইসিসির ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে গত ১ ডিসেম্বর দায়িত্বে এসেছেন ৩৬ বর্ষী জয় শাহ। তিনি শীর্ষ পদে আসীন হওয়ায় আইসিসিতে ভারতের একচ্ছত্র আধিপত্য আরো বাড়বে বলে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করছেন।
বিদায়ী চেয়ারম্যান বার্কলে মনে করেন, জয় শাহর সামনে বিশ্ব ক্রিকেটকে ভালোভাবে সামলানোর বড় সুযোগ আছে। কিন্তু তিনি যদি প্রভাব খাটিয়ে আইসিসিকে ভারতের কবজায় নেন, তা ক্রিকেটের জন্য সহায়ক হবে না।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বার্কলে বলেন, ‘তিনি (জয় শাহ) যে ভিত্তি পেয়েছে,, আমি মনে করি সেখান থেকে তার সামনে খেলাটিকে অন্য পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার বড় সুযোগ। কিন্তু খেলাটিকে ভারতের কবজায় নিয়ে গেলে চলবে না। আমরা সত্যিই ভাগ্যবান যে সব দিক থেকেই ভারত খেলাটির জন্য বিশাল অবদান রাখছে। অন্যদিকে একটা দেশের এত ক্ষমতা ও প্রভাব অন্য অনেক অর্জনকে নষ্ট করে দিতে পারে, যা খেলাটিকে বৈশ্বিকভাবে ছড়িয়ে দেওয়ার দিক থেকে সহায়ক নয়।’
‘আন্তর্জাতিক মহলে ভারতকে আরো বেশি সম্পৃক্তের ক্ষমতা জয় শাহর আছে। সবাইকে একত্র এবং ক্রিকেটকে আরো বিকশিত করতে ভারত সাহায্য করতে পারে- এমন অনেক বিষয় রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কম কর বা খরচের সুবিধা নিতে বিদেশে তারা একটি বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থানান্তর করতে পারে। তাদের দলগুলোকে ছোট ও উদীয়মান দলের বিপক্ষে খেলার সুযোগ করে দিতে পারে। এছাড়া সদস্য দেশগুলোকে লাভবান করে তুলতে তাদের প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে আইসিসির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারে এবং ক্রিকেটের নতুন অঞ্চল ও বাজার খুলতে পারে।’
দুনিয়ার বিভিন্ন স্থানে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-২০ লিগের ছড়াছড়ি। এত বেশি টুর্নামেন্ট আর ঠাসা সূচির জন্য বার্কলে সদস্য দেশগুলোর স্বার্থকে দায়ী করে বলেন, ‘জানি, আমি আইসিসির শীর্ষে পদে আছি। কিন্তু আমি আপনাকে বলতে পারবো না কে কার সঙ্গে খেলছে। এমনকি (ডারবান টেস্টে) মার্কো জানসেনের ৭ উইকেটের খবর সকালে পড়ার আগে আমি জানতামই না শ্রীলংকা দল দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলতে গেছে। এর অর্থ ক্রিকেটের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি যেমন ছিল, তা হারিয়ে ফেলেছি। এটা খেলাটির জন্য মোটেও ভালো ব্যাপার নয়। এটা এক ধরনের জগাখিচুড়ি। সবার স্বার্থের কারণে এমন ঠাসা সূচিতে খেলা চলছে। এই জটলা ছাড়ানো প্রায় অসম্ভব।’
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :